আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সড়ক দুর্ঘটনায় যুবদলের এক কর্মীর ছেলে নিহত হওয়ার জেরে এই হামলা করেছে মৃতের স্বজনরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলার ঘটনায় বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় একটি মামলা করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. মোঃ মিলন হোসেন শ্যামনগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ছয় জনের নাম উল্লেখ করে ৮/১০জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীফলকাটি এলাকায় মোটর সাইকেলের ধাক্কায় মারাত্মকভাবে আহত হন যুবদল কর্মী রাহিম ইসলামের তিন বছরের শিশু পুত্র নিশাত। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। মাথার খুলি ভেঙে মগজ বের হয়ে আসায় চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেলে স্থানান্তর করেন। তবে উপজেলার খানপুর এলাকায় পৌঁছানোর পর নিশাতের মৃত্যু হলে ঐ শিশুর স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স ফিরিয়ে নিয়ে পুনরায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালে ফেরার পরপরই হঠাৎ ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে করে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ২৫-৩০ কর্মী জরুরি বিভাগের মধ্যে ঢুকে সহকারী মেডিকেল অফিসার আব্দুল আজিজকে মারধর শুরু করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আব্দুর রহমান। চিকিৎসককে রক্ষার চেষ্টা করলে তিনিও মারধরের শিকার হন।
সহকারী মেডিকেল অফিসার আব্দুল আজিজ জানান, মাথার হাঁড় ভেঙে ঘিলু বেরিয়ে আসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে শিশুটিকে সাতক্ষীরায় রেফার করা হয়। মারাত্মকভাবে আহত শিশুটির চিকিৎসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সম্ভব না বিধায় তাকে জেলা শহরে রেফার করা হয়েছিল। তবে প্রায় ৩০ মিনিট পরে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ঢুকে আব্দুল্লাহ তরফদারের নেতৃত্বে একদল লোক তার উপর হামলা করে।
এবিষয়ে আব্দুল্লাহ তরফদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাচ্চার অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় ডাক্তারদের আমরা শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু আমাদের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি রেফার করেন। এ কারণে পথে শিশুটির মৃত্যু হয়। বাচ্চা মারা যাওয়ায় কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী ডাক্তারের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। তবে আমরা মারামারি করিনি, বরং ঠেকিয়েছিলাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান জানান, জরুরী বিভাগে ঢুকে হামলার ঘটনায় উপস্থিত রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে। হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত এজাহার দেওয়া হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, শ্যামনগর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সানা/এসি/আপ্র/৩০/১০/২০২৫




















