ঢাকা ১২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মহাকাশে দ্রুত বুড়িয়ে যায় মানুষের স্টেম কোষ

  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রযুক্তি ডেস্ক: মানবদেহের বিভিন্ন স্টেম কোষকে (সেল) স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয় মহাকাশের পরিবেশ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

কয়েক বছরে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাকাশে থাকা নভোচারীদের দেহে শারীরিক ও মানসিকভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে। স্টেম কোষ থেকে সাধারণত রক্ত ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কোষ তৈরি হয়। মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে মানুষের শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে তা বোঝার চেষ্টা এখনো করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।

‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, স্যান দিয়েগো’র একদল গবেষকের করা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় এক মাস মহাকাশে থাকা মানব স্টেম কোষে দ্রুত বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা গিয়েছে। এ গবেষণায় মানবদেহের ‘হেমাটোপয়েটিক স্টেম’ ও ‘প্রোজেনিটর সেল’ নিয়ে কাজ করেছেন গবেষকরা, যা দেহের রক্ত ও রোগ প্রতিরোধক কোষ তৈরিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

স্টেম কোষকে ৩২ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এ রাখেন গবেষকরা, যেখানে তারা বিশেষভাবে তৈরি এক ‘ন্যানোবায়োরিঅ্যাক্টর’ ব্যবহার করে সেগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষযক সাইট এনগ্যাজেট। একই ধরনের আরেকটি স্টেম কোষের সেট পৃথিবীতে অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টারে রাখা হয়। মহাকাশে রাখা কোষের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষতিকর পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, এসব কোষের নিজেদের পুনরায় তৈরির সক্ষমতা কমে যাওয়া, ডিএনএ ক্ষতির প্রবণতা বেড়ে যাওয়া ও মাইটোকন্ড্রিয়ায় প্রদাহ হওয়া। তবে কোষের এমন ধরনের পরিবর্তনের বিষয়টি স্থায়ী ছিল না। গবেষকরা বলেছেন, এসব কোষকে যখন মহাকাশের পরিবেশ থেকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয় তখন এগুলো আবার আগের মতো স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

‘ইউসি সান ডিয়েগো স্যানফোর্ড স্টেম সেল ইনস্টিটিউট’-এর পরিচালক ক্যাট্রিওনা জেমিসন বলেছেন, মহাকাশ হচ্ছে মানুষের শরীরের জন্য সবচেয়ে বড় চাপের পরীক্ষা। আমাদের এ গবেষণার ফলাফল খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাকাশের চাপ, যেমন মাইক্রোগ্র্যাভিটি বা অল্প মাধ্যাকর্ষণ ও মহাজাগতিক বিকিরণ রক্তের বিভিন্ন স্টেম কোষকে দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এসব পরিবর্তন বোঝা আমাদের কেবল নভোচারীদের সুরক্ষা দিতেই সাহায্য করবে না, বরং পৃথিবীতে মানুষের বার্ধক্য ও ক্যানসারের মতো বিভিন্ন রোগ বোঝার মডেল তৈরি করতেও সাহায্য করবে।

সানা/ওআ/আপ্র/০৯/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মহাকাশে দ্রুত বুড়িয়ে যায় মানুষের স্টেম কোষ

আপডেট সময় : ০৫:১৯:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: মানবদেহের বিভিন্ন স্টেম কোষকে (সেল) স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয় মহাকাশের পরিবেশ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

কয়েক বছরে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাকাশে থাকা নভোচারীদের দেহে শারীরিক ও মানসিকভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে। স্টেম কোষ থেকে সাধারণত রক্ত ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কোষ তৈরি হয়। মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে মানুষের শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে তা বোঝার চেষ্টা এখনো করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।

‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, স্যান দিয়েগো’র একদল গবেষকের করা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় এক মাস মহাকাশে থাকা মানব স্টেম কোষে দ্রুত বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা গিয়েছে। এ গবেষণায় মানবদেহের ‘হেমাটোপয়েটিক স্টেম’ ও ‘প্রোজেনিটর সেল’ নিয়ে কাজ করেছেন গবেষকরা, যা দেহের রক্ত ও রোগ প্রতিরোধক কোষ তৈরিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

স্টেম কোষকে ৩২ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এ রাখেন গবেষকরা, যেখানে তারা বিশেষভাবে তৈরি এক ‘ন্যানোবায়োরিঅ্যাক্টর’ ব্যবহার করে সেগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষযক সাইট এনগ্যাজেট। একই ধরনের আরেকটি স্টেম কোষের সেট পৃথিবীতে অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টারে রাখা হয়। মহাকাশে রাখা কোষের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষতিকর পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, এসব কোষের নিজেদের পুনরায় তৈরির সক্ষমতা কমে যাওয়া, ডিএনএ ক্ষতির প্রবণতা বেড়ে যাওয়া ও মাইটোকন্ড্রিয়ায় প্রদাহ হওয়া। তবে কোষের এমন ধরনের পরিবর্তনের বিষয়টি স্থায়ী ছিল না। গবেষকরা বলেছেন, এসব কোষকে যখন মহাকাশের পরিবেশ থেকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয় তখন এগুলো আবার আগের মতো স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

‘ইউসি সান ডিয়েগো স্যানফোর্ড স্টেম সেল ইনস্টিটিউট’-এর পরিচালক ক্যাট্রিওনা জেমিসন বলেছেন, মহাকাশ হচ্ছে মানুষের শরীরের জন্য সবচেয়ে বড় চাপের পরীক্ষা। আমাদের এ গবেষণার ফলাফল খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাকাশের চাপ, যেমন মাইক্রোগ্র্যাভিটি বা অল্প মাধ্যাকর্ষণ ও মহাজাগতিক বিকিরণ রক্তের বিভিন্ন স্টেম কোষকে দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এসব পরিবর্তন বোঝা আমাদের কেবল নভোচারীদের সুরক্ষা দিতেই সাহায্য করবে না, বরং পৃথিবীতে মানুষের বার্ধক্য ও ক্যানসারের মতো বিভিন্ন রোগ বোঝার মডেল তৈরি করতেও সাহায্য করবে।

সানা/ওআ/আপ্র/০৯/০৯/২০২৫