ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

সৌদি আরবে বাতিল হচ্ছে কাফালা বিধি, শ্রমবাজার হবে আকর্ষণীয়

  • আপডেট সময় : ০৩:৫৫:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবের অভিবাসী কর্মীদের জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। আগামী বছরের প্রথমার্ধেই দেশটিতে বহুবছর ধরে প্রচলিত কাফালা বা পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অন্তত ১০ লাখ অভিবাসী কর্মী সরাসরি উপকৃত হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।

প্রায় সাত দশক ধরে কার্যকর ছিল কাফালা পদ্ধতি। এর পরিবর্তে চালু করা হবে চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান ব্যবস্থা। ফলে নিয়োগকর্তা ও বিদেশি কর্মীদের সম্পর্ক আইনি কাঠামোর আওতায় আসবে। সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে।

বর্তমান কাফালা ব্যবস্থায় একজন কর্মীর ভিসা, বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের আইনি দায়ভার সম্পূর্ণভাবে নিয়োগকর্তার হাতে থাকে। তবে, নতুন ব্যবস্থায় প্রবাসী কর্মীরা নিজেরাই এক্সিট ও রি-এন্ট্রি ভিসা নিতে পারবেন। পাসপোর্টে চূড়ান্ত প্রস্থান সিল দিতে আর পৃষ্ঠপোষকের অনুমতি লাগবে না। আর নতুন কর্মস্থলে যেতে পারবেন স্বাধীনভাবে, কর্ম-চুক্তির শর্ত অনুযায়ী।

এই উদ্যোগটি সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এর অংশ। আবাসন ও বিনোদন খাতে সংস্কার এবং প্রবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন করা ওই কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে।

কাফালা ব্যবস্থা বাতিলের পদক্ষেপটি ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে ঘোষণার কথা ছিল। তবে কোভিড ১৯ মহামারির কারণে তা স্থগিত হয়। এখন এটি আসছে ‘স্পেশাল প্রিভিলেজ রেসিডেন্সি পারমিট (প্রিমিয়াম ইকামা)’-এর পরবর্তী ধাপ হিসেবে, যা ২০১৯ সালের মে মাসে সৌদি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছিল। ইকামা প্রাপ্ত বিদেশিরা স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বসবাস, সম্পত্তির মালিকানা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, এমনকি বাণিজ্যিক সুবিধা ভোগের সুযোগ পান।

নতুন উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো শ্রমবাজারে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ সহজ করা, চাকরির স্বাধীনতা বাড়ানো এবং বাজারকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তোলা। পাশাপাশি, কিছু নিয়োগকর্তার অনিয়ম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সমস্যা দূর করাই এই সংস্কারের আরেকটি লক্ষ্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কাফালা ব্যবস্থা বিলুপ্তির ফলে সৌদি শ্রমবাজার আরো স্বচ্ছ ও আকর্ষণীয় হবে। এতে বিদেশি দক্ষ শ্রমিক আসতে উৎসাহিত হবেন, একই সঙ্গে সৌদি তরুণরাও ন্যায্য প্রতিযোগিতায় নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবেন।

তথ্যসূত্র: দ্য সৌদি গ্যাজেট

এসি/আপ্র/৩০/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

সৌদি আরবে বাতিল হচ্ছে কাফালা বিধি, শ্রমবাজার হবে আকর্ষণীয়

আপডেট সময় : ০৩:৫৫:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবের অভিবাসী কর্মীদের জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। আগামী বছরের প্রথমার্ধেই দেশটিতে বহুবছর ধরে প্রচলিত কাফালা বা পৃষ্ঠপোষকতা ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অন্তত ১০ লাখ অভিবাসী কর্মী সরাসরি উপকৃত হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।

প্রায় সাত দশক ধরে কার্যকর ছিল কাফালা পদ্ধতি। এর পরিবর্তে চালু করা হবে চুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান ব্যবস্থা। ফলে নিয়োগকর্তা ও বিদেশি কর্মীদের সম্পর্ক আইনি কাঠামোর আওতায় আসবে। সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে।

বর্তমান কাফালা ব্যবস্থায় একজন কর্মীর ভিসা, বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের আইনি দায়ভার সম্পূর্ণভাবে নিয়োগকর্তার হাতে থাকে। তবে, নতুন ব্যবস্থায় প্রবাসী কর্মীরা নিজেরাই এক্সিট ও রি-এন্ট্রি ভিসা নিতে পারবেন। পাসপোর্টে চূড়ান্ত প্রস্থান সিল দিতে আর পৃষ্ঠপোষকের অনুমতি লাগবে না। আর নতুন কর্মস্থলে যেতে পারবেন স্বাধীনভাবে, কর্ম-চুক্তির শর্ত অনুযায়ী।

এই উদ্যোগটি সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এর অংশ। আবাসন ও বিনোদন খাতে সংস্কার এবং প্রবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন করা ওই কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে।

কাফালা ব্যবস্থা বাতিলের পদক্ষেপটি ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে ঘোষণার কথা ছিল। তবে কোভিড ১৯ মহামারির কারণে তা স্থগিত হয়। এখন এটি আসছে ‘স্পেশাল প্রিভিলেজ রেসিডেন্সি পারমিট (প্রিমিয়াম ইকামা)’-এর পরবর্তী ধাপ হিসেবে, যা ২০১৯ সালের মে মাসে সৌদি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছিল। ইকামা প্রাপ্ত বিদেশিরা স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বসবাস, সম্পত্তির মালিকানা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, এমনকি বাণিজ্যিক সুবিধা ভোগের সুযোগ পান।

নতুন উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো শ্রমবাজারে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ সহজ করা, চাকরির স্বাধীনতা বাড়ানো এবং বাজারকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার উপযোগী করে তোলা। পাশাপাশি, কিছু নিয়োগকর্তার অনিয়ম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো সমস্যা দূর করাই এই সংস্কারের আরেকটি লক্ষ্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কাফালা ব্যবস্থা বিলুপ্তির ফলে সৌদি শ্রমবাজার আরো স্বচ্ছ ও আকর্ষণীয় হবে। এতে বিদেশি দক্ষ শ্রমিক আসতে উৎসাহিত হবেন, একই সঙ্গে সৌদি তরুণরাও ন্যায্য প্রতিযোগিতায় নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবেন।

তথ্যসূত্র: দ্য সৌদি গ্যাজেট

এসি/আপ্র/৩০/১০/২০২৫