ঢাকা ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভিন্ন বাস্তবতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভোট উৎসব

  • আপডেট সময় : ১০:১৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

ডাকসু নির্বাচনে টিএসসি কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন- ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: ২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভিন্ন এক বাস্তবতায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছয় বছর পর আয়োজিত ডাকসু ও হল সংসদের এই নির্বাচনে নিজেদের রায় দিচ্ছেন প্রায় চল্লিশ হাজার শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়েছে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৮১০টি বুথে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।

ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। অন্তত ১০টি প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবেও লড়ছেন অনেকে।

নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন।
পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ জন; ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার
ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী মোট ৪৭১ জন।
প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি।
১৮টি হলে এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী।

এমন এক সময়ে এই নির্বাচন হচ্ছে, যখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্য নেই; ক্ষমতাসীন দলের সংগঠনের দাপটও নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি অনেকটাই নজিরবিহীন। ফলে এককভাবে কোনো প্রার্থী বা প্যানেলকে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রাখছেন না ভোটাররা।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনার মধ্যে ডাকসুর এই ভোট নিয়েও সারা দেশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে।

রাজনীতি বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, এবারের ডাকসু নির্বাচন যে পরিস্থিতিতে হচ্ছে, তাতে দুটো দিক আলাদাভাবে বলা যায়। এক হলো- ছাত্রশিবির সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যদিও তারা শিবিরের ব্যানার নিয়ে নির্বাচন করছে না। অন্য নামে প্যানেল করেছে। শিবিরের সক্রিয় হওয়াটা নতুন অভিজ্ঞতা। আমার ২৫ বছরের অভিজ্ঞতায় শিবিরকে কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত সক্রিয় দেখিনি। তিনি বলেন, আরেকটি দিক হলো- সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের একক প্রভাব নেই। যদিও এনসিপির ছাত্র সংগঠন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এনসিপিকে কেউ কেউ ‘কিংস পার্টিও’ মনে করছে।

আর ছাত্রদল বা অন্য রাজনৈতিক সংগঠনও আছে। বামপন্থিরা ভাগ হয়ে নির্বাচন করছে। ফলে একক কোনো দলের প্রভাব এবার দেখা যাচ্ছে না। এককভাবে কোনো ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব না দেখা গেলেও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক প্রভাব আছে।

নির্বাচনে নতুনত্ব এনে এবার ভোটকেন্দ্রগুলোকে আবাসিক হলের বাইরে এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ; নেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের সামনে ব্যালট-বাক্স সিলগালা আর ভোটগণনা এলইডি স্ক্রিনে প্রদর্শনের উদ্যোগ। আগের মতো এবারও অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন বা ওএমআর শিটের ব্যালটে ভোটগ্রহণ করা হবে ডাকসু ও হল সংসদের। ব্যালটে থাকবে, ব্যালট নম্বর, প্রার্থীর নাম এবং ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দেওয়ার জায়গা।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধতা আছে, এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ব্রেইল ব্যালট পেপারের ব্যবস্থা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা চাইলে অন্যের সহায়তায় ওএমআর ব্যালটেও ভোট দিতে পারবেন।

সকাল ৮টা বাজার আগে থেকেই টিএসসি কেন্দ্রের সামনে দেখা যায় ভোট দেওয়ার জন্য দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছিলেন। তাদের একজন সুমাইয়া জাহান একটি সংবাদসংস্থাকে বলেন, সবার আগে ভোট দেবো- এই আশায় সকাল সকালই এসেছিলাম। এসে দেখি আমার আগেই আরো অনেকে চলে আসছে।

পৌনে ৮টায় সাংবাদিকদের সামনে ভোটের বাক্স সিলগালা করা হয়। পরে ৮টা ৭ মিনিট থেকে এই কেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এরপর ৮টা ১০ মিনিট থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ।

টিএসসি কেন্দ্রের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেন, এখন তো মাত্র ভোটগ্রহণ শুরু করলাম। এখনই কোনো মন্তব্য করবো না। কিছুক্ষণ পরে কথা বলবো।

সকাল ৮টা ২০ মিনিটে টিএসসি কেন্দ্রে আসেন বাগছাসের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, ভোট শুরু হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট চলছে। সুষ্ঠ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আশা করি, তারা আমাদেরকে বিজয়ী করবেন।

এ নির্বাচন সামনে রেখে গত রোববার আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। দুই হাজার পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বিজিবি সদস্যরাও এ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছেন। টিএসসিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাঁজোয়া যান ও জলকামান, খোলা হয়েছে পুলিশের অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম।

ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভোটের পরদিন বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বহাল থাকবে। যদি প্রয়োজন হয় সময় আরো বাড়ানো হবে। তবে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আশঙ্কা তিনি দেখছেন না।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনও। তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। কোনো ধরনের শঙ্কা আমরা দেখছি না। ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে। ৪টার সময়ও কেউ ভোটকেন্দ্রের সামনে অবস্থান করলে তাদেরও সুযোগ দেওয়া হবে।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী এই শিক্ষক বলেন, এবারের নির্বাচন হবে একটি মডেল নির্বাচন। বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এটি অনুসরণ করতে পারে, এমন দৃষ্টান্ত ঢাবি শিক্ষার্থীরা তৈরি করবে।

শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি আবাসিক ও অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীকে কেন্দ্রে আসার অনুরোধ করেছেন। বলেছেন, আমরা সকল অংশীজনের সহযোগিতা চাই। যেন আমরা সুষ্ঠুভাবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি।

জাতীয় রাজনীতিতে কেমন প্রভাব: নতুন বাস্তবতায় আয়োজিত ডাকসু ভোট সাড়ে পাঁচ মাস পর হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের বিষয়েও ধারণা দেবে বলে মনে করছেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ। ফেব্রুয়ারিতে যে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে, তার আগে এ ডাকসু নির্বাচনকে ‘মহড়া’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলছেন, এই নির্বাচনে তো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের প্যানেলও আছে। তাই এ নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে একটা ধারণাও উঠে আসবে।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ডাকসু নির্বাচনতো কয়েক বছর পরে হচ্ছে। এজন্য সবার আগ্রহটাও বেশি। দ্বিতীয়ত চব্বিশের অভ্যুথানের পর এবার একটু ভিন্ন পরিস্থিতিতে ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। ফলে কী হয়- না হয় তা নিয়ে অনেকের কৌতুহল আছে। জাতীয় নির্বাচনে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থা কেমন। এসব জায়গা থেকে চিন্তা করলে ডাকসু নির্বাচন আমাদের রাজনীতিতেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের স্বচ্ছতা-নিরপেক্ষতা বজায় থাকাটাও জরুরি।

এ নির্বাচন কতটা স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ হবে বলে মনে করেন- এমন প্রশ্নে মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, আগে থেকে বলা মুশকিল। তবে ’৭৩ এর নির্বাচনের মতো ব্যালট ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেই আশা করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান অবশ্য ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনকে মেলাতে চান না। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের নানান ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এজন্য ডাকসু নির্বাচন নিয়েও সারা দেশের মানুষের একটা আগ্রহ আছে। তবে এই নির্বাচন থেকে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে বড় রকম প্রভাব তৈরি হবে বলে আমি মনে করি না। এটা বিশ্ববিদ্যালিয়ের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব একটা নির্বাচন। কোনো কিছুতে আগ্রহ থাকা, আর কোনো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হওয়া এক বিষয় নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ডাকসু অনেক বছর ধরেইতো অনিয়মিত। ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে, এজন্যই সবাই হয়তো একটু বেশিই আগ্রহী হয়ে আছেন।

এবারের ডাকসু নির্বাচন ‘স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ’ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে বলেই আশা করছেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন। ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষে ডাকসুতে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন মুশতাক। তিনি মনে করেন, ডাকসুতে যারাই বিজয়ী হবেন, তারা যেন ক্ষমতাসীনদের চ্যালেঞ্জ করা বা প্রশ্ন করার জায়গায় থাকেন।

নির্বাচনের পরিবেশ তো এখন পর্যন্ত ভালোই মনে হচ্ছে। এই নির্বাচন থেকে আমাদের জাতীয় রাজনীতির অনেকে শিক্ষা নেবেন কিনা, সেটাও দেখার বিষয়। আমি আশা করি নির্বাচন স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক ধারায় হবে এবং সবাই ফলাফল মেনে নিয়ে গণতান্ত্রিক আচরণ করবেন।

এ নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে-এ প্রশ্নে মুশতাক হোসেন বলেন, এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা বিজয়ী সবাই যে পরে জাতীয় নির্বাচনেও ভালো করবেন- সেটা সব সময় হয় না। তবে ছাত্রদের মধ্যে যারা ডাকসুর নেতৃত্বে আসবেন, তারা যেন ক্ষমতাসীন সরকার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। ডাকসুতে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা বর্তমান সরকার এবং আগামীতেও যে সরকারই বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে, তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করা এবং ক্ষমতা কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করার সক্ষমতা রাখবে; আমি এমনটাই আশা করি।

এ নির্বাচনে কারা জিতবে, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনার উদাহারণ টেনে অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন বলেন, ডাকসু আমাদের জাতীয় রাজনীতিতেও নানাভাবে প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তো একটা প্রভাব ফেলবেই। এখন রাজনৈতিক সরকার নেই। সামনের রাজনীতি কোন পথে যাবে, তারও কিছুটা ধারণা হয়তো পাওয়া যাবে এই নির্বাচন থেকে। অতীতের মতোই এবার নির্বাচনকে ঘিরে ‘নারী বিদ্বেষ’, ‘বুলিং’ এর ঘটনাও ঘটছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই জায়গাটায় আগের মতোই আছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি।

কার প্রতিদ্বন্দ্বী কে: এবার ডাকসু ভোটে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্যানেল অংশ নিচ্ছে; এর বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন প্রার্থীদের আরেকটি অংশ।

নিষিদ্ধ-ঘোষিত ছাত্রলীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদভুক্ত সংগঠনগুলোর অনুপস্থিতিতে এবার ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে তাদের বিরোধীদের মধ্যে; যারা গত বছর শেখ হাসিনার সরকার পতন আন্দোলনে যারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।

ভোটে রয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জুলাই আন্দোলনের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), সাতটি বাম ছাত্র সংগঠনের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, জুলাই আন্দোলনের নেত্রী উমামা ফাতেমার ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’, ছাত্রশিবির, তিন বাম সংগঠনের ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্তত ১০টি প্যানেল।

জুলাই অভ্যুত্থানকে ভাবনায় রেখে প্যানেলগুলো প্রার্থী বাছাইয়ে ওই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে নিয়েছে। এমন বাস্তবতায় সংগঠনের জ্যেষ্ঠদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের প্রধান তিন পদ ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থী করেছে ছাত্রদল। জুলাই আন্দোলনে তাদের সক্রিয় ভূমিকাও বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

ভিপি পদে মনোনীত আবিদুল ইসলাম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম সম্প্রতি ঘোষিত কবি জসীম উদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আর এজিএস পদের তানভীর আল হাদী মায়েদ বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।

জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠিত বাগছাসের ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুল কাদের ও জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজমুদার ওই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারিতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। এ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী আশরেফা খাতুনও জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। এখন তিনি বাগছাসের মুখপাত্র।

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে বিভক্তির জেরে বাগছাস থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন অনেকে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে জিএস পদে ভোটে নেমে পদ খুইয়েছেন এনসিপি নেতা মাহিন সরকার। তবে পরে বাকেরকে সমর্থন দিয়ে মাহিন ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ালেও বিভিন্ন পদে এখনও স্বতন্ত্র হিসেবে রয়েছেন বেশ কয়েকজন।

সাতটি বাম ছাত্র সংগঠন মনোনীত ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ তাদের ভিপি প্রার্থী করেছে শেখ তাসনীম আফরোজ ইমিকে; জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা এই নেত্রী ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে শামসুন নাহার হলের ভিপি ছিলেন।

প্রতিরোধ পর্ষদ তাদের জিএস প্রার্থী করেছে ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে। আর এজিএস পদে প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। জুলাই আন্দোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলনে তাদের ভূমিকার কথা আলোচনায় আছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের থেকে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামে প্যানেল গড়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এক সময় ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব ছিলেন তিনি। উমামার প্যানেলে জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি। ২০১৯ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মাস্টার দা সূর্যসেন হলের সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন তিনি। সাংবাদিকতার সূত্রে ক্যাম্পাসে পরিচিতির পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন আল সাদী। জুলাইয়ে সরকার পতন আন্দোলনের আগে কোটা পুনর্বহাল করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে যে দুই ছাত্র আপিল করেছিলেন, তাদের একজন ছিলেন তিনি। উমামার প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহেদ আহমদ পাঠচক্রের প্ল্যাটফর্ম ‘গুরুবার আড্ডা’র সংগঠক।

জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা আবু সাদিক কায়েম যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি, তা জানা ছিল না আন্দোলনের সংগঠকদের অনেকের কাছেও। পরে তার পরিচয় প্রকাশ্যে এলে হতবাক হন অনেকে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিককে ডাকসুতে ভিপি প্রার্থী করেছে ছাত্রশিবির।

জিএস পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী এস এম ফরহাদ এখন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। জসীম উদ্দীন হল ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ আমলে গোপনে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালানো ছাত্রশিবির নেতা ফরহাদের ছাত্রলীগে নাম লেখানোর ঘটনা গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। এক সময় সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট শাখার ছাত্রলীগের সম্পাদক পদধারী হিসেবে সোশাল মিডিয়ায় তার নামের ছবি ঘুরলেও তিনি সেটা অস্বীকার করে আসছেন।

ছাত্রশিবির মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক।

‘সুন্দর বাচনভঙ্গি’ ও ভিন্নধর্মী ইশতেহার দিয়ে এবার ভোটের মাঠে আলোচনা তৈরি করেছেন ভিপি পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী; থাকেন বিজয় একাত্তর হলে। অতীতে ছাত্রলীগ নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদভুক্ত সংগঠন জাসদ ছাত্রলীগের একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে দেখা গেছে তাকে।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ডাকসু ভোটে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ এবার ভিপি প্রার্থী করেছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে। জিএস হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিনকে ও এজিএস পদে ছাত্র অধিকারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে সংগঠনটি।

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের একাংশ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল-বাংলাদেশ জাসদ) নিয়ে ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল ১৩ জন প্রার্থী দিতে পেরেছে। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নাইম হাসান হৃদয় বিসিএল-জাসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি। ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক এনামুল হাসান অনয় এই প্যানেলের জিএস এবং ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব অদিতি ইসলাম এজিএস প্রার্থী।

সানা/আপ্র/০৯/০৯/২০২৫

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভিন্ন বাস্তবতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভোট উৎসব

আপডেট সময় : ১০:১৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ২৪-এর জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভিন্ন এক বাস্তবতায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছয় বছর পর আয়োজিত ডাকসু ও হল সংসদের এই নির্বাচনে নিজেদের রায় দিচ্ছেন প্রায় চল্লিশ হাজার শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়েছে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৮১০টি বুথে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।

ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। অন্তত ১০টি প্যানেলের বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবেও লড়ছেন অনেকে।

নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন।
পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ জন; ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার
ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী মোট ৪৭১ জন।
প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি।
১৮টি হলে এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী।

এমন এক সময়ে এই নির্বাচন হচ্ছে, যখন ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্য নেই; ক্ষমতাসীন দলের সংগঠনের দাপটও নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি অনেকটাই নজিরবিহীন। ফলে এককভাবে কোনো প্রার্থী বা প্যানেলকে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রাখছেন না ভোটাররা।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনার মধ্যে ডাকসুর এই ভোট নিয়েও সারা দেশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে।

রাজনীতি বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, এবারের ডাকসু নির্বাচন যে পরিস্থিতিতে হচ্ছে, তাতে দুটো দিক আলাদাভাবে বলা যায়। এক হলো- ছাত্রশিবির সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যদিও তারা শিবিরের ব্যানার নিয়ে নির্বাচন করছে না। অন্য নামে প্যানেল করেছে। শিবিরের সক্রিয় হওয়াটা নতুন অভিজ্ঞতা। আমার ২৫ বছরের অভিজ্ঞতায় শিবিরকে কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত সক্রিয় দেখিনি। তিনি বলেন, আরেকটি দিক হলো- সরাসরি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের একক প্রভাব নেই। যদিও এনসিপির ছাত্র সংগঠন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এনসিপিকে কেউ কেউ ‘কিংস পার্টিও’ মনে করছে।

আর ছাত্রদল বা অন্য রাজনৈতিক সংগঠনও আছে। বামপন্থিরা ভাগ হয়ে নির্বাচন করছে। ফলে একক কোনো দলের প্রভাব এবার দেখা যাচ্ছে না। এককভাবে কোনো ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব না দেখা গেলেও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক প্রভাব আছে।

নির্বাচনে নতুনত্ব এনে এবার ভোটকেন্দ্রগুলোকে আবাসিক হলের বাইরে এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ; নেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের সামনে ব্যালট-বাক্স সিলগালা আর ভোটগণনা এলইডি স্ক্রিনে প্রদর্শনের উদ্যোগ। আগের মতো এবারও অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন বা ওএমআর শিটের ব্যালটে ভোটগ্রহণ করা হবে ডাকসু ও হল সংসদের। ব্যালটে থাকবে, ব্যালট নম্বর, প্রার্থীর নাম এবং ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দেওয়ার জায়গা।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধতা আছে, এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ব্রেইল ব্যালট পেপারের ব্যবস্থা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা চাইলে অন্যের সহায়তায় ওএমআর ব্যালটেও ভোট দিতে পারবেন।

সকাল ৮টা বাজার আগে থেকেই টিএসসি কেন্দ্রের সামনে দেখা যায় ভোট দেওয়ার জন্য দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছিলেন। তাদের একজন সুমাইয়া জাহান একটি সংবাদসংস্থাকে বলেন, সবার আগে ভোট দেবো- এই আশায় সকাল সকালই এসেছিলাম। এসে দেখি আমার আগেই আরো অনেকে চলে আসছে।

পৌনে ৮টায় সাংবাদিকদের সামনে ভোটের বাক্স সিলগালা করা হয়। পরে ৮টা ৭ মিনিট থেকে এই কেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। এরপর ৮টা ১০ মিনিট থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ।

টিএসসি কেন্দ্রের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেন, এখন তো মাত্র ভোটগ্রহণ শুরু করলাম। এখনই কোনো মন্তব্য করবো না। কিছুক্ষণ পরে কথা বলবো।

সকাল ৮টা ২০ মিনিটে টিএসসি কেন্দ্রে আসেন বাগছাসের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, ভোট শুরু হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট চলছে। সুষ্ঠ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আশা করি, তারা আমাদেরকে বিজয়ী করবেন।

এ নির্বাচন সামনে রেখে গত রোববার আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। দুই হাজার পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বিজিবি সদস্যরাও এ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছেন। টিএসসিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাঁজোয়া যান ও জলকামান, খোলা হয়েছে পুলিশের অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম।

ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভোটের পরদিন বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বহাল থাকবে। যদি প্রয়োজন হয় সময় আরো বাড়ানো হবে। তবে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আশঙ্কা তিনি দেখছেন না।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনও। তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। কোনো ধরনের শঙ্কা আমরা দেখছি না। ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে। ৪টার সময়ও কেউ ভোটকেন্দ্রের সামনে অবস্থান করলে তাদেরও সুযোগ দেওয়া হবে।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী এই শিক্ষক বলেন, এবারের নির্বাচন হবে একটি মডেল নির্বাচন। বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এটি অনুসরণ করতে পারে, এমন দৃষ্টান্ত ঢাবি শিক্ষার্থীরা তৈরি করবে।

শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি আবাসিক ও অনাবাসিক সব শিক্ষার্থীকে কেন্দ্রে আসার অনুরোধ করেছেন। বলেছেন, আমরা সকল অংশীজনের সহযোগিতা চাই। যেন আমরা সুষ্ঠুভাবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি।

জাতীয় রাজনীতিতে কেমন প্রভাব: নতুন বাস্তবতায় আয়োজিত ডাকসু ভোট সাড়ে পাঁচ মাস পর হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের বিষয়েও ধারণা দেবে বলে মনে করছেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ। ফেব্রুয়ারিতে যে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে, তার আগে এ ডাকসু নির্বাচনকে ‘মহড়া’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলছেন, এই নির্বাচনে তো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের প্যানেলও আছে। তাই এ নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে একটা ধারণাও উঠে আসবে।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ডাকসু নির্বাচনতো কয়েক বছর পরে হচ্ছে। এজন্য সবার আগ্রহটাও বেশি। দ্বিতীয়ত চব্বিশের অভ্যুথানের পর এবার একটু ভিন্ন পরিস্থিতিতে ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। ফলে কী হয়- না হয় তা নিয়ে অনেকের কৌতুহল আছে। জাতীয় নির্বাচনে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থা কেমন। এসব জায়গা থেকে চিন্তা করলে ডাকসু নির্বাচন আমাদের রাজনীতিতেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের স্বচ্ছতা-নিরপেক্ষতা বজায় থাকাটাও জরুরি।

এ নির্বাচন কতটা স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ হবে বলে মনে করেন- এমন প্রশ্নে মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, আগে থেকে বলা মুশকিল। তবে ’৭৩ এর নির্বাচনের মতো ব্যালট ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেই আশা করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান অবশ্য ডাকসু নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনকে মেলাতে চান না। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের নানান ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এজন্য ডাকসু নির্বাচন নিয়েও সারা দেশের মানুষের একটা আগ্রহ আছে। তবে এই নির্বাচন থেকে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে বড় রকম প্রভাব তৈরি হবে বলে আমি মনে করি না। এটা বিশ্ববিদ্যালিয়ের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব একটা নির্বাচন। কোনো কিছুতে আগ্রহ থাকা, আর কোনো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হওয়া এক বিষয় নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ডাকসু অনেক বছর ধরেইতো অনিয়মিত। ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে, এজন্যই সবাই হয়তো একটু বেশিই আগ্রহী হয়ে আছেন।

এবারের ডাকসু নির্বাচন ‘স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ’ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে বলেই আশা করছেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন। ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষে ডাকসুতে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন মুশতাক। তিনি মনে করেন, ডাকসুতে যারাই বিজয়ী হবেন, তারা যেন ক্ষমতাসীনদের চ্যালেঞ্জ করা বা প্রশ্ন করার জায়গায় থাকেন।

নির্বাচনের পরিবেশ তো এখন পর্যন্ত ভালোই মনে হচ্ছে। এই নির্বাচন থেকে আমাদের জাতীয় রাজনীতির অনেকে শিক্ষা নেবেন কিনা, সেটাও দেখার বিষয়। আমি আশা করি নির্বাচন স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক ধারায় হবে এবং সবাই ফলাফল মেনে নিয়ে গণতান্ত্রিক আচরণ করবেন।

এ নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে-এ প্রশ্নে মুশতাক হোসেন বলেন, এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা বিজয়ী সবাই যে পরে জাতীয় নির্বাচনেও ভালো করবেন- সেটা সব সময় হয় না। তবে ছাত্রদের মধ্যে যারা ডাকসুর নেতৃত্বে আসবেন, তারা যেন ক্ষমতাসীন সরকার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। ডাকসুতে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা বর্তমান সরকার এবং আগামীতেও যে সরকারই বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে, তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করা এবং ক্ষমতা কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করার সক্ষমতা রাখবে; আমি এমনটাই আশা করি।

এ নির্বাচনে কারা জিতবে, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনার উদাহারণ টেনে অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন বলেন, ডাকসু আমাদের জাতীয় রাজনীতিতেও নানাভাবে প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তো একটা প্রভাব ফেলবেই। এখন রাজনৈতিক সরকার নেই। সামনের রাজনীতি কোন পথে যাবে, তারও কিছুটা ধারণা হয়তো পাওয়া যাবে এই নির্বাচন থেকে। অতীতের মতোই এবার নির্বাচনকে ঘিরে ‘নারী বিদ্বেষ’, ‘বুলিং’ এর ঘটনাও ঘটছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই জায়গাটায় আগের মতোই আছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি।

কার প্রতিদ্বন্দ্বী কে: এবার ডাকসু ভোটে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্যানেল অংশ নিচ্ছে; এর বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন প্রার্থীদের আরেকটি অংশ।

নিষিদ্ধ-ঘোষিত ছাত্রলীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদভুক্ত সংগঠনগুলোর অনুপস্থিতিতে এবার ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে তাদের বিরোধীদের মধ্যে; যারা গত বছর শেখ হাসিনার সরকার পতন আন্দোলনে যারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।

ভোটে রয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জুলাই আন্দোলনের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), সাতটি বাম ছাত্র সংগঠনের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, জুলাই আন্দোলনের নেত্রী উমামা ফাতেমার ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’, ছাত্রশিবির, তিন বাম সংগঠনের ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্তত ১০টি প্যানেল।

জুলাই অভ্যুত্থানকে ভাবনায় রেখে প্যানেলগুলো প্রার্থী বাছাইয়ে ওই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে নিয়েছে। এমন বাস্তবতায় সংগঠনের জ্যেষ্ঠদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের প্রধান তিন পদ ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থী করেছে ছাত্রদল। জুলাই আন্দোলনে তাদের সক্রিয় ভূমিকাও বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

ভিপি পদে মনোনীত আবিদুল ইসলাম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম সম্প্রতি ঘোষিত কবি জসীম উদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আর এজিএস পদের তানভীর আল হাদী মায়েদ বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।

জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠিত বাগছাসের ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুল কাদের ও জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজমুদার ওই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারিতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। এ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী আশরেফা খাতুনও জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। এখন তিনি বাগছাসের মুখপাত্র।

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে বিভক্তির জেরে বাগছাস থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন অনেকে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে জিএস পদে ভোটে নেমে পদ খুইয়েছেন এনসিপি নেতা মাহিন সরকার। তবে পরে বাকেরকে সমর্থন দিয়ে মাহিন ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ালেও বিভিন্ন পদে এখনও স্বতন্ত্র হিসেবে রয়েছেন বেশ কয়েকজন।

সাতটি বাম ছাত্র সংগঠন মনোনীত ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ তাদের ভিপি প্রার্থী করেছে শেখ তাসনীম আফরোজ ইমিকে; জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা এই নেত্রী ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে শামসুন নাহার হলের ভিপি ছিলেন।

প্রতিরোধ পর্ষদ তাদের জিএস প্রার্থী করেছে ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে। আর এজিএস পদে প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। জুলাই আন্দোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলনে তাদের ভূমিকার কথা আলোচনায় আছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের থেকে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামে প্যানেল গড়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এক সময় ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব ছিলেন তিনি। উমামার প্যানেলে জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি। ২০১৯ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মাস্টার দা সূর্যসেন হলের সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন তিনি। সাংবাদিকতার সূত্রে ক্যাম্পাসে পরিচিতির পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন আল সাদী। জুলাইয়ে সরকার পতন আন্দোলনের আগে কোটা পুনর্বহাল করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে যে দুই ছাত্র আপিল করেছিলেন, তাদের একজন ছিলেন তিনি। উমামার প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহেদ আহমদ পাঠচক্রের প্ল্যাটফর্ম ‘গুরুবার আড্ডা’র সংগঠক।

জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা আবু সাদিক কায়েম যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি, তা জানা ছিল না আন্দোলনের সংগঠকদের অনেকের কাছেও। পরে তার পরিচয় প্রকাশ্যে এলে হতবাক হন অনেকে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিককে ডাকসুতে ভিপি প্রার্থী করেছে ছাত্রশিবির।

জিএস পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী এস এম ফরহাদ এখন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। জসীম উদ্দীন হল ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ আমলে গোপনে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালানো ছাত্রশিবির নেতা ফরহাদের ছাত্রলীগে নাম লেখানোর ঘটনা গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। এক সময় সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট শাখার ছাত্রলীগের সম্পাদক পদধারী হিসেবে সোশাল মিডিয়ায় তার নামের ছবি ঘুরলেও তিনি সেটা অস্বীকার করে আসছেন।

ছাত্রশিবির মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক।

‘সুন্দর বাচনভঙ্গি’ ও ভিন্নধর্মী ইশতেহার দিয়ে এবার ভোটের মাঠে আলোচনা তৈরি করেছেন ভিপি পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী; থাকেন বিজয় একাত্তর হলে। অতীতে ছাত্রলীগ নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদভুক্ত সংগঠন জাসদ ছাত্রলীগের একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে দেখা গেছে তাকে।

২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ডাকসু ভোটে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ এবার ভিপি প্রার্থী করেছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে। জিএস হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিনকে ও এজিএস পদে ছাত্র অধিকারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে সংগঠনটি।

ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের একাংশ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল-বাংলাদেশ জাসদ) নিয়ে ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল ১৩ জন প্রার্থী দিতে পেরেছে। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নাইম হাসান হৃদয় বিসিএল-জাসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি। ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক এনামুল হাসান অনয় এই প্যানেলের জিএস এবং ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব অদিতি ইসলাম এজিএস প্রার্থী।

সানা/আপ্র/০৯/০৯/২০২৫