ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

ইলিশ রক্ষায় সুগন্ধা-বিষখালীর ১৮ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

ঝালকাঠি সংবাদদাতা: প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ শিকার, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ঝালকাঠিতে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ১৮ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ১৮টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তর জানান, এ স্থানগুলোতে ইলিশের যাতায়াত বেশি থাকে। তাই জেলেদের অপতৎপরতা এবং চোরাগুপ্তাভাবে নদীতে জাল ফেলার আগ্রহও থাকে অধিক। এসব স্থানে জেলেরা একতাবদ্ধ হয়ে অভিযানকারী দলের ওপর অতর্কিত হামলা করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। একাধিক স্থানে বিগত সময়ে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

এসব স্থানে এবার জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বিশেষ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন, নৌ-পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সেই সঙ্গে পাশের জেলাগুলোর সঙ্গে নদীর সংযোগস্থলে সমন্বিত অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল।

জয়দেব জানান, ঝালকাঠি জেলা মৎস্য বিভাগের জলসীমা রয়েছে ২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৮ কিলোমিটার ইলিশ প্রজনন এলাকা। যার মধ্যে বিষখালী নদীতে সদর উপজেলার দেউরী, দিয়াকুল ও কিস্তকাঠি, রাজাপুরের নাপিতেরহাট, বাদুরতলা, উত্তর পালট, দক্ষিণ পালট ও চল্লিশ কাহনিয়া, কাঠালিয়ার আওড়াবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া ও চিঙ্গিয়াখালী, নলছিটির হদুয়া ও ভবানী এবং এ উপজেলার সুগন্ধা নদীর মাটিভাঙা, সারদল, সরই, মগড় ও কালিজিরা এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া বিপদজনক পথ হিসেবে রয়েছে বিষখালী নদীর সদর উপজেলা, রাজাপুর ও নলছিটির দেউরী, নাপিতেরহাট, ভবানীপুর ও নলবুনিয়া এলাকার ১৪-১৫ কিলোমিটার এবং সুগন্ধা নদীর নলছিটি উপজেলার মগড় ও কালিজিরার দুই-তিন কিলোমিটার এলাকা।

এসব এলাকায় জেলের সংখ্যা বেশি। তাদের সঙ্গে মৌসুমি জেলেরাও রয়েছেন। অভিযান পরিচালনাকালে মৌসুমি জেলেরা হামলা করে। এজন্য ওই এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বিশেষভাবে জোরদার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

জয়দেব বলেন, ঝালকাঠি জেলায় ইলিশ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক হাজার ৮০ মেট্রিক টন এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এক হাজার ৫৫ টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, নিষিদ্ধ সময়ে ঝালকাঠি জেলার মৎস্য সম্পদ মা ইলিশ রক্ষায় প্রতিটি উপজেলা থেকে চারটি করে অভিযানকারী দল টহল দেবে। সেই সঙ্গে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ থাকবে, যাতে কোনো তথ্য পেলেই তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করতে পারে। প্রতিটি দল একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করবে। বিশেষ করে জ্যোৎস্না রাতে সমুদ্রের লোনা পানির ইলিশ মাছ নদীর মিষ্টি পানিতে ডিম ছাড়তে আসে। সে সময়টি সম্ভবত ৭-৮ অক্টোবর হতে পারে। তখন বিশেষ অভিযান পরিচালনা ও সচেতনতামূলক মহড়া দেওয়া হবে। দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে।

এসি/আপ্র/০৪/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইলিশ রক্ষায় সুগন্ধা-বিষখালীর ১৮ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত

আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

ঝালকাঠি সংবাদদাতা: প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ শিকার, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। ঝালকাঠিতে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ১৮ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ১৮টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তর জানান, এ স্থানগুলোতে ইলিশের যাতায়াত বেশি থাকে। তাই জেলেদের অপতৎপরতা এবং চোরাগুপ্তাভাবে নদীতে জাল ফেলার আগ্রহও থাকে অধিক। এসব স্থানে জেলেরা একতাবদ্ধ হয়ে অভিযানকারী দলের ওপর অতর্কিত হামলা করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। একাধিক স্থানে বিগত সময়ে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

এসব স্থানে এবার জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বিশেষ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন, নৌ-পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সেই সঙ্গে পাশের জেলাগুলোর সঙ্গে নদীর সংযোগস্থলে সমন্বিত অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল।

জয়দেব জানান, ঝালকাঠি জেলা মৎস্য বিভাগের জলসীমা রয়েছে ২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৮ কিলোমিটার ইলিশ প্রজনন এলাকা। যার মধ্যে বিষখালী নদীতে সদর উপজেলার দেউরী, দিয়াকুল ও কিস্তকাঠি, রাজাপুরের নাপিতেরহাট, বাদুরতলা, উত্তর পালট, দক্ষিণ পালট ও চল্লিশ কাহনিয়া, কাঠালিয়ার আওড়াবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া ও চিঙ্গিয়াখালী, নলছিটির হদুয়া ও ভবানী এবং এ উপজেলার সুগন্ধা নদীর মাটিভাঙা, সারদল, সরই, মগড় ও কালিজিরা এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া বিপদজনক পথ হিসেবে রয়েছে বিষখালী নদীর সদর উপজেলা, রাজাপুর ও নলছিটির দেউরী, নাপিতেরহাট, ভবানীপুর ও নলবুনিয়া এলাকার ১৪-১৫ কিলোমিটার এবং সুগন্ধা নদীর নলছিটি উপজেলার মগড় ও কালিজিরার দুই-তিন কিলোমিটার এলাকা।

এসব এলাকায় জেলের সংখ্যা বেশি। তাদের সঙ্গে মৌসুমি জেলেরাও রয়েছেন। অভিযান পরিচালনাকালে মৌসুমি জেলেরা হামলা করে। এজন্য ওই এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে বিশেষভাবে জোরদার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

জয়দেব বলেন, ঝালকাঠি জেলায় ইলিশ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক হাজার ৮০ মেট্রিক টন এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এক হাজার ৫৫ টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, নিষিদ্ধ সময়ে ঝালকাঠি জেলার মৎস্য সম্পদ মা ইলিশ রক্ষায় প্রতিটি উপজেলা থেকে চারটি করে অভিযানকারী দল টহল দেবে। সেই সঙ্গে একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ থাকবে, যাতে কোনো তথ্য পেলেই তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করতে পারে। প্রতিটি দল একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করবে। বিশেষ করে জ্যোৎস্না রাতে সমুদ্রের লোনা পানির ইলিশ মাছ নদীর মিষ্টি পানিতে ডিম ছাড়তে আসে। সে সময়টি সম্ভবত ৭-৮ অক্টোবর হতে পারে। তখন বিশেষ অভিযান পরিচালনা ও সচেতনতামূলক মহড়া দেওয়া হবে। দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে।

এসি/আপ্র/০৪/১০/২০২৫