ঢাকা ০৩:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগরে অর্ধশত গাছ কাটা হলেও কর্তৃপক্ষ জানে না

  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পূর্বানুমতি ছাড়াই কাটা হয়েছে অর্ধশতাধিক গাছ।

সোমবার (৩০ জুন) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ভবনের সামনের জঙ্গল ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পেছনের অংশে এক্সকাভেটর দিয়ে এসব গাছ কাটা হয়। গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের উদ্যোগে এই গাছ কাটা হয়েছে। এই নির্মাণকাজ চলছে এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়।

গাছ কাটার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা এই গাছ কাটার অনুমতি দিইনি। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আমাদের না জানিয়েই কাজ শুরু করেছে। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি জানতাম না এতগুলো গাছ কাটা হয়েছে।

আমার কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক যদি বলে থাকেন যে, তিনি জানতেন না তাহলে এটা কীভাবে হলো, আমি বুঝতে পারছি না। আমরা আগেই জানিয়েছিলাম যে, মাস্টারপ্ল্যান দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্মাণকাজ হবে না। শিগগিরই এই ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ছাত্র ফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া উন্নয়নকাজ না করার দাবিতে আন্দোলন করছি। অথচ প্রশাসন জানে না, কে কবে গাছ কেটে দিলো। এটা কেবল গাফিলতি নয়, দায় এড়ানোর চেষ্টা।

পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরিত্র সাত্তার বলেন, এই এলাকায় শিয়াল, বনবিড়াল, ফিশিং ক্যাটসহ নানা বন্য প্রাণীর বসবাস ছিল। মাত্র দুই মাস আগেও এখানে শিয়াল শাবকদের নিয়ে বাস করছিল। এখন সেই আশ্রয়ও হারাল তারা। শিক্ষার্থীদের সমস্যা শুধু অবকাঠামো নয়, বরং এটি একটি পরিকল্পনার অভাবজনিত সমস্যা। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া উন্নয়ন কার্যক্রম শুধু পরিবেশ নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের কাজ শুরুর আগেই ৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাস্টারপ্ল্যান সংশোধনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয়। ১৩ মে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আরেক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানায়, মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কোনো নির্মাণকাজ করা যাবে না। ৯ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ২০ মের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যানের দৃশ্যমান অগ্রগতি উপস্থাপন করা হবে। তবে এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সেই অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউনূস-রুবিও ফোনালাপ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়াতে জোর

জাহাঙ্গীরনগরে অর্ধশত গাছ কাটা হলেও কর্তৃপক্ষ জানে না

আপডেট সময় : ০৮:৪০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পূর্বানুমতি ছাড়াই কাটা হয়েছে অর্ধশতাধিক গাছ।

সোমবার (৩০ জুন) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ভবনের সামনের জঙ্গল ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পেছনের অংশে এক্সকাভেটর দিয়ে এসব গাছ কাটা হয়। গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের উদ্যোগে এই গাছ কাটা হয়েছে। এই নির্মাণকাজ চলছে এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়।

গাছ কাটার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা এই গাছ কাটার অনুমতি দিইনি। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আমাদের না জানিয়েই কাজ শুরু করেছে। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি জানতাম না এতগুলো গাছ কাটা হয়েছে।

আমার কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক যদি বলে থাকেন যে, তিনি জানতেন না তাহলে এটা কীভাবে হলো, আমি বুঝতে পারছি না। আমরা আগেই জানিয়েছিলাম যে, মাস্টারপ্ল্যান দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্মাণকাজ হবে না। শিগগিরই এই ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ছাত্র ফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া উন্নয়নকাজ না করার দাবিতে আন্দোলন করছি। অথচ প্রশাসন জানে না, কে কবে গাছ কেটে দিলো। এটা কেবল গাফিলতি নয়, দায় এড়ানোর চেষ্টা।

পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরিত্র সাত্তার বলেন, এই এলাকায় শিয়াল, বনবিড়াল, ফিশিং ক্যাটসহ নানা বন্য প্রাণীর বসবাস ছিল। মাত্র দুই মাস আগেও এখানে শিয়াল শাবকদের নিয়ে বাস করছিল। এখন সেই আশ্রয়ও হারাল তারা। শিক্ষার্থীদের সমস্যা শুধু অবকাঠামো নয়, বরং এটি একটি পরিকল্পনার অভাবজনিত সমস্যা। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া উন্নয়ন কার্যক্রম শুধু পরিবেশ নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের কাজ শুরুর আগেই ৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাস্টারপ্ল্যান সংশোধনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয়। ১৩ মে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আরেক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানায়, মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কোনো নির্মাণকাজ করা যাবে না। ৯ মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ২০ মের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যানের দৃশ্যমান অগ্রগতি উপস্থাপন করা হবে। তবে এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সেই অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি।