আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত–যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আলোচনা চলছে এবং শিগগিরই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলবেন। কয়েক সপ্তাহের কূটনৈতিক অচলাবস্থার পর দুই পক্ষের এই সদর্থক বার্তা সম্পর্ক পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের দুই মহান দেশের মধ্যে একটি সফল সমঝোতায় পৌঁছাতে কোনও সমস্যা হবে না।
এর পরদিন মোদি জবাবে বলেছেন, ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও স্বাভাবিক অংশীদার। উভয় দেশের দলীয় পর্যায়ের আলোচনা দ্রুত শেষ করার জন্য কাজ করছে।
মোদি আরো বলেছেন, তিনি শিগগিরই ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছেন। এই ইতিবাচক বার্তার পর ভারতীয় শেয়ারবাজারে সূচক ০ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে যায়।

গত কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে সমালোচনা করে আসছিল রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ভারত রাশিয়াকে অর্থ দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধকে জিইয়ে রাখছে। এদিকে, ভারত সম্প্রতি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করেছে। গত মাসে মোদি বেইজিং সফরে যান এবং সেখানেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একান্তে দেখা করেন।
এর মাঝেই বাণিজ্য নিয়ে ট্রাম্প কঠোর অবস্থান নেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করেন তিনি। তবে গত সপ্তাহে তিনি দাবি করেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক শূন্যে নামাতে প্রস্তুত। ট্রাম্পের ভাষায়, এ প্রস্তাব অনেক দেরিতে এসেছে, ভারতের উচিত ছিল বহু বছর আগে তা করা।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সেপ্টেম্বরে সরাসরি বৈঠক পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে সিএনবিসি-টিভি১৮। গত ২৫–২৯ আগস্ট মার্কিন আলোচকদের নয়াদিল্লি সফরের কথা থাকলেও, বৈঠক স্থগিত হয়ে যায় বড় ধরনের মতবিরোধের কারণে। ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
মার্কিন সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত–যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যবাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২৯ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি ছিল ৪৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।
এমকেই গ্লোবালের অর্থনীতিবিদ মাধবী অরোরা বলেন, ট্রাম্প ও মোদির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার আভাস মিললেও দ্রুত কোনও সমাধান হবে বলে মনে করার সময় এখনও আসেনি। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে স্পষ্ট সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্ভাব্য নতুন আলোচনার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-র ভূমিকাও আলোচনায় আসছে। সম্প্রতি ট্রাম্প ইইউকে চীন ও ভারতের ওপর শতভাগ শুল্ক বসাতে আহ্বান জানান। তবে নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউরোপ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, কোনও ধরনের নেতিবাচক পদক্ষেপ চলমান আলোচনাকে ব্যাহত করবে না।
সানা/আপ্র/১১/০৯/২০২৫্র



















