ঢাকা ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

সিলেটের কন্যাশিশুটিকে গলা কেটে হত্যা করেন বাবা: পুলিশ

  • আপডেট সময় : ০৭:৫৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

সিলেট সংবাদদাতা: সিলেট নগরীতে কন্যাশিশুটিকে তার বাবা গলা কেটে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা চালান বলে দাবি করেছে পুলিশ। সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির বাবাকে প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদের পর সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম এই দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকালে নগরীর মেজরটিলা এলাকায় ঘরের ভেতর থেকে ৪৫ দিনের কন্যাশিশু ইনায়া রহমানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় গলায় জখম অবস্থায় তার বাবা অটোরিকশার চালক আতিকুর রহমানকে (৪৫) উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শিশুটির মা ঝুমা বেগম তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, স্বামী আতিকুরের মাথায় ব্যাথা ছিল। তিনজনই বিকালে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। স্বামীর ডাকে ঘুম থেকে উঠে মেয়ের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। এ সময় স্বামীকেও তিনি জখম অবস্থায় পান। আতিকুর রহমান পুলিশকে বলেছেন, মাথা ব্যথার কারণে মাথায় হঠাৎ কী যেন হয়েছিল, বুঝতে পারেননি।

আতিকুরের এই ভাষ্য তুলে ধরে রাতে উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আতিকুরের জবানবন্দিসহ অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, শিশুর বাবা তাকে বাথরুমে নিয়ে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে এবং নিজেও গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুর রহমান এটা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত বটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে শাহপরাণ (রহ.) থানায় হত্যা মামলা হবে। পরিবার নিয়ে ইসলামপুর এলাকার আনসার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন আতিকুর। সকালে অটোরিকশা চালানোর জন্য তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। দুপুরে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। স্ত্রীকে জানান, তার মাথা ব্যাথা করছে। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে তিনজন ঘুমিয়ে পড়েন। বিকালে হঠাৎ বাসায় চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। তারা আতিকুর রহমানের গলায় জখম দেখতে পান, বেশ রক্ত ঝরছিল। পাশে শিশুর গলা কাটা লাশ পড়ে ছিল। ঝুমা বেগম রাতে হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, স্বামী নিজের গলা কাটছে দেখে তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের মানুষজন এসে তাদের উদ্ধার করেন। ঝুমা বেগমের বোন নাজমা বেগম ও ভাই টিপু মিয়া বলছিলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই বাসায় ভাড়া আছেন। তাদের বোন ফোনে চিৎকার দিয়ে বলেন, তার মেয়েকে জবাই করে স্বামীও নিজের গলা কাটতেছে। তখন লোকজন সেখানে আসে। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান নুরুল হুদা নাঈম সাংবাদিকদের বলেন, আতিকুর রহমানের গলার আঘাত বেশ বড়। তার শ্বাসনালি অনেকটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে তিনি এখন পর্যবেক্ষণে আছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সিলেটের কন্যাশিশুটিকে গলা কেটে হত্যা করেন বাবা: পুলিশ

আপডেট সময় : ০৭:৫৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

সিলেট সংবাদদাতা: সিলেট নগরীতে কন্যাশিশুটিকে তার বাবা গলা কেটে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা চালান বলে দাবি করেছে পুলিশ। সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির বাবাকে প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদের পর সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সাইফুল ইসলাম এই দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকালে নগরীর মেজরটিলা এলাকায় ঘরের ভেতর থেকে ৪৫ দিনের কন্যাশিশু ইনায়া রহমানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় গলায় জখম অবস্থায় তার বাবা অটোরিকশার চালক আতিকুর রহমানকে (৪৫) উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শিশুটির মা ঝুমা বেগম তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, স্বামী আতিকুরের মাথায় ব্যাথা ছিল। তিনজনই বিকালে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। স্বামীর ডাকে ঘুম থেকে উঠে মেয়ের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। এ সময় স্বামীকেও তিনি জখম অবস্থায় পান। আতিকুর রহমান পুলিশকে বলেছেন, মাথা ব্যথার কারণে মাথায় হঠাৎ কী যেন হয়েছিল, বুঝতে পারেননি।

আতিকুরের এই ভাষ্য তুলে ধরে রাতে উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আতিকুরের জবানবন্দিসহ অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, শিশুর বাবা তাকে বাথরুমে নিয়ে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে এবং নিজেও গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুর রহমান এটা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত বটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে শাহপরাণ (রহ.) থানায় হত্যা মামলা হবে। পরিবার নিয়ে ইসলামপুর এলাকার আনসার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন আতিকুর। সকালে অটোরিকশা চালানোর জন্য তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। দুপুরে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। স্ত্রীকে জানান, তার মাথা ব্যাথা করছে। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে তিনজন ঘুমিয়ে পড়েন। বিকালে হঠাৎ বাসায় চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। তারা আতিকুর রহমানের গলায় জখম দেখতে পান, বেশ রক্ত ঝরছিল। পাশে শিশুর গলা কাটা লাশ পড়ে ছিল। ঝুমা বেগম রাতে হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, স্বামী নিজের গলা কাটছে দেখে তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের মানুষজন এসে তাদের উদ্ধার করেন। ঝুমা বেগমের বোন নাজমা বেগম ও ভাই টিপু মিয়া বলছিলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই বাসায় ভাড়া আছেন। তাদের বোন ফোনে চিৎকার দিয়ে বলেন, তার মেয়েকে জবাই করে স্বামীও নিজের গলা কাটতেছে। তখন লোকজন সেখানে আসে। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান নুরুল হুদা নাঈম সাংবাদিকদের বলেন, আতিকুর রহমানের গলার আঘাত বেশ বড়। তার শ্বাসনালি অনেকটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে তিনি এখন পর্যবেক্ষণে আছেন।