নিজস্ব প্রতিবেদক: জলবায়ু পরিবর্তন শুধু পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি এখন একটি গভীর মানবিক সংকটে রূপ নিয়েছে। জলবায়ু সংকট বিশেষত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নারী, কিশোরী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি তৈরি করছে। খুলনা ও সাতক্ষীরার মতো জলবায়ু প্রভাবিত এলাকাগুলোতে স্কোপিং স্টাডিভিত্তিক পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) শিশু অধিকার, বিশেষত মেয়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
গবেষণার তথ্য বলছে, প্রজনন স্বাস্থ্য, ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি) এবং জীবিকার ওপর জলবায়ু দুর্যোগের বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে। কর্মশালায় গবেষণার মূল তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সমন্বিত আলোচনা হয়।
কর্মশালায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ বলেন, এ গবেষণা আমাদের দেখিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন শুধু পরিবেশগত নয়—এটি স্বাস্থ্য, অধিকার ও জীবিকার সংকটও। নারী, তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আশরাফি আহমদ বলেন, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও পরিবার পরিকল্পনা কাঠামোকে এখন জলবায়ু ও জেন্ডার সংবেদনশীল করে গড়ে তোলা জরুরি।
কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য, একাডেমিয়া ও যুব উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনা হয়। একই সঙ্গে উদ্বোধন করা হয় প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের নতুন উদ্যোগ ‘দুর্বার’, যা জলবায়ু ন্যায়বিচার ও জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করবে।
সুইডেন দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের উপপ্রধান নাইওকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রম বলেন, এ গবেষণার মাধ্যমে আমরা স্থানীয় সরকার ও তরুণদের সক্ষমতা বাড়িয়ে কার্যকর সমাধানের দিকে এগোতে পারি।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল আশা করছে, গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যৎ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বিশেষত জলবায়ু সংবেদনশীল অঞ্চলে সমন্বিত, জেন্ডার রূপান্তরমূলক ও সহনশীল হস্তক্ষেপ গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।