ঢাকা ১২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই আমাদের প্রত্যাশা: নাহিদ ইসলাম

  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

রোববার দুপুরে রাঙামাটিতে এনসিপির পথসভায় বক্তব্য দেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম -ছবি সংগৃহীত

রাঙামাটি সংবাদদাতা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই আমাদের প্রত্যাশা। যেই বাংলাদেশে সব ধর্ম, জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায় আমরা একসঙ্গে সমান মর্যাদা নিয়ে সমনাগরিক হিসেবে বসবাস করতে পারব। সেই রকম একটি রাষ্ট্র আমরা চাই।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে রাঙামাটিতে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে নানাভাবে বিভাজিত করে রাখা হয়েছিল। এর অন্যতম শিকার পার্বত্য চট্টগ্রাম। নানা অশান্তি, নানা বিভাজন জিইয়ে রেখে অন্য একটি পক্ষ বারবার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা এই তৃতীয় কোনো পক্ষকে আর সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দেবো না। আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে আমরা নিজেরাই এর সমাধান করব। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ৭২-এর মুজিববাদী সংবিধানে সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিভেদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ইসলামের সঙ্গে অন্য ধর্মের বিভেদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। আমরা সব বিভেদের ঊর্ধ্বে গিয়ে সব জনগোষ্ঠীকে মর্যাদা দিয়ে একটি সংবিধান তৈরি করতে চাই।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও সহিংসতা নয়, বরং সমালোচনা গণতান্ত্রিকভাবে হতে হবে। আওয়ামী শাসনামলের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের উদাহরণ টেনে বলেন, দলে দলে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের কারণে জনজীবনে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেই রাজনীতি যেন আর ফিরে না আসে। সব রাজনৈতিক পক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, জনগণই নির্ধারণ করবে তারা কাদের পাশে থাকবে।
এদিন সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকবে, কথার লড়াই থাকবে, কিন্তু ভিন্নমত দমাতে গায়ে হাত তোলা, মঞ্চে আগুন দেওয়া, ব্যানার পুড়িয়ে দেওয়া ফ্যাসিবাদী আচরণ। আমরা আমাদের ভুলগুলো শুধরে নেবো, প্রবীণদের কথাও শুনবো, তবে কথায় কথায় আমাদের সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি, তিরষ্কার-এসব থেকে শেখার কিছু নেই। আগামীর বাংলাদেশে সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি গড়তে চাই। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ইনসাফের রাজনীতি কায়েম হোক। আমরা তরুণ প্রজন্ম ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে উঠে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা গড়তে জীবন দিতে প্রস্তুত। যেখানে সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও ভাষাভাষী মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে।

বান্দরবান নিয়ে মন্তব্যের জন্য সারজিসের দুঃখ প্রকাশ: বান্দরবান নিয়ে আগের এক বক্তব্যের জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে রাঙ্গামাটি থেকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বার্তায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, বান্দরবান নিয়ে কিছুদিন আগে একটি বক্তব্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দচয়ন হয়েছে সেটার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তিনি লেখেন, আমরা লড়াই করবো সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিয়ে; জুলাই পদযাত্রা থেকে এটাই আমাদের অঙ্গীকার। এর আগে ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে জুলাই পদযাত্রার একটি পথসভায় সারজিস বান্দরবানকে ‘শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পাঠানোর জায়গা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার এ মন্তব্যে বান্দরবানের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই আমাদের প্রত্যাশা: নাহিদ ইসলাম

আপডেট সময় : ০৯:৩০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

রাঙামাটি সংবাদদাতা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশই আমাদের প্রত্যাশা। যেই বাংলাদেশে সব ধর্ম, জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায় আমরা একসঙ্গে সমান মর্যাদা নিয়ে সমনাগরিক হিসেবে বসবাস করতে পারব। সেই রকম একটি রাষ্ট্র আমরা চাই।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে রাঙামাটিতে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে নানাভাবে বিভাজিত করে রাখা হয়েছিল। এর অন্যতম শিকার পার্বত্য চট্টগ্রাম। নানা অশান্তি, নানা বিভাজন জিইয়ে রেখে অন্য একটি পক্ষ বারবার সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা এই তৃতীয় কোনো পক্ষকে আর সুবিধা নেওয়ার সুযোগ দেবো না। আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে আমরা নিজেরাই এর সমাধান করব। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ৭২-এর মুজিববাদী সংবিধানে সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিভেদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ইসলামের সঙ্গে অন্য ধর্মের বিভেদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। আমরা সব বিভেদের ঊর্ধ্বে গিয়ে সব জনগোষ্ঠীকে মর্যাদা দিয়ে একটি সংবিধান তৈরি করতে চাই।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও সহিংসতা নয়, বরং সমালোচনা গণতান্ত্রিকভাবে হতে হবে। আওয়ামী শাসনামলের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের উদাহরণ টেনে বলেন, দলে দলে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের কারণে জনজীবনে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেই রাজনীতি যেন আর ফিরে না আসে। সব রাজনৈতিক পক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, জনগণই নির্ধারণ করবে তারা কাদের পাশে থাকবে।
এদিন সমাবেশে সারজিস আলম বলেন, রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকবে, কথার লড়াই থাকবে, কিন্তু ভিন্নমত দমাতে গায়ে হাত তোলা, মঞ্চে আগুন দেওয়া, ব্যানার পুড়িয়ে দেওয়া ফ্যাসিবাদী আচরণ। আমরা আমাদের ভুলগুলো শুধরে নেবো, প্রবীণদের কথাও শুনবো, তবে কথায় কথায় আমাদের সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি, তিরষ্কার-এসব থেকে শেখার কিছু নেই। আগামীর বাংলাদেশে সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি গড়তে চাই। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ইনসাফের রাজনীতি কায়েম হোক। আমরা তরুণ প্রজন্ম ভুল-ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে উঠে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা গড়তে জীবন দিতে প্রস্তুত। যেখানে সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও ভাষাভাষী মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে।

বান্দরবান নিয়ে মন্তব্যের জন্য সারজিসের দুঃখ প্রকাশ: বান্দরবান নিয়ে আগের এক বক্তব্যের জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে রাঙ্গামাটি থেকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বার্তায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, বান্দরবান নিয়ে কিছুদিন আগে একটি বক্তব্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দচয়ন হয়েছে সেটার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তিনি লেখেন, আমরা লড়াই করবো সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিয়ে; জুলাই পদযাত্রা থেকে এটাই আমাদের অঙ্গীকার। এর আগে ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে জুলাই পদযাত্রার একটি পথসভায় সারজিস বান্দরবানকে ‘শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পাঠানোর জায়গা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার এ মন্তব্যে বান্দরবানের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।