ঢাকা ০১:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

মাস্কই হয়ে উঠতে পারেন রিপাবলিকানের জন্য হুমকি

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

মাস্কই হয়ে উঠতে পারেন রিপাবলিকানের জন্য হুমকি

বিদেশের খবর ডেস্ক: নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তার এ উদ্যোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সাবেক এ ঘনিষ্ঠ মিত্রের নতুন দল গঠনের বিষয়টিকে ট্রাম্প যতই হাস্যকর বলুন, হতাশ মাস্কই রিপাবলিকান দলের জন্য স্পষ্ট হুমকি হয়ে উঠতে পারেনÑ এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এ উদ্যোগ যে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের জন্য স্পষ্ট হুমকি হয়ে উঠতে পারে; সেটির পেছনে একটি বড় কারণ হলো, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এখন রিপাবলিকান দল সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা টিকিয়ে রেখেছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চকক্ষ সিনেটে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের আসনসংখ্যা যথাক্রমে ২২০-২১২ ও ৫৩-৪৫।

ট্রাম্প সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিমালায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা একটি বিল সই করেছেন। বিলটি বাজেট ঘাটতি অনেক বাড়িয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।

‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামের ওই বিলে ট্রাম্প স্বাক্ষর করার পর পরই ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন মাস্ক। ধনকুবের মাস্কের বিশাল এক অনুসারী গোষ্ঠী রয়েছে, বিশেষ করে মার্কিন কম বয়সি পুরুষদের কাছে দারুণ আকর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব তিনি। তারা মাস্ককে একজন ব্যতিক্রমী প্রতিভা ও তারকা হিসেবে দেখেন।

নতুন দলের নীতিগত দিক নিয়ে ইলন মাস্ক এখনো বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আগামী বছর কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের কয়েকটি আসন লক্ষ্যবস্তু করবেন; বিশেষ করে সেসব রিপাবলিকানের- যারা আর্থিক শৃঙ্খলা বা বাজেট নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলার পরও ট্রাম্পের বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ম্যাট শুমেকার বলেন, ইলন মাস্কের আমেরিকা পার্টি ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে অজানা প্রভাব বিস্তারকারী হয়ে উঠতে পারে; বিশেষত রিপাবলিকানদের জন্য।

শুমেকার এক সময় রিপাবলিকান দল থেকে কংগ্রেসে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। বর্তমানে রিপাবলিকান দল কংগ্রেসে সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। তাই মাস্কের নতুন দল নিয়ে রিপাবলিকানদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন। জুনে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক জরিপ চালান। সেখানে ৫৬ লাখ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষই তার এ উদ্যোগকে সমর্থন করেন।

এএফপিকে শুমেকার বলেন, মাস্কের ভাবমূর্তি অসন্তুষ্ট স্বাধীন ভোটার, তরুণ ও প্রযুক্তিনির্ভর ভোটারদের আকর্ষণ করবে। (মাস্কের দল না থাকলে) তারা হয়তো দোদুল্যমান ডিস্ট্রিক্টগুলোতে রিপাবলিকানদের পক্ষে ভোট দিতেন।

ক্ষমতার ভারসাম্যে অর্থ ও খ্যাতির প্রভাব কতা: মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০৫ (৪০ হাজার ৫০০ কোটি) বিলিয়ন ডলার। এ ধনকুবের ইতোমধ্যেই দেখিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে প্রস্তুত। ২০২৪ সালের ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারশিবিরে একাই ২৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছিলেন মাস্ক। তবে উইসকনসিনে সম্প্রতি স্টেট সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে মাস্ক সমর্থিত প্রার্থী বড় ব্যবধানে হেরে গেছেন। মাস্ক সেখানে নিজের পছন্দের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে দুই কোটি ডলার খরচ করেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে রাজনীতিতে অর্থ ও খ্যাতির প্রভাবে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মাস্কই হয়ে উঠতে পারেন রিপাবলিকানের জন্য হুমকি

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তার এ উদ্যোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সাবেক এ ঘনিষ্ঠ মিত্রের নতুন দল গঠনের বিষয়টিকে ট্রাম্প যতই হাস্যকর বলুন, হতাশ মাস্কই রিপাবলিকান দলের জন্য স্পষ্ট হুমকি হয়ে উঠতে পারেনÑ এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এ উদ্যোগ যে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের জন্য স্পষ্ট হুমকি হয়ে উঠতে পারে; সেটির পেছনে একটি বড় কারণ হলো, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এখন রিপাবলিকান দল সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা টিকিয়ে রেখেছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চকক্ষ সিনেটে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের আসনসংখ্যা যথাক্রমে ২২০-২১২ ও ৫৩-৪৫।

ট্রাম্প সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিমালায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা একটি বিল সই করেছেন। বিলটি বাজেট ঘাটতি অনেক বাড়িয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।

‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামের ওই বিলে ট্রাম্প স্বাক্ষর করার পর পরই ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন মাস্ক। ধনকুবের মাস্কের বিশাল এক অনুসারী গোষ্ঠী রয়েছে, বিশেষ করে মার্কিন কম বয়সি পুরুষদের কাছে দারুণ আকর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব তিনি। তারা মাস্ককে একজন ব্যতিক্রমী প্রতিভা ও তারকা হিসেবে দেখেন।

নতুন দলের নীতিগত দিক নিয়ে ইলন মাস্ক এখনো বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আগামী বছর কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের কয়েকটি আসন লক্ষ্যবস্তু করবেন; বিশেষ করে সেসব রিপাবলিকানের- যারা আর্থিক শৃঙ্খলা বা বাজেট নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলার পরও ট্রাম্পের বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ম্যাট শুমেকার বলেন, ইলন মাস্কের আমেরিকা পার্টি ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে অজানা প্রভাব বিস্তারকারী হয়ে উঠতে পারে; বিশেষত রিপাবলিকানদের জন্য।

শুমেকার এক সময় রিপাবলিকান দল থেকে কংগ্রেসে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। বর্তমানে রিপাবলিকান দল কংগ্রেসে সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। তাই মাস্কের নতুন দল নিয়ে রিপাবলিকানদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক কয়েক সপ্তাহ ধরে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন। জুনে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক জরিপ চালান। সেখানে ৫৬ লাখ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষই তার এ উদ্যোগকে সমর্থন করেন।

এএফপিকে শুমেকার বলেন, মাস্কের ভাবমূর্তি অসন্তুষ্ট স্বাধীন ভোটার, তরুণ ও প্রযুক্তিনির্ভর ভোটারদের আকর্ষণ করবে। (মাস্কের দল না থাকলে) তারা হয়তো দোদুল্যমান ডিস্ট্রিক্টগুলোতে রিপাবলিকানদের পক্ষে ভোট দিতেন।

ক্ষমতার ভারসাম্যে অর্থ ও খ্যাতির প্রভাব কতা: মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০৫ (৪০ হাজার ৫০০ কোটি) বিলিয়ন ডলার। এ ধনকুবের ইতোমধ্যেই দেখিয়েছেন, তিনি রাজনীতিতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে প্রস্তুত। ২০২৪ সালের ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারশিবিরে একাই ২৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছিলেন মাস্ক। তবে উইসকনসিনে সম্প্রতি স্টেট সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে মাস্ক সমর্থিত প্রার্থী বড় ব্যবধানে হেরে গেছেন। মাস্ক সেখানে নিজের পছন্দের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে দুই কোটি ডলার খরচ করেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে রাজনীতিতে অর্থ ও খ্যাতির প্রভাবে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ