ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের গণহত্যায় জড়িত কোম্পানির তালিকা দিলো জাতিসংঘ

  • আপডেট সময় : ০৬:১৮:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি দেখিয়েছেন ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত এবং গাজায় গণহত্যা চালাতে কোন কোন আন্তর্জাতিক কোম্পানি সহায়তা করছে। যার সঙ্গে জড়িত, সেগুলোর তালিকা দিয়েছেন তিনি।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলো পর্যবেক্ষণ করেন বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। তার নতুন প্রতিবেদনটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জেনেভায় একটি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, তিনি তার প্রতিবেদনে ৪৮টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট, গুগলের পেরেন্ট কোম্পানি আলফাবেট ও বহুজাতিক কোম্পানি অ্যামাজন রয়েছে।

ওই কোম্পানিগুলো শুধু এখন আর ফিলিস্তিনে দখলদারিত্বেই জড়িত না, এগুলো গাজার গণহত্যাতেও সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের ওই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এসব কোম্পানি সহযোগিতা করছে বলেই ইসরায়েল এখনো গণহত্যা চালিয়ে যেতে পারছে।

যেসব কোম্পানিকে এই প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয়েছে, তা হলো-
সামরিক খাত: মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন এবং ইতালির লিওনার্দো এসপিএ-এর মতো কোম্পানিগুলো ইসরায়েলকে যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে, যা গাজায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি খাত: মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট (গুগলের পেরেন্ট কোম্পানি), অ্যামাজন, এবং আইবিএম-এর মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে নজরদারি এবং বায়োমেট্রিক ডেটা ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করছে। প্যালান্টির টেকনোলজিস ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণে প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি: ক্যাটারপিলার (যুক্তরাষ্ট্র), ভলভো (সুইডেন), এবং হাইডি হুন্ডাই (দক্ষিণ কোরিয়া)-এর মতো কোম্পানিগুলোর ভারী যন্ত্রপাতি ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ধ্বংস এবং অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

পর্যটন ও আবাসন: বুকিং.কম এবং এয়ারবিএনবি-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো দখলকৃত পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতিতে হোটেল এবং সম্পত্তি তালিকাভুক্ত করে লাভবান হচ্ছে।

জ্বালানি ও সম্পদ: ড্রামন্ড কোম্পানি (যুক্তরাষ্ট্র) এবং গ্লেনকোর (সুইজারল্যান্ড) ইসরায়েলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা সরবরাহ করছে।

বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান: বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অ্যাসেট ম্যানেজার, ব্ল্যাকরক এবং ভ্যানগার্ড- অভিযুক্ত অনেক কোম্পানির প্রধান বিনিয়োগকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আইনের দায়বদ্ধতা: জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মানবাধিকার লঙ্ঘন এড়ানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই ধরনের কার্যকলাপের জন্য কোম্পানি এবং তাদের কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন। সূত্র: আলজাজিরা।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইসরায়েলের গণহত্যায় জড়িত কোম্পানির তালিকা দিলো জাতিসংঘ

আপডেট সময় : ০৬:১৮:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি দেখিয়েছেন ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত এবং গাজায় গণহত্যা চালাতে কোন কোন আন্তর্জাতিক কোম্পানি সহায়তা করছে। যার সঙ্গে জড়িত, সেগুলোর তালিকা দিয়েছেন তিনি।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলো পর্যবেক্ষণ করেন বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। তার নতুন প্রতিবেদনটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জেনেভায় একটি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, তিনি তার প্রতিবেদনে ৪৮টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট, গুগলের পেরেন্ট কোম্পানি আলফাবেট ও বহুজাতিক কোম্পানি অ্যামাজন রয়েছে।

ওই কোম্পানিগুলো শুধু এখন আর ফিলিস্তিনে দখলদারিত্বেই জড়িত না, এগুলো গাজার গণহত্যাতেও সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের ওই বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এসব কোম্পানি সহযোগিতা করছে বলেই ইসরায়েল এখনো গণহত্যা চালিয়ে যেতে পারছে।

যেসব কোম্পানিকে এই প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয়েছে, তা হলো-
সামরিক খাত: মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন এবং ইতালির লিওনার্দো এসপিএ-এর মতো কোম্পানিগুলো ইসরায়েলকে যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে, যা গাজায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি খাত: মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট (গুগলের পেরেন্ট কোম্পানি), অ্যামাজন, এবং আইবিএম-এর মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে নজরদারি এবং বায়োমেট্রিক ডেটা ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করছে। প্যালান্টির টেকনোলজিস ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণে প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি: ক্যাটারপিলার (যুক্তরাষ্ট্র), ভলভো (সুইডেন), এবং হাইডি হুন্ডাই (দক্ষিণ কোরিয়া)-এর মতো কোম্পানিগুলোর ভারী যন্ত্রপাতি ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ধ্বংস এবং অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

পর্যটন ও আবাসন: বুকিং.কম এবং এয়ারবিএনবি-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো দখলকৃত পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতিতে হোটেল এবং সম্পত্তি তালিকাভুক্ত করে লাভবান হচ্ছে।

জ্বালানি ও সম্পদ: ড্রামন্ড কোম্পানি (যুক্তরাষ্ট্র) এবং গ্লেনকোর (সুইজারল্যান্ড) ইসরায়েলের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা সরবরাহ করছে।

বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান: বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অ্যাসেট ম্যানেজার, ব্ল্যাকরক এবং ভ্যানগার্ড- অভিযুক্ত অনেক কোম্পানির প্রধান বিনিয়োগকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আইনের দায়বদ্ধতা: জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে মানবাধিকার লঙ্ঘন এড়ানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই ধরনের কার্যকলাপের জন্য কোম্পানি এবং তাদের কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন। সূত্র: আলজাজিরা।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ