ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

কাশ্মির নিয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মানবে না ভারত

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: কাশ্মির নিয়ে নয়া দিল্লি যে তৃতীয় কারও মধ্যস্থতা মেনে নেবে না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপে মোদী কাশ্মির ইস্যুতে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থান মোদীর কাছে ‘শক্তভাবে’ তুলে ধরেন, বলেছেন ভারতের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক, দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

মে-তে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চারদিনের সংঘাতের পর থেকে ট্রাম্প বারবারই ‘কাশ্মির ইস্যুতে’ দুই দেশের মধ্য মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। ভারতের জন্য বেশ সংবেদনশীল এই বিষয় নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন প্রস্তাব নয়া দিল্লিকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলছে। বিক্রম মিশ্রির মন্তব্য নিয়ে এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

ওই (মে মাসের) সংঘাতের সময় কোনো পর্যায়েই ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি বা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে কোনো ধরনের কথাই যে হয়নি তা ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে জানান মোদী-বলেছেন মিশ্রি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত কয়েক সপ্তাহে বারবারই বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছেছে এবং দুই দেশকেই তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রলোভন দেখিয়ে এতে রাজি করিয়েছেন। অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছাতে অন্য দেশের মধ্যস্থতার কথা পাকিস্তান স্বীকার করলেও ভারত তা অস্বীকার করে আসছে। সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ নিয়ে আলোচনা সরাসরি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান চ্যানেলগুলোতে হয়েছিল, উভয় সেনাবাহিনী আগে থেকেই এসব চ্যানেল বানিয়ে রেখেছিল,-বলেছেন মিশ্রি।

অথচ গত মাসেও ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি বলেছি- দেখো, আমরা তোমাদের সঙ্গে অনেক অনেক বাণিজ্য করবো। এখন থামো। থেমে যাওয়। যদি তোমরা থামো তাহলে আমরা বাণিজ্য করবো। আর যদি না থামো, তাহলে করবো না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত এপ্রিলে বিশ্বের অনেকগুলো দেশের ওপর অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তার মধ্যে ভারতও আছে। এ সম্পূরক শুল্কের ওপর ৯০ দিনের ছাড় আগামী ৯ জুলাই শেষ হয়ে যাবে, তার আগেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে নয়া দিল্লি মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এদিকে কাশ্মির নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়েও ভারত বেশ অস্বস্তির মধ্যে আছে। নয়া দিল্লি কাশ্মিরকে তার অবিচ্ছেদ্য অংশই মনে করে, যে কারণে পাকিস্তানের দখলে থাকা অংশ নিয়ে কারও মধ্যস্থতার তারা তীব্র বিরোধী। ভারত ও পাকিস্তানকে এক পাল্লায় না মাপতে পশ্চিমা অংশীদারদের প্রায়ই বলে থাকে নয়া দিল্লি। পশ্চিমা নেতারা কেউ এই অঞ্চলে সফরে এলে একই সময়ে দুই দেশে না যেতেও অনুরোধ করে তারা।

কিন্তু ট্রাম্পের টুইটগুলোতে প্রায়ই ভারত ও পাকিস্তানকে একই দৃষ্টিতে দেখা হয়। এটা দিল্লির কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক উৎকণ্ঠা তৈরি করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন অবস্থান ভারত-যুক্তরাষ্ট্র চলমান বাণিজ্য আলোচনায় কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা বেশ মুশকিল, মত বিশ্লেষকদের।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কাশ্মির নিয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা মানবে না ভারত

আপডেট সময় : ০৬:৫৭:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: কাশ্মির নিয়ে নয়া দিল্লি যে তৃতীয় কারও মধ্যস্থতা মেনে নেবে না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপে মোদী কাশ্মির ইস্যুতে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থান মোদীর কাছে ‘শক্তভাবে’ তুলে ধরেন, বলেছেন ভারতের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন কূটনীতিক, দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

মে-তে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের চারদিনের সংঘাতের পর থেকে ট্রাম্প বারবারই ‘কাশ্মির ইস্যুতে’ দুই দেশের মধ্য মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। ভারতের জন্য বেশ সংবেদনশীল এই বিষয় নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন প্রস্তাব নয়া দিল্লিকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলছে। বিক্রম মিশ্রির মন্তব্য নিয়ে এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

ওই (মে মাসের) সংঘাতের সময় কোনো পর্যায়েই ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি বা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে কোনো ধরনের কথাই যে হয়নি তা ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে জানান মোদী-বলেছেন মিশ্রি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত কয়েক সপ্তাহে বারবারই বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছেছে এবং দুই দেশকেই তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রলোভন দেখিয়ে এতে রাজি করিয়েছেন। অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছাতে অন্য দেশের মধ্যস্থতার কথা পাকিস্তান স্বীকার করলেও ভারত তা অস্বীকার করে আসছে। সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ নিয়ে আলোচনা সরাসরি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান চ্যানেলগুলোতে হয়েছিল, উভয় সেনাবাহিনী আগে থেকেই এসব চ্যানেল বানিয়ে রেখেছিল,-বলেছেন মিশ্রি।

অথচ গত মাসেও ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি বলেছি- দেখো, আমরা তোমাদের সঙ্গে অনেক অনেক বাণিজ্য করবো। এখন থামো। থেমে যাওয়। যদি তোমরা থামো তাহলে আমরা বাণিজ্য করবো। আর যদি না থামো, তাহলে করবো না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত এপ্রিলে বিশ্বের অনেকগুলো দেশের ওপর অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তার মধ্যে ভারতও আছে। এ সম্পূরক শুল্কের ওপর ৯০ দিনের ছাড় আগামী ৯ জুলাই শেষ হয়ে যাবে, তার আগেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে নয়া দিল্লি মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এদিকে কাশ্মির নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়েও ভারত বেশ অস্বস্তির মধ্যে আছে। নয়া দিল্লি কাশ্মিরকে তার অবিচ্ছেদ্য অংশই মনে করে, যে কারণে পাকিস্তানের দখলে থাকা অংশ নিয়ে কারও মধ্যস্থতার তারা তীব্র বিরোধী। ভারত ও পাকিস্তানকে এক পাল্লায় না মাপতে পশ্চিমা অংশীদারদের প্রায়ই বলে থাকে নয়া দিল্লি। পশ্চিমা নেতারা কেউ এই অঞ্চলে সফরে এলে একই সময়ে দুই দেশে না যেতেও অনুরোধ করে তারা।

কিন্তু ট্রাম্পের টুইটগুলোতে প্রায়ই ভারত ও পাকিস্তানকে একই দৃষ্টিতে দেখা হয়। এটা দিল্লির কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক উৎকণ্ঠা তৈরি করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন অবস্থান ভারত-যুক্তরাষ্ট্র চলমান বাণিজ্য আলোচনায় কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা বেশ মুশকিল, মত বিশ্লেষকদের।