নিজস্ব প্রতিবেদক: মনসিংহের ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলায় গত শুক্রবার (২০ জুন) মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটা দুই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের পরিচয় মিলেছে। ঘটনাস্থল দুটি পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আকতার উল আলম এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বেপরোপয়া গতিকে দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তারা।
পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। দুর্ঘটনার শিকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস ও অন্য যানবাহনগুলোর অবস্থা দেখে বেপরোয়া গতির বিষয়টি স্পষ্ট। তারপরও ঘটনার তদন্ত করে সঠিক কারণ বের করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একই ধরনের মন্তব্য করেছেন ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাদি এবং তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টিপু সুলতান। তারাও এসব দুর্ঘটনার জন্য বাস, অ্যাম্বুলেন্স এবং অটোরিকশা ও মাহেন্দ্র গাড়ির বেপরোয়া গতিকে দায়ী করেছেন। ওসি আব্দুল হাদি ঢাকা পোস্টকে জানান, ফুলপুরে বাস ও মাহেন্দ্রর দুর্ঘটনায় বাস চালক পালিয়ে গেছেন। বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নিহতদের পরিচয় মিলেছে: দুই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের পরিচয় মিলেছে। তাদের মধ্যে দুজন নারী এবং ৯ জন পুরুষ।
ফুলপুরে নিহত আটজন হলেন- লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার নিজগুড্ডিমারি গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে কাজিম উদ্দিন (২৮), হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামকুড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল (৩০), ফুলপুর কাজিয়াকান্দা গ্রামের জসীম উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৮), হালুয়াঘাট উপজেলার বালিজুড়ি গ্রামের হাছিনা খাতুন (৫০), ফুলপুর নিশুয়াকান্দা গ্রামের জহের আলী (৭০), হালুয়াঘাট উপজেলার কয়ারহাটি গ্রামের শামসুদ্দিন (৬৫), একই উপজেলার কালিয়ানিকান্দা গ্রামের নয়ন মিয়া (৪০), নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা ইসবপুর গ্রামের লাল মিয়া (৩৬)। তারাকান্দা উপজেলায় অ্যাম্বুলেন্স এবং অটোরিকশার সংর্ঘষে নিহত তিনজন হলেন- ধোবাউড়া উপজেলার বরাটিয়া গ্রামের মোছা. জবেদা খাতুন (৮৫), ফুলপুর উপজেলার মদীপুর গ্রামের কলেজছাত্র রাকিবুল হাসান (১৫) এবং সিএনজি অটোরিকশার চালক ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া এলাকার মোহাম্মদ আলম (৪৫)।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২০ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ সড়কের ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা ইন্দিরারপার এলাকায় যাত্রীবাহী একটি মাহেন্দ্রকে একটি বাস ধাক্কা দিলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা যান। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে আরো দুইজন মারা যান। একই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারাকান্দা উপজেলার কোদালধর বাজার সংলগ্ন হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে একটি অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই আটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মমেক হাসপাতালে মারা যান অটোরিকশা চালক।