ঢাকা ১২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

  • আপডেট সময় : ০৮:২৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

শুক্রবার চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শাহবাগে আটকে দেয় পুলিশ -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর শাহবাগে চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। পরে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে পুলিশ বাধা দেয়। এতে তারা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অর্ধশতাধিক তরুণ-তরুণী শাহবাগে অবস্থান নেন। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেও চাকরির সুযোগ না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। শুক্রবার তারা যমুনার সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে পুলিশ শাহবাগেই আটকে দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে এবং কয়েকজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীকে জোরপূর্বক সরিয়ে নিয়েছে। একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কর্মসংস্থানের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে এখানে এসেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের মারধর করেছে, মেয়েদের আলাদা করে নিয়ে গেছে। আমরা জানতে চাই- মেয়েদের কেন আলাদা করা হলো?

আরেক আন্দোলনকারী জানান, ২০১৮ সালেও আমরা আন্দোলন করতে এসে নির্যাতনের শিকার হই। এবার আবারও একই ঘটনা ঘটলো। আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক, শিক্ষিত মানুষ। আমাদের দাবি শুধু একটা চাকরি।

আন্দোলনকারীরা বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমে অসংখ্য শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। তারা এসব পদে বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের চাকরি দেওয়ার দাবি জানান। তাদের ভাষায়- চিকিৎসক, প্রকৌশলী বা অন্য পেশায় যদি বিশেষ নিয়োগ হতে পারে, তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কেন নয়? তারা বলেন, আমরা ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছি, তাই আমাদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে হবে।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, তাদের কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তা থেকে সরিয়ে জাদুঘরের সামনে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা গত এক বছরের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না পাওয়ায় তারা আবারও রাস্তায় নেমেছেন। তাদের মূল দাবি তিনটি– প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করা; বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরিবর্তন করে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা বিশেষ পদ সৃষ্টি করা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য শিক্ষক পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়া।

সানা/কেএমএএ/আপ্র/২৪/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ইউক্রেনকে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ দিয়ে সহায়তার আহ্বান মিত্রদের

চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধীদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

আপডেট সময় : ০৮:২৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর শাহবাগে চাকরিপ্রত্যাশী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। পরে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে পুলিশ বাধা দেয়। এতে তারা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অর্ধশতাধিক তরুণ-তরুণী শাহবাগে অবস্থান নেন। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেও চাকরির সুযোগ না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। শুক্রবার তারা যমুনার সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে পুলিশ শাহবাগেই আটকে দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে এবং কয়েকজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীকে জোরপূর্বক সরিয়ে নিয়েছে। একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কর্মসংস্থানের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে এখানে এসেছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের মারধর করেছে, মেয়েদের আলাদা করে নিয়ে গেছে। আমরা জানতে চাই- মেয়েদের কেন আলাদা করা হলো?

আরেক আন্দোলনকারী জানান, ২০১৮ সালেও আমরা আন্দোলন করতে এসে নির্যাতনের শিকার হই। এবার আবারও একই ঘটনা ঘটলো। আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক, শিক্ষিত মানুষ। আমাদের দাবি শুধু একটা চাকরি।

আন্দোলনকারীরা বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমে অসংখ্য শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। তারা এসব পদে বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের চাকরি দেওয়ার দাবি জানান। তাদের ভাষায়- চিকিৎসক, প্রকৌশলী বা অন্য পেশায় যদি বিশেষ নিয়োগ হতে পারে, তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কেন নয়? তারা বলেন, আমরা ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছি, তাই আমাদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে হবে।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, তাদের কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি। নিরাপত্তার স্বার্থে রাস্তা থেকে সরিয়ে জাদুঘরের সামনে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা গত এক বছরের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না পাওয়ায় তারা আবারও রাস্তায় নেমেছেন। তাদের মূল দাবি তিনটি– প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী আদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করা; বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরিবর্তন করে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা বিশেষ পদ সৃষ্টি করা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য শিক্ষক পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়া।

সানা/কেএমএএ/আপ্র/২৪/১০/২০২৫