ঢাকা ০৬:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

অভিযান বন্ধ না হলে হামাসকে ‘মেরে ফেলার’ হুমকি ট্রাম্পের

  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজায় গ্যাং ও ইসরায়েলি সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলে হামাসের ওপর হামলার অনুমোদন দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি বলেছেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, যদি হামাস গাজায় মানুষ হত্যা চালিয়ে যায়- যা চুক্তির অংশ ছিল না – তাহলে তাদের মেরে ফেলার ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় থাকবে না। বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!

পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প পরিষ্কার করে বলেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। ট্রাম্প বলেন, এটা আমরা করব না। আমাদের সেটা করারও প্রয়োজন হবে না। এমন লোক আছে, খুব কাছেই আছে, যারা গিয়ে কাজটা সহজেই করে ফেলবে, আমাদের তত্ত্বাবধানে। তিনি যদিও কোনো দেশের নাম বলেননি, তার ইঙ্গিত স্পষ্টতই ছিল ইসরায়েলের দিকেই।

এই হুমকির মাধ্যমে ট্রাম্প যেন নিজের অবস্থান পাল্টালেন। এর আগে সপ্তাহের শুরুতে তিনি বলেছিলেন, গাজায় গ্যাং দমন অভিযানে হামাসের পদক্ষেপে তার আপত্তি নেই। গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “ওরা কয়েকটা ভয়ংকর গ্যাং নির্মূল করেছে, খুবই খারাপ লোক ছিল তারা। তাদের মেরে ফেলেছে, আর সত্যি বলতে, এতে আমি তেমন বিরক্ত হইনি। এটা ঠিক আছে।

সম্প্রতি গাজায় হামাস ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এসব গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা লুটপাট ও ইসরায়েলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। রোববারের ওই সংঘর্ষের পর গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, যেসব গ্যাং সদস্য রক্তপাতের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হবে। এর আগে গত জুন মাসে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, হামাসকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে তারা গাজার কিছু গ্যাংকে অস্ত্র দিয়েছে। এর মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল/আইএসআইএস)-ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীও ছিল।

গত রোববার ইসরায়েল-সম্পৃক্ত একটি গ্যাংয়ের বন্দুকধারীরা গাজার প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ আলজাফারাওয়িকে গুলি করে হত্যা করে বলে স্থানীয় বাহিনী জানিয়েছে। এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার অভিযোগ, হামাস সন্দেহভাজন ইসরায়েলি সহযোগীদের হত্যা করেছে, যা “ভয়াবহ অপরাধ”। আব্বাসের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, এটি মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আইনের শাসনের নীতির ওপর গুরুতর আঘাত। তবে গ্যাং ইস্যু ছাড়াও হামাসকে অন্য কারণেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে এবং গাজার প্রশাসনে তাদের ভূমিকার অবসান ঘটাতে হবে। তবে হামাস এসব শর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আবারও সতর্ক করে বলেন, হামাস যদি স্বেচ্ছায় অস্ত্র না ফেলে দেয়, তাহলে জোর করে তা করা হবে। তার ভাষায়, তারা নিরস্ত্র হবে। আর যদি তা না করে, তাহলে আমরাই তাদের নিরস্ত্র করব, খুব দ্রুত, হয়তো সহিংসভাবেই।

সানা/ওআ/আপ্র/১৭/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

অভিযান বন্ধ না হলে হামাসকে ‘মেরে ফেলার’ হুমকি ট্রাম্পের

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজায় গ্যাং ও ইসরায়েলি সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলে হামাসের ওপর হামলার অনুমোদন দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি বলেছেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, যদি হামাস গাজায় মানুষ হত্যা চালিয়ে যায়- যা চুক্তির অংশ ছিল না – তাহলে তাদের মেরে ফেলার ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় থাকবে না। বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!

পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প পরিষ্কার করে বলেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। ট্রাম্প বলেন, এটা আমরা করব না। আমাদের সেটা করারও প্রয়োজন হবে না। এমন লোক আছে, খুব কাছেই আছে, যারা গিয়ে কাজটা সহজেই করে ফেলবে, আমাদের তত্ত্বাবধানে। তিনি যদিও কোনো দেশের নাম বলেননি, তার ইঙ্গিত স্পষ্টতই ছিল ইসরায়েলের দিকেই।

এই হুমকির মাধ্যমে ট্রাম্প যেন নিজের অবস্থান পাল্টালেন। এর আগে সপ্তাহের শুরুতে তিনি বলেছিলেন, গাজায় গ্যাং দমন অভিযানে হামাসের পদক্ষেপে তার আপত্তি নেই। গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “ওরা কয়েকটা ভয়ংকর গ্যাং নির্মূল করেছে, খুবই খারাপ লোক ছিল তারা। তাদের মেরে ফেলেছে, আর সত্যি বলতে, এতে আমি তেমন বিরক্ত হইনি। এটা ঠিক আছে।

সম্প্রতি গাজায় হামাস ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এসব গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা লুটপাট ও ইসরায়েলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। রোববারের ওই সংঘর্ষের পর গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, যেসব গ্যাং সদস্য রক্তপাতের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হবে। এর আগে গত জুন মাসে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, হামাসকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে তারা গাজার কিছু গ্যাংকে অস্ত্র দিয়েছে। এর মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল/আইএসআইএস)-ঘনিষ্ঠ গোষ্ঠীও ছিল।

গত রোববার ইসরায়েল-সম্পৃক্ত একটি গ্যাংয়ের বন্দুকধারীরা গাজার প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ আলজাফারাওয়িকে গুলি করে হত্যা করে বলে স্থানীয় বাহিনী জানিয়েছে। এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হামাসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার অভিযোগ, হামাস সন্দেহভাজন ইসরায়েলি সহযোগীদের হত্যা করেছে, যা “ভয়াবহ অপরাধ”। আব্বাসের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, এটি মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আইনের শাসনের নীতির ওপর গুরুতর আঘাত। তবে গ্যাং ইস্যু ছাড়াও হামাসকে অন্য কারণেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হামাসকে নিরস্ত্র হতে হবে এবং গাজার প্রশাসনে তাদের ভূমিকার অবসান ঘটাতে হবে। তবে হামাস এসব শর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আবারও সতর্ক করে বলেন, হামাস যদি স্বেচ্ছায় অস্ত্র না ফেলে দেয়, তাহলে জোর করে তা করা হবে। তার ভাষায়, তারা নিরস্ত্র হবে। আর যদি তা না করে, তাহলে আমরাই তাদের নিরস্ত্র করব, খুব দ্রুত, হয়তো সহিংসভাবেই।

সানা/ওআ/আপ্র/১৭/১০/২০২৫