ঢাকা ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

‘জীবন থেকে পালাতে চেয়েছিলেন’ মেট্রো দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালাম

  • আপডেট সময় : ০৮:০২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে এর আঘাতে নিহত হন আবুল কালাম আজাদ (৩৬)। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে। রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই মেট্রোরেলের ওপর থেকে ভারী ধাতব যন্ত্রাংশটি নিচে পড়ে মাথায় আঘাত হানে আবুল কালামের। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, আবুল কালাম আজাদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করতেন। ব্যবসায়িক কাজে নিয়মিত ফার্মগেট এলাকায় যাতায়াত করতেন তিনি। ব্যক্তিগত কাজেও তিনি প্রায়ই ওই এলাকায় যেতেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট আবুল কালাম স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায় বসবাস করতেন। তার ছেলে আব্দুল্লাহর বয়স ৫ বছর এবং মেয়ে সুরাইয়া আক্তারের বয়স ৩ বছর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনার প্রায় ১৫ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে পোস্ট দেন কালাম। তিনি লেখেন, ‘ইচ্ছে তো অনেক, আপাতত যদি জীবন থেকে পালিয়ে যেতে পারতাম।’ এর কয়েক ঘণ্টা পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতের ভাবী আছমা আক্তার বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে ওর সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। বলেছিল, দু-এক দিনের মধ্যে বাড়ি আসবে, আর আমাকে ইলিশ মাছ কিনে রাখতে বলেছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরই শুনলাম, মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে। সংসারের হাল ধরেছিল সে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার চাই।’

নিহতের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার বলেন, ছোটবেলা থেকেই কালাম পরিশ্রমী ছিল। নিজের চেষ্টায় ঢাকায় ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিল। এমন আকস্মিক মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। সরকারের অবহেলার কারণেই আজ আমাদের ভাইটি মারা গেল। সরকার যেন পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়।

এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, আমরা খবর পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।

ওআ/আপ্র/২৬/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

‘জীবন থেকে পালাতে চেয়েছিলেন’ মেট্রো দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালাম

আপডেট সময় : ০৮:০২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে এর আঘাতে নিহত হন আবুল কালাম আজাদ (৩৬)। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামের আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে। রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই মেট্রোরেলের ওপর থেকে ভারী ধাতব যন্ত্রাংশটি নিচে পড়ে মাথায় আঘাত হানে আবুল কালামের। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, আবুল কালাম আজাদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করতেন। ব্যবসায়িক কাজে নিয়মিত ফার্মগেট এলাকায় যাতায়াত করতেন তিনি। ব্যক্তিগত কাজেও তিনি প্রায়ই ওই এলাকায় যেতেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট আবুল কালাম স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায় বসবাস করতেন। তার ছেলে আব্দুল্লাহর বয়স ৫ বছর এবং মেয়ে সুরাইয়া আক্তারের বয়স ৩ বছর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনার প্রায় ১৫ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে পোস্ট দেন কালাম। তিনি লেখেন, ‘ইচ্ছে তো অনেক, আপাতত যদি জীবন থেকে পালিয়ে যেতে পারতাম।’ এর কয়েক ঘণ্টা পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতের ভাবী আছমা আক্তার বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে ওর সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। বলেছিল, দু-এক দিনের মধ্যে বাড়ি আসবে, আর আমাকে ইলিশ মাছ কিনে রাখতে বলেছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরই শুনলাম, মেট্রোরেলের বেয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে। সংসারের হাল ধরেছিল সে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার চাই।’

নিহতের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার বলেন, ছোটবেলা থেকেই কালাম পরিশ্রমী ছিল। নিজের চেষ্টায় ঢাকায় ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিল। এমন আকস্মিক মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। সরকারের অবহেলার কারণেই আজ আমাদের ভাইটি মারা গেল। সরকার যেন পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়।

এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, আমরা খবর পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।

ওআ/আপ্র/২৬/১০/২০২৫