নিজস্ব প্রতিবেদক: মোরশেদ আলম তানিম (১৮)। পুরান ঢাকার আহমদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল সে। আগামী ১৩ জুলাই প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল তার পরীক্ষার ফল। কিন্তু সে ফল আর জানা হলো না তানিমের।
গত ৩০ জুন রাতে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের মাক্কুশা মাজার এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয় তানিম। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নেওয়া হলেও, পরদিন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার (২ জুলাই) ভোররাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ৩০ জুন রাতে কয়েকজন বন্ধুসহ ওই এলাকায় গেলে ছিনতাইকারীরা তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে ছুরিকাঘাত করা হয় তানিমকে। এ সময় তার কয়েকজন বন্ধু কিছুদূর সামনে ছিল। তার বন্ধুরা দৌড়ে এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি হলে বাসায় নেওয়া হয়, কিন্তু আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তামিম।
নিহত তানিম লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থানার বামনী গ্রামের ফিরোজ আলম আমিরের ছেলে। তিনি পুরান ঢাকার বংশালের নুর বক্স লেনে নানির বাসায় থাকতেন। তার বাবা-মা থাকেন নাজিমুদ্দিন রোডের সুক্কু মিয়ার গলিতে।
তানিমের মামা তারেক মাসুদ বলেন, ৩০ তারিখ রাতে ছিনতাইকারীরা তার মোবাইল নেওয়ার চেষ্টা করে ছুরিকাঘাত করে। পরে চিকিৎসার জন্য মিটফোর্ডে নেওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হলে আবার ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ভাগ্নে মারা যায়।
তানিমের বন্ধু সিয়াম জানান, সে আমাদের সঙ্গে আহমদ বাওয়ানী একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ১৩ জুলাই রেজাল্ট দেওয়ার কথা। সকালের দিকে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসে দেখি আমাদের বন্ধু আর নেই। চকবাজার থানার এসআই মানিক উদ্দিন জানান, ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তানিম। মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। পরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুজন ছিনতাইকারী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা কাজ করছি।