ঢাকা ০১:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত

  • আপডেট সময় : ০৭:২৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৬৬ বার পড়া হয়েছে

প্রতীকী ছবি

প্রত্যাশা ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতি ১০০ মৃত্যুর মধ্যে প্রায় একটি মৃত্যুই আত্মহত্যাজনিত।  ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭ লাখ ২৭ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে। ডব্লিউএইচও’র অ-সংক্রামক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেভোরা কেস্টেল জানিয়েছেন, প্রতিটি আত্মহত্যার বিপরীতে প্রায় ২০টি আত্মহত্যার চেষ্টা ঘটে।

তিনি আরও বলেন, এসব মৃত্যু শুধুমাত্র একজন জীবন শেষ করে না, বরং অসংখ্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীকে গভীর মানসিক কষ্টের মধ্যে ফেলে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণই এই সংকট মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী নারীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ ছিল আত্মহত্যা, আর একই বয়সী পুরুষদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ।

২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স-সমন্বিত আত্মহত্যার হার বিশ্বব্যাপী ৩৫ শতাংশ কমলেও নির্ধারিত লক্ষ্য থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে বিশ্ব। ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে আত্মহত্যার হার এক-তৃতীয়াংশ কমানোর যে লক্ষ্য ছিল, তা বর্তমান প্রবণতায় মাত্র ১২ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।

অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে ২০০০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১৭ শতাংশ। অন্য সব অঞ্চলে কিছুটা কমলেও প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আত্মহত্যা ঘটছে নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে, যেখানে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ বসবাস করে।

ডব্লিউএইচও সতর্ক করে জানিয়েছে, আত্মহত্যার হার ধীরে ধীরে কমলেও মানসিক ব্যাধি, বিশেষ করে উদ্বেগ ও হতাশার প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার বৃদ্ধির চেয়েও দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে ১০০ কোটির বেশি মানুষ এসব ব্যাধিতে আক্রান্ত।

সংস্থাটি বলছে, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট আরও গভীর হচ্ছে। এ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান দুটি কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব এবং কোভিড-১৯ মহামারি উল্লেখ করেছেন ডব্লিউএইচও’র মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মার্ক ভ্যান ওমেরেন।

সংস্থাটি উদ্বেগ জানিয়ে বলছে, বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র দুই শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যয় হচ্ছে, যা পরিবর্তন হয়নি। হতাশায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র নয় শতাংশ চিকিৎসা পায়।

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পরিবর্তন করা এখন বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।

ওআ/আপ্র/০২/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত

আপডেট সময় : ০৭:২৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতি ১০০ মৃত্যুর মধ্যে প্রায় একটি মৃত্যুই আত্মহত্যাজনিত।  ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭ লাখ ২৭ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে। ডব্লিউএইচও’র অ-সংক্রামক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেভোরা কেস্টেল জানিয়েছেন, প্রতিটি আত্মহত্যার বিপরীতে প্রায় ২০টি আত্মহত্যার চেষ্টা ঘটে।

তিনি আরও বলেন, এসব মৃত্যু শুধুমাত্র একজন জীবন শেষ করে না, বরং অসংখ্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীকে গভীর মানসিক কষ্টের মধ্যে ফেলে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণই এই সংকট মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী নারীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ ছিল আত্মহত্যা, আর একই বয়সী পুরুষদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ।

২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স-সমন্বিত আত্মহত্যার হার বিশ্বব্যাপী ৩৫ শতাংশ কমলেও নির্ধারিত লক্ষ্য থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে বিশ্ব। ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে আত্মহত্যার হার এক-তৃতীয়াংশ কমানোর যে লক্ষ্য ছিল, তা বর্তমান প্রবণতায় মাত্র ১২ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।

অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে ২০০০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১৭ শতাংশ। অন্য সব অঞ্চলে কিছুটা কমলেও প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আত্মহত্যা ঘটছে নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে, যেখানে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ বসবাস করে।

ডব্লিউএইচও সতর্ক করে জানিয়েছে, আত্মহত্যার হার ধীরে ধীরে কমলেও মানসিক ব্যাধি, বিশেষ করে উদ্বেগ ও হতাশার প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার বৃদ্ধির চেয়েও দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে ১০০ কোটির বেশি মানুষ এসব ব্যাধিতে আক্রান্ত।

সংস্থাটি বলছে, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট আরও গভীর হচ্ছে। এ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান দুটি কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব এবং কোভিড-১৯ মহামারি উল্লেখ করেছেন ডব্লিউএইচও’র মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মার্ক ভ্যান ওমেরেন।

সংস্থাটি উদ্বেগ জানিয়ে বলছে, বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র দুই শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যয় হচ্ছে, যা পরিবর্তন হয়নি। হতাশায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র নয় শতাংশ চিকিৎসা পায়।

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পরিবর্তন করা এখন বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।

ওআ/আপ্র/০২/০৯/২০২৫