মোঃ নুর জামাল হক (রংপুর প্রতিনিধি): রংপুর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আতিকুর রহমান আরিফের বিরুদ্ধে নারী নেত্রী সাংবাদিককে হেনস্থা ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
গত রোববার (১২ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে আদালতের ১০ তলা ভবনের লিফটে এ হেনস্তা ও হুমকি দেন বলে অভিযোগ। ভুক্তভোগী মোছাঃ শরিফা বেগম শিউলী, সভাপতি রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলনের ৩ প্রধান সমন্বয়ক-এর একজন। তিনি জানান, গত ১২ অক্টোবর বিকাল ৪টার দিকে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাজে যাওয়ার সময় লিফটে ১০ তলা ভবনে ওঠার জন্য লিফটের ০৩ নং বাটন চাপ দিলে লিফটে থাকা মোঃ আতিকুর রহমান আরিফ (এডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, রংপুর) আমাকে লিফট থেকে নেমে যেতে বলেন। এ সময় গোয়েন্দা সংস্থার একজনসহ আরোও ৭/৮ জন সাধারণ মানুষ লিফটে ছিলেন। তখন আমি কেন নেমে যাবো জানতে চাইলে তিনি হঠাৎ করে আমার ওপর রেগে যান এবং বলেন- লিফটে উঠছেন কেন? আপনি চতুর্থ তলায় যেতে লিফটে ওঠা লাগে? নামেন হেঁটে হেঁটে যান!
শিউলী জানান, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় হেঁটে যেতে পারবো না বলে তাকে জানাই। তবে অসুস্থতার কথা বললেও তিনি আমাকে রাগান্বিতভাবে লিফট থেকে নেমে যেতে বলেন। এছাড়াও বলেন, এটা আইনজীবীদের লিফট। আমাকে লিফট থেকে জোর করে নামানোর চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় আমি নামতে না চাইলে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আপনার কোনো মামলা-মোকদ্দমা হাতে পাইলে খেয়ে ফেলবো এবং আপনাকে শেষ করে দিবো।’ হুমকির সঙ্গে উত্তেজিতভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
শিউলী বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমি ভীত সন্ত্রস্ত। তিনি (অ্যাড. মোঃ আতিকুর রহমান আরিফ) আমাকেসহ যেকোনো সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমায় ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করে অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন করতে পারেন। সাংবাদিক শিউলী বলেন, ‘গণমাধ্যমবিরোধী ব্যক্তি হিসেবে আইনজীবীর এমন আচরণ গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য হুমকির কারণ। আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিসহ এপিপি পদ থেকে তার অপসারণপূর্বক মুক্ত গণমাধ্যম ও নিরাপদ গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ আফতাব উদ্দিন জানান, তিনি এপিপি হোক বা যেই হোক, একজন মহিলার সঙ্গে তো খারাপ আচরণ করতে পারেন না। সবার সঙ্গে আমাদের আচরণ ভালো করতে হবে। আমি অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টা খতিয়ে দেখবো।
তিনি আরো বলেন, বিগত দিনের আইনজীবীরা যেমন আচার-ব্যবহার করে গেছেন, মানুষ তাতে ক্ষিপ্ত। আমরা কাজের মাধ্যমেই আমাদের আইনজীবীদের ভালোবাসা ফিরিয়ে আনতে চাই।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, এ ধরনের আচরণ কারো সাথেই কাম্য নয়। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সানা/ওআ/আপ্র/১৩/১০/২০২৫