ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আলোচনা সভায় গয়েশ্বর রায়

সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে, ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে

  • আপডেট সময় : ০২:১১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, আপনারা যাদেরকে মৌলবাদী বলেন, আমি তাদের মৌলবাদী বলি। তারা এখন বেহেশতের টিকেট বিক্রি করতেছে। অর্থাৎ তাগো লগে থাকলে আপনি বেহেশতে যাবেন; আর তাগো লগে না থাকলে আপনি দোজখে যাইবেন। আর নিজেরা বেহেশতে যাইব কি না, সেই কথা তারা জানে না।

সেজন্য আমি বলব, দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে। আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পাইছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে এখন সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র উন্মাদনা সৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, যেটার মধ্য দিয়ে মব তৈরি হয়।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা যদি গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে না রাখতে পারি, তাহলে সাম্প্রদায়িকতা হবে ফ্যাসিবাদের চেয়ে দ্বিগুণ কঠিন এবং জনজীবন ধ্বংসের শেষ মাথায় নিয়ে যাবে। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্ত চিন্তা, প্রতিভার বিকাশ এরা (সাম্প্রদায়িক শক্তি) হতে দেবেন না, ওরা করতে দেবে না।
বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। প্রত্যেকটা ধর্ম- যে যেই বিশ্বাসই করুক না কেন, ধর্ম কিন্তু মানুষকে সঠিক পরিচালিত করার জন্য একটা জীবন ব্যবস্থা। ধর্মে যেটা পাপ, আধুনিক রাষ্ট্র আইনে সেটা হলো অন্যায়। সেই অন্যায়ের বিচারের ধারার মধ্যে লেখা থাকে কোন অন্যায়ের জন্য কতটুক শাস্তি। ঠিক আপনি পবিত্র কোরআন-গীতা পড়েন কোন পাপের জন্য মৃত্যুর পরে কার কী শাস্তি হবে, সেটাও কিন্তু লেখা আছে। সেই কারণে ধর্মের সাথে রাষ্ট্র ব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নাই।

সরকার যে আছে তা দেখা যায়: গয়েশ্বর বলেন, হাসিনা সরকার ছিল ফ্যাসিবাদ, ভুইলা গেছে তো ফ্যাসিবাদ সরকার। এই সরকারটা কোন বাদ? সরকারের কোনো কাজকর্ম আছে, চোখে পড়ে? তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ কোনো কথা বলে? মন্ত্রণালয় কেমনে চলে, কোন মন্ত্রণালয়ে কী হচ্ছে কোনো খবর রাখে? সরকারের সব চালাচ্ছে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া সেই প্রশাসন। এখন এত জামায়াত, এত বিএনপি যদি সচিবালয় থাকে- তো হাসিনার সময়ে এরা থাকলো কেমনে? ও (শেখ হাসিনার সরকার) তো প্রায়ই পোস্টমর্টাম করতো, পোস্টমর্টাম করে করে বের করে দিতো তাই না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকে যে এলাকায় সব বিএনপি, তাহলে আওয়ামী লীগ এতদিন ছিল কোথায়? কতগুলো মাধ্যমে দেখবেন টিকটক হাবিজাবির মধ্যে দেখবেন। আর মিডিয়া এমন স্বাধীন হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাধীনতা গণতন্ত্রের মধ্যে, কিন্তু দায়িত্ব মূলত একটা থাকবে। মিডিয়া স্বাধীনতা যা খুশি তাই বলব, যাকে খুশি তাকে বলবো।

‘যেমন আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আর সোশাল মিডিয়া এমন হইছে যে, আমার কথা আমি বলব, যাকে খুশি তাকে বলব, যা খুশি তাই বলব। এগুলো শুনলে কান গরম হয়ে যায় এবং মানুষের মাথা নষ্ট করে দেবেৃছোট ছোট শিশু বাচ্চাদেরকে নানা ধরনের যে উপসর্গগুলো তৈরি করতেছেৃএকেবারে আমি অনেকগুলো কথা বলতে উচ্চারণ করতে পারব না.. এই স্বাধীনতা আমরা কোথায় দেব? বেহেস্তে না দোজখে দেব?

আমি তো এত লেখাপড়া জানি না, পিআর বুঝিও না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গণতন্ত্র মানে হলো জনগণ ভুলবশত হোক, আর সঠিকভাবেই হোক সে ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। আবার জনগণ যদি মনে করে যে, এরে ভোট দেওয়া ভুল করছি- তাহলে আরেকবার ভোটের সময় ভোট দিবে নাৃ এটাই তো স্বাভাবিক। এই সোজা পথটায় আমাদের চলতে কষ্টটা কেন? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তো সংস্কার গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কারে পরিণত করে ফেলেছে। ওই যে বললাম, হায়ার করে বিদেশ থেকে বুদ্ধিমান লোক আনা হইছে; আর এত বুদ্ধিমান একখানে বসলে যা হয় তাই হইতেছে। বদিউল আলম মজুমদার একটা বিরাট লেখা লিখছেন পিআরের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ভাই, আমি তো এত লেখাপড়া জানি না আমি পিআর বুঝিও না। এই পিআরটা কোথায় থেকে আসতেছে, বুঝি না। এখন বুঝতেছি-শুনতেছি যে নেপালে আছে। এজন্য সকাল-বিকাল প্রধানমন্ত্রী পাল্টায়। পাকিস্তানে সিএসপির (সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান) ভাইবা পরীক্ষায় একজনকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রীর নাম কি? পরীক্ষার্থী বললেন, সরি স্যার আমি তো সকালবেলা পত্রিকাটা পড়ি নাই। কালকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জানি অমুকৃ এর মধ্যে যদি পরিবর্তন না হয়ে থাকে। এই পিআরের ব্যবস্থাটা এরকম যে, সকালে প্রধানমন্ত্রী একজন, দুপুরে আরেকজন, রাত্রেবেলা আরেকজন- এই পদ্ধতি।

আমরা সবাই এমপি হতে চাই: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট দলে মিটিং করি কেন? আমরা গণতন্ত্র চাই নিরঙ্কুশভাবে। আমাদের নেতা তারেক প্রথমে বলছেন, আপনার ভোট আপনিই দিবেন, আমাকে নাইবা দেন। আপনাদের ভোটের অধিকারের আন্দোলন করছি, আমার পাশে থাকেন। কিন্তু আমরা যারা বিএনপি করি সবাই কি তারেক রহমানের মতো বলি নাকি। আমরা তো সবাই এমপি হইতে চাইৃ তোরা যে যা বলিস ভাই।

আমরা কিন্তু এলাকার মধ্যে নিজেরা নিজেরা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে কাঁদাছুড়াছুড়ি শুরু করি আর সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ছাইড়া দেয় কে কারে কী কয়? দোষ তাদের না, তারা আইটেম পায় ছাইড়া দেয়, ভিউয়ার বেশি হলে উপার্জন হয়, আয় হয়।সুতরাং আমরা যদি সংযতশীল না হই, আমরা যদি বলি যে জনগণের জন্য করি ৃএইটা আমি মনে করি আশীর্বাদ হতে পারে। আমরা পলিটিক্স করি নিজের জন্য, ‘আমি মন্ত্রী হমু, আমি এমপি হমু, এমপি-মন্ত্রী হলে সালাম পামু, এমপি-মন্ত্রী হলে আমার বাড়ি হইব, আমার গাড়ি হইব’- আমি আত্মসমালোচনা করছি।
আমি কোন দল বলে কথা বলছি না। যদি আমার এটা চিন্তা থাকে যে, পলিটিক্স ইজ অ্যা প্রফেশন অন দি বেসিস, প্রফেশন বি দা রিচ ম্যান তাহলে জনগণ আমাদের দিকে তাকাইয়া কতক্ষণ থাকবে? কেন থাকব? সুতরাং আমরা যদি সমস্বরে নামি যে আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা জনগণের অধিকার চাই আর কিছু চাই না; কারো শক্তি নাই- আপনাকে সরাতে পারে।

হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহিদুল হক দেওয়ানের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন।

এসি/সানা/আপ্র/১৩/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আলোচনা সভায় গয়েশ্বর রায়

সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে, ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে

আপডেট সময় : ০২:১১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, আপনারা যাদেরকে মৌলবাদী বলেন, আমি তাদের মৌলবাদী বলি। তারা এখন বেহেশতের টিকেট বিক্রি করতেছে। অর্থাৎ তাগো লগে থাকলে আপনি বেহেশতে যাবেন; আর তাগো লগে না থাকলে আপনি দোজখে যাইবেন। আর নিজেরা বেহেশতে যাইব কি না, সেই কথা তারা জানে না।

সেজন্য আমি বলব, দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে। আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পাইছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে এখন সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র উন্মাদনা সৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, যেটার মধ্য দিয়ে মব তৈরি হয়।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা যদি গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে না রাখতে পারি, তাহলে সাম্প্রদায়িকতা হবে ফ্যাসিবাদের চেয়ে দ্বিগুণ কঠিন এবং জনজীবন ধ্বংসের শেষ মাথায় নিয়ে যাবে। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্ত চিন্তা, প্রতিভার বিকাশ এরা (সাম্প্রদায়িক শক্তি) হতে দেবেন না, ওরা করতে দেবে না।
বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। প্রত্যেকটা ধর্ম- যে যেই বিশ্বাসই করুক না কেন, ধর্ম কিন্তু মানুষকে সঠিক পরিচালিত করার জন্য একটা জীবন ব্যবস্থা। ধর্মে যেটা পাপ, আধুনিক রাষ্ট্র আইনে সেটা হলো অন্যায়। সেই অন্যায়ের বিচারের ধারার মধ্যে লেখা থাকে কোন অন্যায়ের জন্য কতটুক শাস্তি। ঠিক আপনি পবিত্র কোরআন-গীতা পড়েন কোন পাপের জন্য মৃত্যুর পরে কার কী শাস্তি হবে, সেটাও কিন্তু লেখা আছে। সেই কারণে ধর্মের সাথে রাষ্ট্র ব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নাই।

সরকার যে আছে তা দেখা যায়: গয়েশ্বর বলেন, হাসিনা সরকার ছিল ফ্যাসিবাদ, ভুইলা গেছে তো ফ্যাসিবাদ সরকার। এই সরকারটা কোন বাদ? সরকারের কোনো কাজকর্ম আছে, চোখে পড়ে? তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ কোনো কথা বলে? মন্ত্রণালয় কেমনে চলে, কোন মন্ত্রণালয়ে কী হচ্ছে কোনো খবর রাখে? সরকারের সব চালাচ্ছে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া সেই প্রশাসন। এখন এত জামায়াত, এত বিএনপি যদি সচিবালয় থাকে- তো হাসিনার সময়ে এরা থাকলো কেমনে? ও (শেখ হাসিনার সরকার) তো প্রায়ই পোস্টমর্টাম করতো, পোস্টমর্টাম করে করে বের করে দিতো তাই না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকে যে এলাকায় সব বিএনপি, তাহলে আওয়ামী লীগ এতদিন ছিল কোথায়? কতগুলো মাধ্যমে দেখবেন টিকটক হাবিজাবির মধ্যে দেখবেন। আর মিডিয়া এমন স্বাধীন হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাধীনতা গণতন্ত্রের মধ্যে, কিন্তু দায়িত্ব মূলত একটা থাকবে। মিডিয়া স্বাধীনতা যা খুশি তাই বলব, যাকে খুশি তাকে বলবো।

‘যেমন আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আর সোশাল মিডিয়া এমন হইছে যে, আমার কথা আমি বলব, যাকে খুশি তাকে বলব, যা খুশি তাই বলব। এগুলো শুনলে কান গরম হয়ে যায় এবং মানুষের মাথা নষ্ট করে দেবেৃছোট ছোট শিশু বাচ্চাদেরকে নানা ধরনের যে উপসর্গগুলো তৈরি করতেছেৃএকেবারে আমি অনেকগুলো কথা বলতে উচ্চারণ করতে পারব না.. এই স্বাধীনতা আমরা কোথায় দেব? বেহেস্তে না দোজখে দেব?

আমি তো এত লেখাপড়া জানি না, পিআর বুঝিও না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গণতন্ত্র মানে হলো জনগণ ভুলবশত হোক, আর সঠিকভাবেই হোক সে ভোটে সরকার নির্বাচিত হবে। আবার জনগণ যদি মনে করে যে, এরে ভোট দেওয়া ভুল করছি- তাহলে আরেকবার ভোটের সময় ভোট দিবে নাৃ এটাই তো স্বাভাবিক। এই সোজা পথটায় আমাদের চলতে কষ্টটা কেন? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তো সংস্কার গান গাইতে গাইতে অনেক কুসংস্কারে পরিণত করে ফেলেছে। ওই যে বললাম, হায়ার করে বিদেশ থেকে বুদ্ধিমান লোক আনা হইছে; আর এত বুদ্ধিমান একখানে বসলে যা হয় তাই হইতেছে। বদিউল আলম মজুমদার একটা বিরাট লেখা লিখছেন পিআরের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ভাই, আমি তো এত লেখাপড়া জানি না আমি পিআর বুঝিও না। এই পিআরটা কোথায় থেকে আসতেছে, বুঝি না। এখন বুঝতেছি-শুনতেছি যে নেপালে আছে। এজন্য সকাল-বিকাল প্রধানমন্ত্রী পাল্টায়। পাকিস্তানে সিএসপির (সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান) ভাইবা পরীক্ষায় একজনকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রীর নাম কি? পরীক্ষার্থী বললেন, সরি স্যার আমি তো সকালবেলা পত্রিকাটা পড়ি নাই। কালকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জানি অমুকৃ এর মধ্যে যদি পরিবর্তন না হয়ে থাকে। এই পিআরের ব্যবস্থাটা এরকম যে, সকালে প্রধানমন্ত্রী একজন, দুপুরে আরেকজন, রাত্রেবেলা আরেকজন- এই পদ্ধতি।

আমরা সবাই এমপি হতে চাই: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট দলে মিটিং করি কেন? আমরা গণতন্ত্র চাই নিরঙ্কুশভাবে। আমাদের নেতা তারেক প্রথমে বলছেন, আপনার ভোট আপনিই দিবেন, আমাকে নাইবা দেন। আপনাদের ভোটের অধিকারের আন্দোলন করছি, আমার পাশে থাকেন। কিন্তু আমরা যারা বিএনপি করি সবাই কি তারেক রহমানের মতো বলি নাকি। আমরা তো সবাই এমপি হইতে চাইৃ তোরা যে যা বলিস ভাই।

আমরা কিন্তু এলাকার মধ্যে নিজেরা নিজেরা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে কাঁদাছুড়াছুড়ি শুরু করি আর সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ছাইড়া দেয় কে কারে কী কয়? দোষ তাদের না, তারা আইটেম পায় ছাইড়া দেয়, ভিউয়ার বেশি হলে উপার্জন হয়, আয় হয়।সুতরাং আমরা যদি সংযতশীল না হই, আমরা যদি বলি যে জনগণের জন্য করি ৃএইটা আমি মনে করি আশীর্বাদ হতে পারে। আমরা পলিটিক্স করি নিজের জন্য, ‘আমি মন্ত্রী হমু, আমি এমপি হমু, এমপি-মন্ত্রী হলে সালাম পামু, এমপি-মন্ত্রী হলে আমার বাড়ি হইব, আমার গাড়ি হইব’- আমি আত্মসমালোচনা করছি।
আমি কোন দল বলে কথা বলছি না। যদি আমার এটা চিন্তা থাকে যে, পলিটিক্স ইজ অ্যা প্রফেশন অন দি বেসিস, প্রফেশন বি দা রিচ ম্যান তাহলে জনগণ আমাদের দিকে তাকাইয়া কতক্ষণ থাকবে? কেন থাকব? সুতরাং আমরা যদি সমস্বরে নামি যে আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা জনগণের অধিকার চাই আর কিছু চাই না; কারো শক্তি নাই- আপনাকে সরাতে পারে।

হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহিদুল হক দেওয়ানের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন।

এসি/সানা/আপ্র/১৩/০৯/২০২৫