ক্রীড়া ডেস্ক: লক্ষ্যটা মোটেই তেমন বড় ছিল না। আফগানিস্তান করেছিল ১৯০। এই মাঠে আগে ব্যাট করে এত কম রান নেই আর কোনো দলের। তবে অবিশ্বাস্যভাবে, সবচেয়ে কম রান তাড়া করেও বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ হারার পথ খুঁজে নিলো মেহেদী হাসান মিরাজের দল! অথচ টস হেরে পরে ব্যাটিং পেয়ে অধিনায়ক বলেছিলেন, ২৪০-২৫০ রানের লক্ষ্য এখানে তাড়া করার মতো।
কী এমন ঘটলো যাতে-এমন পরাজয়? একের পর এক ব্যাটসম্যানের বাজে শট, নড়বড়ে টেকনিক, ব্যাখ্যাতীত রান আউট, ম্যাচ সচেতনতার দৃষ্টিকটূ ঘাটতি, সবকিছুর যোগফল বিব্রতকর ব্যাটিং ব্যর্থতা। সিরিজে সমতা ফেরানোর চ্যালেঞ্জে লড়াই করতেও পারলো না বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮১ রানের জয়ে এক ম্যাচ বাকি রেখেই সিরিজ জিতে নিল আফগানিস্তান।
একসময় যে সংস্করণ ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তির জায়গা, সেটিই এখন নিয়মিত হতাশার উপলক্ষ। এটিসহ সবশেষ ১২ ওয়ানডের ১০টি হারলো তারা।
আবু ধাবিতে শনিবার (১১ অক্টোবর) আফগানিস্তানের জয়ে বীরোচিত এক ইনিংস খেলেন ইব্রাহিম জাদরান। দলের ১৯০ রানের অর্ধেক আসে তার একার ব্যাট থেকেই। ইনিংস শুরু করতে নেমে তিনি আউট হন ৪৪তম ওভারে। চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ে ৯৫ রান করেন ১৪০ বল খেলে। চার মারেন স্রেফ তিনটি, ছয় একটি। সেই ইনিংসকেই পরে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স করে তোলেন আফগান বোলাররা। বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় রানেই।
আগের ম্যাচে তিন উইকেট শিকারি রাশিদ খান এবার আরো ক্ষুরধার পারফরম্যান্সে। প্রথম ম্যাচে তিন উইকেটের পর এ দিনও নতুন বলে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ভোগান্তিতে ফেলেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই।
ম্যাচের প্রথম ভাগে ইব্রাহিম জাদরান ছাড়া সুবিধা করতে পারেননি আফগানিস্তানের অন্য ব্যাটসম্যানরা। আর কোনো ব্যাটসম্যান ২৫ রানও করতে পারেননি। কোনো জুটি স্পর্শ করেনি ৪০। ইব্রাহিম তবু চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ে দলের হাল ধরে রাখেন। তানজিমকে বিশাল এক ছক্কা মারার পর এই পেসারের শর্ট বলেই আউট হন রাহমানউল্লাহ গুরবাজ (১১)। তানভির ইসলামকে উইকেট উপহার দেন সেদিকউল্লাহ আটাল (৮)।
আফগানদের বিপদ আরো বাড়ে রানিংয়ের সময় পায়ে টানা লেগে রেহমাত শাহ মাঠ ছেড়ে যাওয়ায়। মিরাজ দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হাশমাতউল্লাহ শাহিদিকে। বিপজ্জনক আজমাতউল্লাহ ওমারজাইকে রানই করতে দেননি রিশাদ হোসেন।
ইব্রাহিমকে কিছুটা সঙ্গ দেন মোহাম্মাদ নাবি। এই জুটির ৩৯ রানই ইনিংসের সেরা। তানজিম আক্রমণে ফিরে বিদায় করেন নাবিকে (২২)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৪৪.৫ ওভারে ১৯০ (গুরবাজ ১১, ইব্রাহিম ৯৫, আটাল ৮, রেহমাত ৯ আহত অবসর, শাহিদি ৪, ওমারজাই ০, নাবি ২২, খারোটে ১৩, রাশিদ ১, গাজানফার ২২, বাশির ০*; তানজিম ৭-০-৩৫-২, মুস্তাফিজ ৮-০-৩৮-০, মিরাজ ১০-১-৪২-৩, তানভির ১০-০-৩৫-১, রিশাদ ৯.৫-০-৩৭-২)।
বাংলাদেশ: ২৮.৩ ওভারে ১০৯ (তানজিদ ০, সাইফ ২২, শান্ত ৭, হৃদয় ২৪, মিরাজ ৪, জাকের ১৮, সোহান ১৫, তানজিম ০, রিশাদ ৫, তানভির ০, মুস্তাফিজ ৫*; ওমারজাই ৭-১-২৭-৩, বাশির ২-০-২২-০, গাজানফার ৪-০-২১-০, রাশিদ ৮.৩-২-১৭-৫, খারোটে ৭-১-২২-১)বাংলাদেশি পোশাক
ফল: আফগানিস্তান ৮১ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে আফগানিস্তান ২-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইব্রাহিম জাদরান।
সানা/আপ্র/১২/১০/২০২৫