ঢাকা ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

রেবিসের চেয়ে ভয়ঙ্কর লিসা ভাইরাস

  • আপডেট সময় : ০৮:৩৮:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: ১৯৯০ সালের ওই লিসা ভাইরাস আবারও হানা দিয়েছে। করোনার পর নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এ ভাইরাসটি। অস্ট্রেলিয়ায় বাদুড়ের কামড়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির শরীরে পাওয়া গেছে এই জীবাণু।

অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, এই মৃত্যুর জন্য দায়ী লিসা ভাইরাস; যা রেবিসের মতো নয়। বাদুড়ের লালায় থাকে এই ভাইরাস; যা সাধারণত মানুষ বা পশু-পাখির শরীরে ছড়ায় না। কিন্তু এক্ষেত্রে ভাইরাসটি ওই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তের মাধ্যমে আরো মানুষের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত পঞ্চাশ বছরে বাদুড়ের মাধ্যমে ইবোলা, নিপা, হেন্ড্রা, সার্স-কোভ, মার্স-কোভ, ও সার্স-কোভ-২ (করোনা) ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই ভাইরাসগুলো আরএনএ ভাইরাস; যা পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের অভিযোজিত করে এবং সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করে। তাই মানুষ ও বাদুড়ের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।

নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে একটি ফক্স ব্যাট কামড়ে দেয়। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে লিসাভাইরাসের অস্তিত্ব।

অস্ট্রেলিয়ার কুইনস্ল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক টিম ম্যাহোনি জানিয়েছে, বাদুড়ের লালা থেকে সরাসরি ভাইরাসটি ওই ব্যক্তির রক্তে মিশে যায়। এরপর খুব দ্রুত বিভাজিত হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। লিসা ভাইরাস খুব সংক্রামক, মানুষের শরীরে একবার সংক্রমণ ঘটলে আরও অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

রেবিসের চেয়ে ভয়ঙ্কর লিসা ভাইরাস: লিসাভাইরাস আরএনএ ভাইরাস; যা নিউরোট্রপিক ভাইরাস হিসেবে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে আক্রমণ করে। করোনা যেমন ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ঠিক তেমনি লিসা ভাইরাস স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি রেবিস ভাইরাস পরিবারের অন্তর্গত। ফল খাওয়া বাদুড়ের মধ্যে এই ভাইরাস বহনকারী কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতি থাকে এবং ওই প্রজাতির বাদুড়ের সংস্পর্শে এলেই ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

লিসা ভাইরাসের উপসর্গ ও প্রভাব: লিসা ভাইরাস শরীরে ঢুকলে ১-২ সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রথমে জ্বর, পেশিতে ব্যথা, ক্লান্তি, এবং কামড় বা আঁচড়ের জায়গায় ফোলাভাব, রক্ত বা পুঁজ বেরনো মতো লক্ষণ দেখা যায়। এরপর রোগী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতে পারে, পানি দেখলে আতঙ্ক এবং অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, এবং খিঁচুনি, বিভ্রান্তি ও কোমায় চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হতে পারে।

বর্তমানে লিসাভাইরাসের কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই। গবেষকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কোনো অচেনা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বা অজানা রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত আক্রান্তের নমুনা জিনোম পরীক্ষার জন্য পাঠানো উচিত। সূত্র : সিবিএস নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রেবিসের চেয়ে ভয়ঙ্কর লিসা ভাইরাস

আপডেট সময় : ০৮:৩৮:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ১৯৯০ সালের ওই লিসা ভাইরাস আবারও হানা দিয়েছে। করোনার পর নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এ ভাইরাসটি। অস্ট্রেলিয়ায় বাদুড়ের কামড়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির শরীরে পাওয়া গেছে এই জীবাণু।

অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, এই মৃত্যুর জন্য দায়ী লিসা ভাইরাস; যা রেবিসের মতো নয়। বাদুড়ের লালায় থাকে এই ভাইরাস; যা সাধারণত মানুষ বা পশু-পাখির শরীরে ছড়ায় না। কিন্তু এক্ষেত্রে ভাইরাসটি ওই ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তের মাধ্যমে আরো মানুষের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত পঞ্চাশ বছরে বাদুড়ের মাধ্যমে ইবোলা, নিপা, হেন্ড্রা, সার্স-কোভ, মার্স-কোভ, ও সার্স-কোভ-২ (করোনা) ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই ভাইরাসগুলো আরএনএ ভাইরাস; যা পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের অভিযোজিত করে এবং সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করে। তাই মানুষ ও বাদুড়ের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।

নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে একটি ফক্স ব্যাট কামড়ে দেয়। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে লিসাভাইরাসের অস্তিত্ব।

অস্ট্রেলিয়ার কুইনস্ল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক টিম ম্যাহোনি জানিয়েছে, বাদুড়ের লালা থেকে সরাসরি ভাইরাসটি ওই ব্যক্তির রক্তে মিশে যায়। এরপর খুব দ্রুত বিভাজিত হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। লিসা ভাইরাস খুব সংক্রামক, মানুষের শরীরে একবার সংক্রমণ ঘটলে আরও অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

রেবিসের চেয়ে ভয়ঙ্কর লিসা ভাইরাস: লিসাভাইরাস আরএনএ ভাইরাস; যা নিউরোট্রপিক ভাইরাস হিসেবে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে আক্রমণ করে। করোনা যেমন ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ঠিক তেমনি লিসা ভাইরাস স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি রেবিস ভাইরাস পরিবারের অন্তর্গত। ফল খাওয়া বাদুড়ের মধ্যে এই ভাইরাস বহনকারী কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতি থাকে এবং ওই প্রজাতির বাদুড়ের সংস্পর্শে এলেই ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

লিসা ভাইরাসের উপসর্গ ও প্রভাব: লিসা ভাইরাস শরীরে ঢুকলে ১-২ সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রথমে জ্বর, পেশিতে ব্যথা, ক্লান্তি, এবং কামড় বা আঁচড়ের জায়গায় ফোলাভাব, রক্ত বা পুঁজ বেরনো মতো লক্ষণ দেখা যায়। এরপর রোগী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতে পারে, পানি দেখলে আতঙ্ক এবং অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, এবং খিঁচুনি, বিভ্রান্তি ও কোমায় চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হতে পারে।

বর্তমানে লিসাভাইরাসের কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই। গবেষকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কোনো অচেনা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বা অজানা রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত আক্রান্তের নমুনা জিনোম পরীক্ষার জন্য পাঠানো উচিত। সূত্র : সিবিএস নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ