ঢাকা ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

সংস্কারে তিন লক্ষ্যে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

  • আপডেট সময় : ০৮:২০:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সংস্কারের জন্য তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়। এগুলো হলো দ্রুত ও স্বল্পতম সময়ে অল্প খরচে মামলা নিষ্পত্তি করা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং মামলার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর প্রাথমিক খসড়ার ওপর এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে আইন উপদেষ্টা তার মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে এ কথা বলেন।
শনিবার (১৪ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন জেলার আইনজীবী সমিতির নেতা, বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধি এবং আইন মন্ত্রণালয় ও আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন। তারা আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার ওপর বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্কার কার্যক্রমের কথা বলতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংস্কারের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে অনেকগুলো কর্মসূচি নিতে পেরেছি। সংস্কার কার্যক্রমের ব্যাপারে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। একটি হচ্ছে দ্রুত ও স্বল্পতম সময়ে অল্প খরচে মামলা নিষ্পত্তি করা। এই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটা পরিবর্তন ইতিমধ্যে করেছি, সেটি হচ্ছে দেওয়ানি কার্যবিধির পরিবর্তন করেছি। দ্বিতীয়ত, ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধনের কাজও দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছি। আশা করি এক মাসের মধ্যে এটি আইন আকারে (অধ্যাদেশ) পাস করতে পারব।’
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সংস্কারের দ্বিতীয় লক্ষ্য উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি খুব কঠিন কাজ। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটালাইজেশনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। বিচারকদের প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রমের মান উন্নত করার কথা চিন্তা করছেন। বিচার বিভাগের সবার সম্পদ বিবরণী সংগ্রহ করা হয়েছে। সেটি নিয়ে ভবিষ্যতে আরো কাজ করা হবে। এ ছাড়া আইনজীবীদের সহায়তায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দ্বিতীয় এই লক্ষ্য পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের তৃতীয় লক্ষ্য হচ্ছে, মামলার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। এই লক্ষ্য পূরণ করার জন্য আইনগত সহায়তা সংস্থার অধীনে যেসব আইন আছে, সেগুলো পরিবর্তন করতে যাচ্ছি।’

আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংশোধন প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থায় প্রথম সভায় তিনি জেনেছেন, প্রতিবছর গড়পড়তা দেশে ৫ লাখ মামলা হয়। সেখানে সরকারি আইনগত সহায়তার মাধ্যমে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি করা যায়। আদালতের তুলনায় এখানে নিষ্পত্তিতে সময় কম লাগে এবং ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট থাকেন। এটা বড় সুযোগ। যদি আইনগত সহায়তা কর্মসূচিকে আরো সম্প্রসারণ, দক্ষ ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারলে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি এক থেকে দুই লাখে নেওয়া যাবে। এক লাখে অবশ্যই পারা যাবে। তাদের লক্ষ্য দুই লাখে নিয়ে যাওয়া।
কেউ মধ্যস্থতায় সন্তুষ্ট না হলে মামলা করার সুযোগ থাকছেই বলে উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন ‘মধ্যস্থতার জন্য আসাটা বাধ্যতামূলক করছি, মধ্যস্থতার রায় মেনে নেওয়াকে বাধ্যতামূলক করছি না। কাজেই কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার ব্যাপার এখানে থাকছে না।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংস্কারে তিন লক্ষ্যে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

আপডেট সময় : ০৮:২০:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, সংস্কারের জন্য তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়। এগুলো হলো দ্রুত ও স্বল্পতম সময়ে অল্প খরচে মামলা নিষ্পত্তি করা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং মামলার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর প্রাথমিক খসড়ার ওপর এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে আইন উপদেষ্টা তার মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে এ কথা বলেন।
শনিবার (১৪ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন জেলার আইনজীবী সমিতির নেতা, বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধি এবং আইন মন্ত্রণালয় ও আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন। তারা আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার ওপর বিভিন্ন পরামর্শ দেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্কার কার্যক্রমের কথা বলতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংস্কারের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে অনেকগুলো কর্মসূচি নিতে পেরেছি। সংস্কার কার্যক্রমের ব্যাপারে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। একটি হচ্ছে দ্রুত ও স্বল্পতম সময়ে অল্প খরচে মামলা নিষ্পত্তি করা। এই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটা পরিবর্তন ইতিমধ্যে করেছি, সেটি হচ্ছে দেওয়ানি কার্যবিধির পরিবর্তন করেছি। দ্বিতীয়ত, ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধনের কাজও দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছি। আশা করি এক মাসের মধ্যে এটি আইন আকারে (অধ্যাদেশ) পাস করতে পারব।’
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সংস্কারের দ্বিতীয় লক্ষ্য উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি খুব কঠিন কাজ। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটালাইজেশনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। বিচারকদের প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রমের মান উন্নত করার কথা চিন্তা করছেন। বিচার বিভাগের সবার সম্পদ বিবরণী সংগ্রহ করা হয়েছে। সেটি নিয়ে ভবিষ্যতে আরো কাজ করা হবে। এ ছাড়া আইনজীবীদের সহায়তায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দ্বিতীয় এই লক্ষ্য পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের তৃতীয় লক্ষ্য হচ্ছে, মামলার অভিশাপ থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। এই লক্ষ্য পূরণ করার জন্য আইনগত সহায়তা সংস্থার অধীনে যেসব আইন আছে, সেগুলো পরিবর্তন করতে যাচ্ছি।’

আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংশোধন প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থায় প্রথম সভায় তিনি জেনেছেন, প্রতিবছর গড়পড়তা দেশে ৫ লাখ মামলা হয়। সেখানে সরকারি আইনগত সহায়তার মাধ্যমে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি করা যায়। আদালতের তুলনায় এখানে নিষ্পত্তিতে সময় কম লাগে এবং ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট থাকেন। এটা বড় সুযোগ। যদি আইনগত সহায়তা কর্মসূচিকে আরো সম্প্রসারণ, দক্ষ ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারলে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি এক থেকে দুই লাখে নেওয়া যাবে। এক লাখে অবশ্যই পারা যাবে। তাদের লক্ষ্য দুই লাখে নিয়ে যাওয়া।
কেউ মধ্যস্থতায় সন্তুষ্ট না হলে মামলা করার সুযোগ থাকছেই বলে উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন ‘মধ্যস্থতার জন্য আসাটা বাধ্যতামূলক করছি, মধ্যস্থতার রায় মেনে নেওয়াকে বাধ্যতামূলক করছি না। কাজেই কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার ব্যাপার এখানে থাকছে না।’