-
নীলিমা রশীদ তৌহিদা
‘শার্লক হোমস’ নামটার সাথে কম-বেশি সবাই পরিচিত। এমন একটি নাম যা খ্যাতিতে নিজের স্রষ্টার নামকেও ছাড়িয়ে যায়। শার্লক হোমস-আর্থার কোনান ডয়েল সৃষ্ট এক কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র যাকে একটা পর্যায়ে আর কাল্পনিক মনে হয়নি। মনে হত যে এই নামে আসলেই হয়ত কোনো গোয়েন্দা আছে। লন্ডনের ২২১/বি বেকার স্ট্রিটে গেলেই বোধ হয় তাকে খুঁজে পাওয়া যাবে এবং সিড়িতে পায়ের আওয়াজ শোনা মাত্রই নিজের পর্যবেক্ষণশক্তি দিয়ে সে বুঝে যাবে যে তার কাছে কে এসেছে এবং কেন এসেছে।
বিখ্যাত এই গোয়েন্দা চরিত্রের আদলে, কিংবা অনুকরণে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন সব গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি করেন। আজ সেইসব গোয়েন্দা চরিত্রদের নিয়েই কথা বলব। তবে তার আগে, শার্লক হোমস কে নিয়ে একটু জেনে নেওয়া যাক।
আ স্টাডি ইন স্কারলেট বইয়ে প্রথমবারের মতো আমাদের সবার প্রিয় শার্লক হোমসের দেখা পাওয়া যায়। গল্পটি ১৮৮৭ সালের ‘বিটন’স ক্রিসমাস অ্যানুয়াল’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। শুরু থেকেই কি এই চরিত্রের নাম শার্লক ছিল? না। ডয়েল যখন শার্লককে নিয়ে লেখা শুরু করেন তখন তিনি তার নাম দেন শেরিনফোর্ড হোমস। পরে এই নাম ডয়েলের পছন্দ হয়না। এবং শেরিনফোর্ড হোমস হয়ে যান শার্লক হোমস। এমনকি পূর্বে আ স্টাডি ইন স্কারলেট বইটির নাম ছিল ‘অ্যা ট্যাঙ্গলড স্কিন’।
১৮৮৭ থেকে ১৯২৭-এই চল্লিশ বছর ডয়েল শার্লককে নিয়ে গল্প উপন্যাস রচনা করে গেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি শার্লককে নিয়ে গল্প রচনা বন্ধ করে দেন। ১৮৯৩ সালে দ্য ফাইনাল প্রবলেম অভিযানে ডয়েল শার্লককে মেরে ফেলেন। প্রতিপক্ষ মরিয়ার্টিকে মোকাবিলা করার সময় হোমস নিজেও সুইজারল্যান্ডের মাইরিংয়েনের রাইখেনবার্গ প্রপাত থেকে পড়ে মারা যান। এভাবে হোমসের মৃত্যু দেখিয়ে লেখক সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি হোমসকে নিয়ে আর কিছু লিখবেন না।
নিজের ক্লায়েন্ট ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পোশাক, মনোভাব, কিংবা বুটের আওয়াজ, অথবা শুধুমাত্র ভর দিয়ে চলার লাঠিটি দেখেই শার্লক তাদেরকে নিয়ে অনেককিছু বলে দিতে পারতেন। তার রসায়নের জ্ঞান গভীর। খুব ভালো বেহালা বাজায়। যখন তার কাছে কোনো কেস থাকে না, তখন উদ্দীপনার জন্য সে কোকেন ব্যবহার করেন। অভিনয় ও ছদ্মবেশ ধারনে পটু। শার্লক হোমস শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়, তিনি উঠে এসেছেন পর্দায়ও। শার্লক কাহিনি নিয়ে বিভিন্ন সিনেমা-সিরিজ হয়েছে। ২০১২ সালে, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস শার্লক হোমসকে চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চিত্রিত সাহিত্যিক কাল্পনিক চরিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে।
শার্লক হোমস সিরিজে আমরা অন্য যে চরিত্র টি সবচেয়ে বেশি দেখতে পাই তিনি হলে ড. জন ওয়াটসন- শার্লকের বন্ধু ও সহকারী এবং তার বর্ণনাতেই আমরা শার্লকের বেশিরভাগ এডভেঞ্চার সম্পর্কে জানতে পারি। এ ছাড়া কিছু গল্প থেকে আমরা শার্লকের বড় ভাই মাইক্রফট হোমসের কথা জানতে পারি। শার্লকের ভাষ্যমতে মাইক্রফট তার চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান, মাইক্রফটের পর্যবেক্ষণ শক্তি আরো তীক্ষ্ণ। কিন্তু সে শার্লকের মত বিভিন্ন কেস সমাধানে আগ্রহী নয়। এ ছাড়া শার্লক হোমস সিরিজে আরোও রয়েছে মিসেস.হাডসন যিনি শার্লকের বাড়িওয়ালী এবং শার্লকের ফ্ল্যাটটি তিনিই দেখাশোনা করেন। এই সিরিজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল জেমস মরিয়ার্টি যিনি শার্লকের আল্টিমেট প্রতিপক্ষ এবং মরিয়ার্টিকে ধরা ও তার অপরাধ চক্রটা শেষ করা হোমসের অন্যতম একটি লক্ষ্য। সিরিজের বিভিন্ন গল্পেই আমরা একজন ইন্সপেক্টরের দেখা পাই। নাম তার লেস্ট্রেড।
আর্থার কোনান ডয়েল শার্লককে নিয়ে মোট চারটি উপন্যাস ও ছাপ্পান্নটি ছোটগল্প রচনা করেন। উপন্যাসগুলো হলো: আ স্টাডি ইন স্কারলেট, দ্য সাইন অব দ্য ফোর, দ্য হাউন্ড অব দ্য বাস্কারভিলস, দ্য ভ্যালি অব ফিয়ার। এবং দ্য এডভেঞ্চার অব শার্লক হোমস, দ্য মেমোয়ার্স অব শার্লক হোমস, দ্য রিটার্ন অব শার্লক হোমস, হিজ লাস্ট বাউ, দ্য কেস বুক অব শার্লক হোমস-এই চারটি খণ্ডে মোট ছাপ্পান্নটি ছোট গল্প রয়েছে।
১৮৮৭ থেকে ১৯২৭-এই চল্লিশ বছর ডয়েল শার্লককে নিয়ে গল্প উপন্যাস রচনা করে গেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি শার্লককে নিয়ে গল্প রচনা বন্ধ করে দেন। ১৮৯৩ সালে দ্য ফাইনাল প্রবলেম অভিযানে ডয়েল শার্লককে মেরে ফেলেন। প্রতিপক্ষ মরিয়ার্টিকে মোকাবিলা করার সময় হোমস নিজেও সুইজারল্যান্ডের মাইরিংয়েনের রাইখেনবার্গ প্রপাত থেকে পড়ে মারা যান। এভাবে হোমসের মৃত্যু দেখিয়ে লেখক সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি হোমসকে নিয়ে আর কিছু লিখবেন না।
হোমসের মৃত্যুর বছরেই মানে ১৮৯৩ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘দি হাফপেনি মার্ভেল’ পত্রিকায় হ্যারি ব্লিথ রচিত দি মিসিং মিলিওনেয়ার কাহিনি দিয়ে নতুন এক গোয়েন্দার যাত্রা শুরু হয়। নাম তার সেক্সটন ব্লেক এবং হোমসের সাথে তার অদ্ভুত মিল। এ যেন হোমসের ঘাটতি পূরণ করতেই আরেক গোয়েন্দার আগমন। দুজনেই প্রাইভেট ডিটেকটিভ। এমনকি একটা সময় পর্যন্ত ব্লেকের বসবাসও বেকার স্ট্রিটে। হোমসের ল্যান্ডলেডি মিসেস হাডসন ই হোমসের বাড়িঘর দেখাশোনা করেন। ওদিকে ব্লেকের বাড়িঘর যিনি দেখাশোনা করেন তার নাম মিসেস বাড়ডেল। হোমসের মত ব্লেকের ও একজন সহকারী আছে। নাম তার টিঙ্কার। ব্লেককে নিয়ে রচিত প্রথম উপন্যাসটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায় এবং এরপর থেকে ব্লেকের একের পর এক অভিযান প্রকাশিত হতে থাকে। গরিবের শার্লক হোমস (Poor manÕs Sherlock Holmes) নামে পরিচিত পায় সে। হ্যারি ব্লিথ ছাড়াও সেক্সটন ব্লেককে নিয়ে আরো অনেকে লিখেছেন। সেক্সটন ব্লেকেরও নির্দিষ্ট কিছু প্রতিপক্ষ ছিল। এর মধ্যে আছে জর্জ মার্সডেন প্লামার যিনি ছিলেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের একজন অসৎ গোয়েন্দা সার্জেন্ট। আরো আছেন কাউন্ট আইভর কালার্ক, ফ্রান্সিস কিউ প্রমুখ।
একটা সময় ডয়েল শার্লক হোমস কে আবার ফিরিয়ে আনলেন। কারণ হোমসের মৃত্যু দেখানোর পর জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া ছিল অন্যরকম। তারা এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেন নি। অনেকেই হোমসকে ফিরিয়ে আনার জন্য লেখককে চিঠি লিখতেন। এমনকি শার্লক কে নিয়ে লেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে সেসময়ে প্রায় ২০০০০ মানুষ ‘দ্য স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিন’ এর সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে দেন। এই ম্যাগাজিনেই ১৮৯১ সালে হোমস কে নিয়ে রচিত ছোটগল্প সিরিজ দ্য এডভেঞ্চার অব শার্লক হোমস প্রকাশিত হয়। এই সিরিজের প্রথম গল্প হল আ স্ক্যান্ডেল ইন বোহেমিয়া। এই সিরিজটি প্রকাশিত হওয়ার পরেই হোমসের জনপ্রিয়তা তুমুল আকার ধারণ করেছিল। শার্লকের মৃত্যু নিয়ে এই প্রতিক্রিয়া দেখে লেখক অবাক হয়েছিলেন বৈকি; তবুও তিনি প্রায় বেশ কিছু বছর হোমস কে নিয়ে কোনো গল্প রচনা করেন নি।
অবশেষে, দ্য হাউন্ড অব দ্য বাসকারভিলস উপন্যাসের মাধ্যমে লেখক সবার প্রিয় শার্লক হোমসকে আবার ফিরিয়ে আনেন। ১৯০১ সালে এই উপন্যাসটি লেখা হয় যা ‘স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিন’-এ ১৯০১ থেকে ১৯০২ এর মধ্যে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে, ১৯০২ সালের ২৫ মার্চ উপন্যাসটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। এর পরের বছরই ডয়েল দ্য এডভেঞ্চার অব দ্য এম্পটি হাউজ রচনা করেন যেখানে দেখা যায় যে শার্লক তার বন্ধু ও সহকারী ওয়াটসন কে ব্যাখ্যা করছেন যে কিভাবে তিনি তার শত্রুদের বোকা বানানোর জন্য তার মৃত্যুর নাটক রচেছিলেন।
তো শার্লক তো ফিরে এলো। তবে কি শার্লকের আদলে তৈরি গোয়েন্দা চরিত্র সেক্সটন ব্লেক হারিয়ে গেল? না, তিনি হারিয়ে যান নি। তাকে নিয়ে ২০০ লেখকের রচনায় প্রায় ৪০০০ গল্প রয়েছে। এর মধ্যে কমিকস স্ট্রিপ, সিরিয়াল, সিনেমাও আছে। এবং এসবের মধ্যেই তিনি এখনো বেঁচে আছেন। সেক্সটন ব্লেকও অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং সংখ্যার দিকে থেকে তিনি শার্লকের চেয়েও অনেক বেশি কেস সমাধান করেছেন। তবুও শার্লক হোমস যেন এক অনন্য নাম। কাল্পনিক গোয়েন্দাদের নক্ষত্র সে।
শার্লক ঘরানায় সৃষ্ট আরেকটি গোয়েন্দা চরিত্রের নাম হল কর্নেল ক্লে। রচনা করেছেন চার্লস গ্রান্ট ব্লেয়ারফিল্ড অ্যালেন। কর্নেল ক্লে কে নিয়ে অনেকগুলো গল্প-উপন্যাস লেখা হলেও অ্যান আফ্রিকান মিলিওনেয়ার ও অ্যা গ্রেট রুবি রবারি খুব পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। ১৯৫১ সালে এলেরি কুইনের বিশ্বের সেরা ১২৫ টা গোয়েন্দা গল্পের সংকলন ‘কুইন্স কোরাম’ এ অ্যান আফ্রিকান মিলিওনেয়ার গল্পটি জায়গা পেয়েছিল।
এবার বলা যাক গোয়েন্দা মার্টিন হিউইট এর কথা। স্রষ্টা হলেন আর্থার মরিসন। লন্ডনের স্ট্র্যান্ডের ঠিক পাশেই চ্যারিং ক্রস স্টেশনের কাছে বাস করতেন গোয়েন্দা হিউইট। তার হাবভাবও হোমসের মতো। ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৫ সালের মধ্যে স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিনের প্রায় প্রতি সংখ্যায়ই হিউইটের কোনো না কোনো অভিযান বেরোত। হোমসের গল্পগুলোও কিন্তু এই ম্যাগাজিনে প্রকাশ পেত। এমনকি হোমসকে এঁকে বিখ্যাত হওয়া সিডনি প্যাগেটই হিউইটের ছবি আঁকতেন। তবে হোমসের রহস্য সমাধান যতটা জমজমাট ছিল, সেরকম কিছুই হিউইটের মধ্যে ছিল না।
প্রথমবার যখন লেখক হোমস কে মেরে ফেললেন, তখন এক নারী গোয়েন্দা চরিত্রের আবির্ভাব ঘটেছিল। ক্যাথরিন লুইসা পিরকিসের সৃষ্টিতে গোয়েন্দা সাহিত্যে এল লাভডে ব্রুক নামের এক নারী গোয়েন্দা। শার্লক হোমসের একটা সিগনেচার লাইন ছিল-‘elementary, my dear’। আর এই নারী গোয়েন্দারও একটা সিগনেচার লাইন ছিল। সেটা হল-‘oh that was a mere a-b-c work’। লাভডে ব্রুককে মহিলা শার্লক হোমস ও হোমসের একজন সফল উত্তরসূরী বলা হয়ে থাকে। লাভডে ব্রুকের উল্লেখযোগ্য কিছু অভিযান হচ্ছে দ্য ব্ল্যাক ব্যাগ লেফট অন আ ডুরস্টেপ, দ্য রেডহিল সিস্টারহুড, দ্য গোস্ট অব ফাউন্টেইন লেন প্রভৃতি। প্রতিটি গল্পই ১৮৯৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মাঝে ‘দ্য লুডগেট ম্যাগাজিন (The Ludgate Magazine)-এ প্রকাশিত হয়েছিল।
আরেকজন গোয়েন্দা ছিল যিনিও রসায়নে হোমসের মতো জ্ঞান রাখতো। এমনকি সেক্ষেত্রে তিনি হোমসকেও ছাপিয়ে গিয়েছিলেন। কারণ হোমসের গোয়েন্দাগিরি সম্পূর্নভাবে রসায়নভিত্তিক ছিল না। আমাদের এই গোয়েন্দার নাম হল ডাক্তার ক্লিফোর্ড হ্যালিফ্যাক্স। এই চরিত্রের লেখক ছিলেন ডাক্তার এডগার বিউমন্ট। ক্লিফোর্ডের গোয়েন্দাগিরির অস্ত্রই ছিল ফরেনসিক। সেই সময়ে ফরেনসিককে ভিত্তি করে আর কোনোও গোয়েন্দা ক্লিফোর্ডের মতো এত কেস সমাধান করেন নি। খুব আশ্চর্য শোনাবে কিন্তু অনেকদিন যাবত পাঠকরা মনে করতেন ক্লিফোর্ড নামের কেউ সত্যিই আছেন। আর সেজন্য তারা নিজেদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে পত্রিকা অফিসে ক্লিফোর্ডের কাছে চিঠি পাঠাত। অনেকসময় লেখক সেসব চিঠির উত্তর ও দিতেন। এই গোয়েন্দাকে নিয়ে রচিত উল্লেখযোগ্য দুটি গ্রন্থ হচ্ছে-অ্যা ওক কফিন ও দি পসনবি ডায়মন্ডস।
১৮৯৮ সালে লেখিকা ক্ল্যারেন্স রুকের রচনায় আরেকজন গোয়েন্দার দেখা পাওয়া যায়। নাম তার মিস ভ্যান স্নুপ। ‘হার্মসওয়ার্থ ম্যাগাজিন’- দি স্টেয়ার আউটসাইড দি ক্যাফে রয়াল গল্পে এই গোয়েন্দাকে প্রথম ও শেষবারের মত দেখা যায়। কারণ পরবর্তীতে এই লেখিকার আর কোনো গল্পের সন্ধান পাওয়া যায় নি। লেখিকার খোঁজ ও বের করা যায় নি। হঠাৎ করে উদয় হলেন আবার হুট করেই সবার অলক্ষ্যে চলে গেলেন।
হোমসের আদলে এরকম আরো কিছু গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টি হয়। কিন্তু হোমসের মতো এত জনপ্রিয়তা আর কেউ পায় নি। বেশির ভাগের কথাই পাঠক জানেন না। তাদের নাম যেন হারিয়ে গেছে। তবে এর মধ্যে সেক্সটন ব্লেক যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছেন। অনেক পাঠক ই তার কথা জানেন। এবং তিনি জনপ্রিয়তার দিক থেকে হোমসের পরে থাকলেও, হোমসের চেয়ে বেশি কেস সমাধান করেছেন যেহেতু তাকে নিয়ে রচিত গল্প প্রায় ৪০০০। তবু সর্বদিক বিবেচনায় তীক্ষè পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার অধিকারী শার্লক হোমসকে কেউ ছাপিয়ে যেতে পারে নি।
এক অসাধারণ গোয়েন্দা হিসেবে সাহিত্যপ্রেমী মানুষের সামনে হাজির হন শার্লক হোমস। কাল্পনিক এই গোয়েন্দা অর্জন করেন অসম্ভব পাঠকপ্রিয়তা। লক্ষ-কোটি পাঠকের ভালোবাসা পান তিনি। চরিত্রটির অবসান ঘটানোর পরেও পাঠকদের কারণে লেখক তাকে আবার ফিরিয়ে আনেন। কাল্পনিক এই গোয়েন্দার খ্যাতি ভুবনজোড়া। হোমস প্রেমীদের মুখে মুখে শোনা যায় বিখ্যাত সেই বাক্য-‘elementary, my dear.’ জন ওয়াটসনের বয়ানে শার্লকের অভিযানের কথা পড়তে পড়তে একসময় তাকে খুবই আপন মনে হয়। ডয়েল কি জানতেন যে শার্লক হোমস কখনো এতোটা জনপ্রিয় হবেন?
সূত্র: সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকা থেকে লেখকের সম্পাদনা
সানা/আপ্র/০১/১১/২০২৫

























