ঢাকা ০৬:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বেঁচে আছেন নিহত প্রচার হওয়া খামেনির উপদেষ্টা

  • আপডেট সময় : ০৬:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক: ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী শামখানি বেঁচে আছেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

গত ১৩ জুন দখলদার ইসরায়েল ইরানে অতর্কিত হামলা চালায়। ওইদিন তেহরানে আলী শামখানির অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়ে দখলদাররা। এতে তার অ্যাপার্টমেন্টটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এটির ছাদ ধসে পড়ে। তিনি সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকাও ছিলেন। তবে তাকে পরবর্তীতে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিউইয়র্ক টাইমস শামখানির পরিবারের সদস্য ও ইরানের কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছিল, তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। তার সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া না যাওয়ায় এবং তাকে প্রকাশ্যে দেখা না যাওয়ায় ওই সময় এ ধারণা আরও প্রবল হয় যে, শামখানি প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু গত শনিবার অন্যান্য কমান্ডারদের জানাজায় শামখানিকে দেখা গেছে বলে আজকের প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, শনিবার শামখানি কালো স্যুট ও কালো শার্ট পরে আসেন। তবে ওই সময় তার হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। এ ছাড়া হাঁটার জন্য তিনি একটি লাঠিও ব্যবহার করছিলেন। তাকে ওই সময় বেশ দুর্বল, মুখ শুকনো এবং তার ঘাড়ের অংশটি বেঁকে আছে দেখা যাচ্ছিল।

৬৯ বছর বয়সী শামখানি ইরানের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যে পারমাণবিক আলোচনা চলছিল সেখানে তিনি তেহরানের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন। তিনি দীর্ঘ সময় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি ছিলেন এবং সম্প্রতি সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান।

শামখানি জাতিগতভাবে আরব। ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে জন্ম নেওয়া খামেনির এ উপদেষ্টা আরবি ভাষায় বেশ পটু। সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

ইরানি টিভিকে গত শনিবার এক সাক্ষাৎকারে শামখানি বলেন, আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। আমার স্ত্রী পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। আমার যে ছেলে আমাদের সঙ্গে থাকে সে হামলার ১০ মিনিট আগে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। হামলার পর প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি কোনো ভূমিকম্প। কিন্তু তখন আমরা একটি গাড়ি যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। ওই সময় আমি বলি, ইসরায়েলিরা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। ভবনটি ধসে পড়ায় অক্সিজেনের অভাবে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তিনি বলেন, আমি ধ্বংসস্তূপের নিচে তিন ঘণ্টা আটকে ছিলাম। ওই সময় জোরে জোরে আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে ডাকছিলাম। তখন উদ্ধারকারীরা আমার কথা শুনতে পায়। তারা প্রথমে আমার পা খুঁজে বের করে। এরপর আমার পুরো দেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে। তবে ওই হামলায় তার স্ত্রী আহত বা নিহত হয়েছেন কি না সেটি উল্লেখ করেননি তিনি।

বিশ্বে শান্তি রক্ষায় পুতিন-ম্যাক্রোঁর ফোনালাপ
বিদেশের খবর ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফোনে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন প্রেস সার্ভিস। এর আগে তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছিল ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে।

ম্যাক্রোঁকে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন সংকট মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর নীতির সরাসরি ফলাফল; যারা বহু বছর ধরে রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগগুলো উপেক্ষা করেছে এবং ইউক্রেনকে একটি বিরোধী ঘাঁটিতে রূপান্তর করেছে। তিনি বলেন, যে কোনো শান্তি চুক্তি হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি ও ইউক্রেন সংকটের মূল কারণগুলোকে সমাধান করে এবং বর্তমান ভূখণ্ডগত বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিতে হবে।

দুই নেতা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়েও কথা বলেন এবং কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে মত দেন। তারা ভবিষ্যতেও যোগাযোগ বজায় রাখার এবং সমন্বিত অবস্থান নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হন।

পুতিন ও ম্যাক্রোঁ একমত হন যে, তাদের উভয়ের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বজায় রাখতে। তারা ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি এবং আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

ইউক্রেনকে ফ্রান্স ৩.৭ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তা দিয়েছে। ম্যাক্রোঁ আগে ফরাসি সেনা ইউক্রেনে পাঠানোর সম্ভাবনা উত্থাপন করেছিলেন। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

সম্প্রতি ম্যাক্রোঁ তার কড়া অবস্থান কিছুটা নরম করেছেন। মে মাসে তিনি বলেন, আমরা ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ করেছি এবং এখন আর অনেক কিছু করা সম্ভব নয়।

গত সপ্তাহে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো চিরদিন যুদ্ধের প্রস্তুতিতে থাকতে চায় না এবং এখনই রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপ শুরু করা উচিত; যাতে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের পাশাপাশি নতুন ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তোলা যায়। সূত্র: আরটি।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বেঁচে আছেন নিহত প্রচার হওয়া খামেনির উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৬:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী শামখানি বেঁচে আছেন। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

গত ১৩ জুন দখলদার ইসরায়েল ইরানে অতর্কিত হামলা চালায়। ওইদিন তেহরানে আলী শামখানির অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়ে দখলদাররা। এতে তার অ্যাপার্টমেন্টটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এটির ছাদ ধসে পড়ে। তিনি সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকাও ছিলেন। তবে তাকে পরবর্তীতে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিউইয়র্ক টাইমস শামখানির পরিবারের সদস্য ও ইরানের কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছিল, তিনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। তার সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া না যাওয়ায় এবং তাকে প্রকাশ্যে দেখা না যাওয়ায় ওই সময় এ ধারণা আরও প্রবল হয় যে, শামখানি প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু গত শনিবার অন্যান্য কমান্ডারদের জানাজায় শামখানিকে দেখা গেছে বলে আজকের প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, শনিবার শামখানি কালো স্যুট ও কালো শার্ট পরে আসেন। তবে ওই সময় তার হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। এ ছাড়া হাঁটার জন্য তিনি একটি লাঠিও ব্যবহার করছিলেন। তাকে ওই সময় বেশ দুর্বল, মুখ শুকনো এবং তার ঘাড়ের অংশটি বেঁকে আছে দেখা যাচ্ছিল।

৬৯ বছর বয়সী শামখানি ইরানের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যে পারমাণবিক আলোচনা চলছিল সেখানে তিনি তেহরানের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন। তিনি দীর্ঘ সময় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি ছিলেন এবং সম্প্রতি সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান।

শামখানি জাতিগতভাবে আরব। ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে জন্ম নেওয়া খামেনির এ উপদেষ্টা আরবি ভাষায় বেশ পটু। সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

ইরানি টিভিকে গত শনিবার এক সাক্ষাৎকারে শামখানি বলেন, আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। আমার স্ত্রী পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। আমার যে ছেলে আমাদের সঙ্গে থাকে সে হামলার ১০ মিনিট আগে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। হামলার পর প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি কোনো ভূমিকম্প। কিন্তু তখন আমরা একটি গাড়ি যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। ওই সময় আমি বলি, ইসরায়েলিরা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। ভবনটি ধসে পড়ায় অক্সিজেনের অভাবে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তিনি বলেন, আমি ধ্বংসস্তূপের নিচে তিন ঘণ্টা আটকে ছিলাম। ওই সময় জোরে জোরে আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে ডাকছিলাম। তখন উদ্ধারকারীরা আমার কথা শুনতে পায়। তারা প্রথমে আমার পা খুঁজে বের করে। এরপর আমার পুরো দেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে। তবে ওই হামলায় তার স্ত্রী আহত বা নিহত হয়েছেন কি না সেটি উল্লেখ করেননি তিনি।

বিশ্বে শান্তি রক্ষায় পুতিন-ম্যাক্রোঁর ফোনালাপ
বিদেশের খবর ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফোনে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন প্রেস সার্ভিস। এর আগে তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছিল ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে।

ম্যাক্রোঁকে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন সংকট মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর নীতির সরাসরি ফলাফল; যারা বহু বছর ধরে রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগগুলো উপেক্ষা করেছে এবং ইউক্রেনকে একটি বিরোধী ঘাঁটিতে রূপান্তর করেছে। তিনি বলেন, যে কোনো শান্তি চুক্তি হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি ও ইউক্রেন সংকটের মূল কারণগুলোকে সমাধান করে এবং বর্তমান ভূখণ্ডগত বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিতে হবে।

দুই নেতা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিয়েও কথা বলেন এবং কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে মত দেন। তারা ভবিষ্যতেও যোগাযোগ বজায় রাখার এবং সমন্বিত অবস্থান নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সম্মত হন।

পুতিন ও ম্যাক্রোঁ একমত হন যে, তাদের উভয়ের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি বজায় রাখতে। তারা ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি এবং আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

ইউক্রেনকে ফ্রান্স ৩.৭ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তা দিয়েছে। ম্যাক্রোঁ আগে ফরাসি সেনা ইউক্রেনে পাঠানোর সম্ভাবনা উত্থাপন করেছিলেন। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।

সম্প্রতি ম্যাক্রোঁ তার কড়া অবস্থান কিছুটা নরম করেছেন। মে মাসে তিনি বলেন, আমরা ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ করেছি এবং এখন আর অনেক কিছু করা সম্ভব নয়।

গত সপ্তাহে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো চিরদিন যুদ্ধের প্রস্তুতিতে থাকতে চায় না এবং এখনই রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপ শুরু করা উচিত; যাতে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের পাশাপাশি নতুন ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তোলা যায়। সূত্র: আরটি।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ