ঢাকা ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজধানীতে মেট্রোরেলে বাড়ছে ১০ ট্রেন, চলবে রাত ১০ টার পরও

  • আপডেট সময় : ১১:২৮:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীবাসীর কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মেট্রোরেলে এবার আরো ১০টি নতুন ট্রিপ যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

নতুন সূচি কার্যকর হলে সকাল আরো আগে থেকে এবং রাত ১০টার পর পর্যন্ত ট্রেন চলবে। এতে প্রতিদিন অতিরিক্ত ২৩ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে।

প্রতিদিন বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। বিশেষ দিনে যাত্রীসংখ্যা সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। লক্ষ্য ছিল দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন। প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে দিনে প্রায় ২০০ ট্রিপ চলছে। তবে যাত্রীচাহিদা বাড়ায় ট্রেনের আসন ও ধারণক্ষমতা যথেষ্ট নয়। তাই নতুন ১০ ট্রিপ যুক্ত করার চাপ এসেছে মন্ত্রণালয় থেকেও।

মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনে ৬টি কোচ থাকলেও প্রকল্প পরিকল্পনায় ছিল ৮ কোচ। বর্তমানে তা কার্যকর হচ্ছে না তিন কারণে—

১. অতিরিক্ত কোচের জন্য প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) এখনো স্থাপন হয়নি।

২. নতুন কোচ যুক্ত করতে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়।

৩. বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ বিদ্যমান ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম সামলাতে পারবে কিনা, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে।

বর্তমান ট্রেনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ যাত্রী একসঙ্গে ভ্রমণ করতে পারেন। অতিরিক্ত ১০ ট্রিপ চালু হলে প্রতিদিন আরো ২৩ হাজার যাত্রী যোগ হবে।

নতুন সূচির পরিকল্পনা

ডিএমটিসিএলের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী—

সকাল ৬টার পর থেকে যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে পারবেন।

প্রথম ট্রিপ চলবে সকাল সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় সুইপিং ট্রেনের পর।

উত্তরা থেকে সকাল ৭টায় এবং মতিঝিল থেকে সকাল ৭টা ১০ ও ৭টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়তে পারে।

বর্তমানে উত্তরা থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এবং মতিঝিল থেকে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে।

রাতে আরো ৬টি ট্রিপ যুক্ত হবে। এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে উত্তরা থেকে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। নতুন সূচিতে উত্তরা থেকে রাত ৯টা ১০, ৯টা ২০ ও ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়বে রাত ৯টা ৫০, ১০টা ও ১০টা ১০ মিনিটে।

ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন বলেছেন, এটি এখন স্টাডি পর্যায়ে আছে। স্টাডি শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা চেষ্টা করছি।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ট্রিপ বাড়ানোর চেয়ে কোচ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মেট্রোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল ৮ কোচের ভিত্তিতে। কিন্তু এখন নানা টেকনিক্যাল কারণ দেখিয়ে তা এড়ানো দুঃখজনক। বেশি ট্রিপ চালালে বিদ্যুৎ ব্যয়ও অনেক বাড়বে। অথচ কোচ বাড়ালে তুলনামূলকভাবে যাত্রীচাহিদা মেটানো সহজ হবে।

তিনি আরো বলেন, মেট্রো একটি এনার্জি-হাঙরি পরিবহন ব্যবস্থা। হেডওয়ে এক মিনিট কমালেই বিদ্যুৎ খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

এসি/আপ্র/২১/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রাজধানীতে মেট্রোরেলে বাড়ছে ১০ ট্রেন, চলবে রাত ১০ টার পরও

আপডেট সময় : ১১:২৮:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীবাসীর কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মেট্রোরেলে এবার আরো ১০টি নতুন ট্রিপ যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

নতুন সূচি কার্যকর হলে সকাল আরো আগে থেকে এবং রাত ১০টার পর পর্যন্ত ট্রেন চলবে। এতে প্রতিদিন অতিরিক্ত ২৩ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে।

প্রতিদিন বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। বিশেষ দিনে যাত্রীসংখ্যা সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যায়। লক্ষ্য ছিল দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন। প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে দিনে প্রায় ২০০ ট্রিপ চলছে। তবে যাত্রীচাহিদা বাড়ায় ট্রেনের আসন ও ধারণক্ষমতা যথেষ্ট নয়। তাই নতুন ১০ ট্রিপ যুক্ত করার চাপ এসেছে মন্ত্রণালয় থেকেও।

মেট্রোরেলের প্রতিটি ট্রেনে ৬টি কোচ থাকলেও প্রকল্প পরিকল্পনায় ছিল ৮ কোচ। বর্তমানে তা কার্যকর হচ্ছে না তিন কারণে—

১. অতিরিক্ত কোচের জন্য প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (পিএসডি) এখনো স্থাপন হয়নি।

২. নতুন কোচ যুক্ত করতে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়।

৩. বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ বিদ্যমান ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম সামলাতে পারবে কিনা, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে।

বর্তমান ট্রেনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ যাত্রী একসঙ্গে ভ্রমণ করতে পারেন। অতিরিক্ত ১০ ট্রিপ চালু হলে প্রতিদিন আরো ২৩ হাজার যাত্রী যোগ হবে।

নতুন সূচির পরিকল্পনা

ডিএমটিসিএলের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী—

সকাল ৬টার পর থেকে যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে পারবেন।

প্রথম ট্রিপ চলবে সকাল সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় সুইপিং ট্রেনের পর।

উত্তরা থেকে সকাল ৭টায় এবং মতিঝিল থেকে সকাল ৭টা ১০ ও ৭টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়তে পারে।

বর্তমানে উত্তরা থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে এবং মতিঝিল থেকে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে।

রাতে আরো ৬টি ট্রিপ যুক্ত হবে। এখন শেষ ট্রেন ছাড়ে উত্তরা থেকে রাত ৯টায় এবং মতিঝিল থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। নতুন সূচিতে উত্তরা থেকে রাত ৯টা ১০, ৯টা ২০ ও ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রেন ছাড়বে। মতিঝিল থেকে ছাড়বে রাত ৯টা ৫০, ১০টা ও ১০টা ১০ মিনিটে।

ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেন বলেছেন, এটি এখন স্টাডি পর্যায়ে আছে। স্টাডি শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে। আমরা চেষ্টা করছি।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ট্রিপ বাড়ানোর চেয়ে কোচ বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মেট্রোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল ৮ কোচের ভিত্তিতে। কিন্তু এখন নানা টেকনিক্যাল কারণ দেখিয়ে তা এড়ানো দুঃখজনক। বেশি ট্রিপ চালালে বিদ্যুৎ ব্যয়ও অনেক বাড়বে। অথচ কোচ বাড়ালে তুলনামূলকভাবে যাত্রীচাহিদা মেটানো সহজ হবে।

তিনি আরো বলেন, মেট্রো একটি এনার্জি-হাঙরি পরিবহন ব্যবস্থা। হেডওয়ে এক মিনিট কমালেই বিদ্যুৎ খরচ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

এসি/আপ্র/২১/০৯/২০২৫