চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ‘ভালো নির্বাচন’ আয়োজনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আমাদের আসল কাজ একটা ভালো নির্বাচন দেওয়া। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখা। এখন যেগুলো করছি, সেগুলো হচ্ছে ‘বাই প্রোডাক্ট’। মন্ত্রণালয়ের যেসব সংস্কার করছি, তা সময়-সুযোগ পাওয়াতে করতে পারছি। তবে আসল কাজ হল এখন থেকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। ভালো নির্বাচনের জন্য এখন থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের পুরনো অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, (নির্বাচনের আগে) অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার শুরু করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে হলে এটা করতে হবে। তবে অনেক রাজনৈতিক প্রভাবশালী আছেন, ক্যাডার আছেন, তারা অস্ত্র জমা দেবে না স্বাভাবিক। তবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। নির্বাচনকালে বৈধ অস্ত্র জমা নিয়ে রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা কিছুদিন মাত্র আছি। এরপর চলে যাব। সুশাসন একদিনে হয় না। তবে আমরা একদম আগের জায়গায় ফিরে যাব না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
চট্টগ্রামের টানেল শো পিস: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেলকে ‘শো-পিস’ বলে বর্ণনা করেন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। টানেল হলেও এখন রক্ষণাবেক্ষণ খরচই উঠছে না মন্তব্য করেন তিনি। মতবিনিময় সভায় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহেদ হোসেন বলেন, টানেলের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচলের পরিমাণ কম। গাড়ি চলাচল বাড়াতে হলে একটি বিকল্প সড়ক প্রশস্ত করার প্রস্তাব দেন তিনি। তখন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, টানেল করার পর কেন চিন্তা করছেন? আগে তো পরিকল্পনা করার দরকার ছিল। এটি এখন শ্বেতহস্তী প্রকল্পে পরিণত হয়েছে। টানেল চালু রাখতে প্রতিদিন লোকসান দিতে হচ্ছে। আবার আনোয়ারা প্রান্তে পাঁচ তারকা, সাত তারকা রিসোর্ট করা হয়েছে। বিরাট টাকা খরচ হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। তাতেও অনেক টাকা দরকার। আর এমন জনশূন্য জায়গায় কে বিনোদন করতে আসবে? এটা নিয়ে ভাবতে হবে।
রিসোর্টগুলো বেসরকারিখাতে দেওয়ার চিন্তা রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এগুলো দিয়ে দিতে হবে। যদিও কেউ নিতে রাজি হচ্ছে না। আয় না হলেও যাতে রক্ষণাবেক্ষণ করবে, দেখাশোনা করবে। টানেল শো-পিস। এই শো-পিস তো বেশি দিন দেখতে আসবেন না মানুষ। টানেল দেখার জিনিস না।
সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার উন্নয়ন শারমিন জাহান, সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন, বিজিবি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এইচ এম শাহরিয়ার ইকবাল, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল আমীন, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এম গোলাম মোর্শেদ খান, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক অংসুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি মনোয়ারা বেগম এবং পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু উপস্থিত ছিলেন।