প্রত্যাশা ডেস্ক: নোবেল শান্তি পুরস্কারের স্বপ্নে বিভোর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনসমর্থন ক্রমেই কমছে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি ছয় মাসে ছয়টি যুদ্ধ শেষ করেছেন। তবে মার্কিন নাগরিকদের বড় অংশই তার কূটনৈতিক দক্ষতা নিয়ে সন্তুষ্ট নন।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতিতে নিট অনুমোদন হার ছিল ২। কিন্তু তা ধারাবাহিকভাবে কমে এখন দাঁড়িয়েছে মাইনাস ১৪-তে। মাত্র ৩২ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন, আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে কিছুটা হলেও যুদ্ধ সমাপ্তির দিকে অগ্রগতি হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত মোকাবিলায় তার অনুমোদন হার বর্তমানে মাইনাস ১০।
২০২৮ সালে ট্রাম্প আর নির্বাচনে লড়তে পারবেন না, তবে জনমত তার দ্বিতীয় মেয়াদকে প্রভাবিত করছে স্পষ্টভাবে। ইউগভের নিয়মিত জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র দুই মাসের মধ্যেই ট্রাম্পের সামগ্রিক অনুমোদন হার শূন্যের নিচে নেমে যায় এবং তারপর থেকেই তা ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে তার সামগ্রিক নিট অনুমোদন হার মাইনাস ১৫।
দ্বিতীয় মেয়াদে পুনর্র্নিবাচিত হওয়ার সময় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, জনগণের আয় আকাশচুম্বী হবে, মূল্যস্ফীতি শূন্যে নেমে আসবে, চাকরি ফিরে আসবে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি আগে কখনো না হওয়া সমৃদ্ধি ভোগ করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটাররা হতাশ। অর্থনীতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তার অনুমোদন হার ইতিবাচক থেকে এখন ব্যাপকভাবে নেতিবাচকে নেমে গেছে। অভিবাসন নীতিতেও অসন্তোষ বেড়েছে।
ইউগভ ও দ্য ইকোনমিস্টের যৌথ তথ্য বিশ্লেষণ বলছে, ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত অঙ্গরাজ্যগুলোতে ট্রাম্পের অনুমোদন সর্বনিম্ন এবং রিপাবলিকান অধ্যুষিত রাজ্যগুলোতে সর্বোচ্চ হলেও তার প্রতি অসন্তোষ এখন রিপাবলিকান অঞ্চলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে। এটি আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য শঙ্কার কারণ হতে পারে।
জনমত জরিপে দেখা যায়, শ্বেতাঙ্গ ও পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন তুলনামূলক বেশি। অন্যদিকে তরুণ, উচ্চশিক্ষিত এবং জাতিগত সংখ্যালঘুরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বেশি অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত ভোটারদের মধ্যেও ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন কমেছে।
মার্কিন রাজনীতিতে রিপাবলিকানদের জন্য অভিবাসন, কর ও সরকারি ব্যয় মূল ইস্যু হলেও ডেমোক্র্যাট ভোটাররা স্বাস্থ্যসেবা ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। জনমতের ওঠানামা দেখাচ্ছে, অর্থনৈতিক মন্দা ও কূটনৈতিক অদক্ষতা ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকেও নেতিবাচকভাবে আঘাত করছে।