ঢাকা ০৭:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খুন

যেভাবে হত্যা করা হয় পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলকে

  • আপডেট সময় : ০৯:০৫:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • ১২৮ বার পড়া হয়েছে

দিদারুল ইসলাম -ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মিডটাউনে স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) একটি অফিস ভবনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ চারজন নিহত হন। চারজনের মধ্যে শুধুমাত্র দিদারুলের পরিচয়ই প্রকাশ করা হয়েছে।

বন্দুকধারী চারজনকে হত্যার পর নিজের বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ। নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এ ঘটনাকে ‘ঘৃন্য’ এবং ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ৪৪ তলা ভবনটিতে বন্দুকধারী হামলা চালানোর পর সেটিতে লকডাউন আরোপ করা হয়। ওই ঘটনার সময় ব্যস্ত নিউইয়র্কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কীভাবে হত্যা করা হয় দিদারুলকে: রক্তক্ষয়ী এ ঘটনা শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে। ওই সময় একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি নিউইয়র্কের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক পার্ক অ্যাভিনিউতে থামে। বন্দুকধারী গাড়ি থেকে একটি এম৪ রাইফেল নিয়ে নামেন। এরপর তিনি ‘৩৪৫ পার্ক অ্যাভ’ নামে ৪৪ তলা ভবনটিতে প্রবেশ করেন। ভবনটির লবিতে ঢুকেই ডান দিকে ঘুরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর বন্দুকধারী এক নারীকে গুলি করেন। তিনি একটি পিলারের পেছনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নারীকে গুলি করে লবি দিয়ে ‘গুলি করতে করতে’ হেঁটে যেতে থাকেন হামলাকারী। এরপর সিকিউরিটি ডেস্কে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করেন এই হামলাকারী। তখন সে লিফটের বোতামে চাপ দেয়। লবিতে তখন আরেক ব্যক্তিকে গুলি করে বন্দুকধারী।

হামলাকারী লিফট থেকে এক নারীকে নেমে যেতে দেয়। তাকে সে কোনো ধরনের ক্ষতি করেনি। এরপর লিফটে করে ৩৩ তলায় যান এ হত্যাকারী। সেখানে গিয়ে আরেক নারীকে গুলি করে নিজের বুকে গুলি চালান তিনি। পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ জানিয়েছেন, ৩৩ তলায় রুডিন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির অফিস অবস্থিত। যেটি ভবনটি পরিচালনা করত। বন্দুকধারী কেন ওই ভবনে হত্যাযজ্ঞ চালালো সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।

নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের বয়স ছিল ৩৬ বছর। তিনি বাংলাদেশি ইমিগ্রেন্ট ছিলেন। নিউইয়র্ক সিটি পুলিশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছিলেন তিনি। হামলার দিন তার ডিউটি ছিল ব্রঙ্কসের ৪৭ প্রিসেঙ্কটে। কিন্তু হামলার সময় তিনি ৩৪৫ পার্ক অ্যাভ ভবনে কাজ করছিলেন। দিদারুলের দুই সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী গর্ভবতী। তিনি তৃতীয় সন্তানের বাবা হতেন।

নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার দিদারুল সম্পর্কে বলেছেন, আমরা তাকে যে কাজ করতে বলেছিলাম তিনি সেই কাজ করছিলেন। তিনি নিজেকে ঝুঁকির পথে রাখেন। তিনি নিজেকে উৎস্বর্গ করেছেন। তাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করা হয়েছে। তিনি হিরো হিসেবে বেঁচে ছিলেন, মারাও গেছেন হিরো হিসেবে। ওই বন্দুকধারীর পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তার নাম শেন তামুরা। ২৭ বছর বয়সী এই হত্যাকারী লাস ভেগাসের বাসিন্দা। নেভাডা রাজ্যে তার অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। এছাড়া তার মানসিক সমস্যার রেকর্ডও রয়েছে। তবে মানসিক সমস্যার কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন কি না সেটি নিশ্চিত নয়। ন্যাক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। সর্বশেষ নিউইয়র্কে এসে মানুষ খুন করেছেন। সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

গণভোটে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব অন্তুর্ভুক্ত করার দাবি জামায়াতের

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খুন

যেভাবে হত্যা করা হয় পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলকে

আপডেট সময় : ০৯:০৫:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মিডটাউনে স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) একটি অফিস ভবনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ চারজন নিহত হন। চারজনের মধ্যে শুধুমাত্র দিদারুলের পরিচয়ই প্রকাশ করা হয়েছে।

বন্দুকধারী চারজনকে হত্যার পর নিজের বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ। নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এ ঘটনাকে ‘ঘৃন্য’ এবং ‘জঘন্য কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ৪৪ তলা ভবনটিতে বন্দুকধারী হামলা চালানোর পর সেটিতে লকডাউন আরোপ করা হয়। ওই ঘটনার সময় ব্যস্ত নিউইয়র্কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কীভাবে হত্যা করা হয় দিদারুলকে: রক্তক্ষয়ী এ ঘটনা শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে। ওই সময় একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি নিউইয়র্কের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক পার্ক অ্যাভিনিউতে থামে। বন্দুকধারী গাড়ি থেকে একটি এম৪ রাইফেল নিয়ে নামেন। এরপর তিনি ‘৩৪৫ পার্ক অ্যাভ’ নামে ৪৪ তলা ভবনটিতে প্রবেশ করেন। ভবনটির লবিতে ঢুকেই ডান দিকে ঘুরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর বন্দুকধারী এক নারীকে গুলি করেন। তিনি একটি পিলারের পেছনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নারীকে গুলি করে লবি দিয়ে ‘গুলি করতে করতে’ হেঁটে যেতে থাকেন হামলাকারী। এরপর সিকিউরিটি ডেস্কে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করেন এই হামলাকারী। তখন সে লিফটের বোতামে চাপ দেয়। লবিতে তখন আরেক ব্যক্তিকে গুলি করে বন্দুকধারী।

হামলাকারী লিফট থেকে এক নারীকে নেমে যেতে দেয়। তাকে সে কোনো ধরনের ক্ষতি করেনি। এরপর লিফটে করে ৩৩ তলায় যান এ হত্যাকারী। সেখানে গিয়ে আরেক নারীকে গুলি করে নিজের বুকে গুলি চালান তিনি। পুলিশ কমিশনার জেসিকা এস. টিশ জানিয়েছেন, ৩৩ তলায় রুডিন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির অফিস অবস্থিত। যেটি ভবনটি পরিচালনা করত। বন্দুকধারী কেন ওই ভবনে হত্যাযজ্ঞ চালালো সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।

নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের বয়স ছিল ৩৬ বছর। তিনি বাংলাদেশি ইমিগ্রেন্ট ছিলেন। নিউইয়র্ক সিটি পুলিশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছিলেন তিনি। হামলার দিন তার ডিউটি ছিল ব্রঙ্কসের ৪৭ প্রিসেঙ্কটে। কিন্তু হামলার সময় তিনি ৩৪৫ পার্ক অ্যাভ ভবনে কাজ করছিলেন। দিদারুলের দুই সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী গর্ভবতী। তিনি তৃতীয় সন্তানের বাবা হতেন।

নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার দিদারুল সম্পর্কে বলেছেন, আমরা তাকে যে কাজ করতে বলেছিলাম তিনি সেই কাজ করছিলেন। তিনি নিজেকে ঝুঁকির পথে রাখেন। তিনি নিজেকে উৎস্বর্গ করেছেন। তাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করা হয়েছে। তিনি হিরো হিসেবে বেঁচে ছিলেন, মারাও গেছেন হিরো হিসেবে। ওই বন্দুকধারীর পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তার নাম শেন তামুরা। ২৭ বছর বয়সী এই হত্যাকারী লাস ভেগাসের বাসিন্দা। নেভাডা রাজ্যে তার অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। এছাড়া তার মানসিক সমস্যার রেকর্ডও রয়েছে। তবে মানসিক সমস্যার কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন কি না সেটি নিশ্চিত নয়। ন্যাক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। সর্বশেষ নিউইয়র্কে এসে মানুষ খুন করেছেন। সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট