নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাকিন (১৪) নামের আরও এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। সে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১টা ৫ মিনিটের দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এ নিয়ে এ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৩ জনে। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাকিন নামের আরও একজন মারা গিয়েছে। তার শরীরে ৭০ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
মাকিনের বাবা মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, আমার দুই ছেলের মধ্যে ছোট মাকিন। আমাদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের গাছা এলাকায় জানাজার পর তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত বেড়ে ৩৩, হাসপাতালে ৫০ জন: রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ জনে। এ দুর্ঘটনায় রাজধানীর সাতটি হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫০ জন। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরাতে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১৫ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন (অজ্ঞাতনামা), এবং ইউনাইটেড হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। কারও মরদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়, আবার কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সর্বশেষ শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাকিন নামে এক শিক্ষার্থী। মাকিনের বাড়ি গাজীপুর জেলা সদরের কোনাপাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে। প্রেস উইং আরও জানায়, দুর্ঘটনায় প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এর মধ্যে অনেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫০ জন। এর মধ্যে ৪০ জনই আছেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। বাকিদের মধ্যে আটজন সিএমএইচে এবং একজন করে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাই সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় প্রতিষ্ঠানটির ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন বহু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। এ ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া: উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বাদ জুমা বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয় সুবিধাজনক সময়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। জুমার নামাজের পরে বায়তুল মোকাররমসহ অন্যান্য মসজিদে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়ায় করেন ইমামরা। এছাড়া এ দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের সুস্থতা কামনা করেন। শোকাহত পরিবারদের শোক সহ্য করার দোয়া করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সারাদেশের মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি ইস্যু করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়ালো। সবশেষ তথ্যানুযায়ী, আজ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় আইমান (১০) নামে এক শিক্ষার্থী এবং দুপুর একটার দিকে মাকিন (১৩) নামে এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিফেন্সিভ ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।























