নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বতন্ত্র কাউন্সিলের দাবিতে আন্দোলনের জেরে ঢাকার সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে দুটি কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে বিইউএমএস এবং বিএএমএস ৩৬তম ব্যাচের ভর্তির শেষ দিন ছিল। প্রতি বছর ওই দুটি কোর্সে ২৫ জন করে ৫০ জন নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেন। স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠনের দাবিতে গত ১৪ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর আগে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় সোমবার ঢাকার মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনে সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান ও ক্লাস বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন ছিল নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির শেষ দিন। তবে শিক্ষার্থীদের বাধায় ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ফরহার রেজা সোমবার (১৪ জুলাই) বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আমরা যতক্ষণ সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না পাব, কাউন্সিল করার বিষয়ে নীতিমালা না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আমাদের এখানে ৩৫টি ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আগের ব্যাচের অনেকে পাস করে বের হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের কোনো ফিউচার নাই। আমাদের সিনিয়র ভাইয়েরা অনেকেই প্র্যাকটিস করতে পারছেন না। এ কারণে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হলে তাদের জীবনও অনিশ্চিয়তায় পড়বে। এ কারণে আমরা ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখছি।
সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক এবং ভর্তি কমিটির সদস্য মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, কাউন্সিল গঠনের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি শিক্ষকদেরও যৌক্তিক সমর্থন আছে। কাউন্সিলের বিষয়টা নিয়ে আমরা শিক্ষকরা একমত। প্রায় ৩৫ বছর হয়ে গেল আমাদের কাউন্সিল করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটা অস্থায়ী কমিটি আমাদের নিবন্ধন দিচ্ছে। এটা নিয়ে অনেক ঝামেলাও আছে। যখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় বা ম্যাজিস্ট্রেট রেইড করে তখন চিকিৎসকদের ধরে, জেল-জরিমানা করে। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে আমরা পেশাজীবীরা ভোগান্তির মধ্যে আছি।
১৯৮৯ সালে ঢাকার মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশনে বাংলাদেশে সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই উপমহাদেশে প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা চিকিৎসাবিদ্যা ধরে রাখা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে দক্ষ, বৈজ্ঞানিকভাবে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক তৈরি করার লক্ষ্যে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানকার শিক্ষার্থীরা ৫ বছরের ইউএমএস ও বিএএমএস কোর্স এবং এক বছর ইন্টার্নশিপ করেন। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ফ্যাকাল্টির অধিভুক্ত এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত।