ঢাকা ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ল, সঙ্গে করদাতার ওপর করের চাপ

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মূল্যস্ফীতির চাপ আর অর্থনীতির বাস্তবতায় নতুন বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবিতে সায় দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে কর বাবদে আয় বাড়াতে কর ধাপ সাতটি থেকে কমিয়ে ছয়টি করার প্রস্তাব করেছেন তিনি।তাতে করযোগ্য হলেই আগের চেয়ে বেশি হারে কর দিতে হবে। সার্বিকভাবে অধিকাংশ করদাতার ওপর করের চাপ বাড়বে।
গতকাল সোমবার (২ জুন) উত্থাপিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে স্বাভাবিক ব্যক্তি এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবার শ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা গতবারের সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য ব্যক্তিকে কোনো কর দিতে হবে না। নারী, প্রবীণ নাগরিক, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য এবং গেজেটেড যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রেও করমুক্ত আয়ের সীমার গত বছরের চেয়ে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ‘জুলাই যোদ্ধা’রাও, তাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়সীমা হবে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সমান।
এ ছাড়া, কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের ক্ষেত্রে প্রত্যেক সন্তান পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয় সীমা আরো ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে। বাবা ও মা দুজনই করদাতা হলে যে কোনো একজন এই সুবিধা ভোগ করবেন। করহারের ধাপে কিছুটা পরিবর্তন এনে সাতটির জায়গায় ছয়টি ধাপে করহার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। সর্বোচ্চ করহার আগের মত ৩০ শতাংশ রাখা হলেও আগের ধাপগুলোর সীমা কমিয়ে আনায় গতবারের সমান আয় করেও গতবারের চেয়ে বেশি হারে কর দিতে হবে অনেক করদাতাকে। বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, বার্ষিক ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হবে না। পরবর্তী ৩ লাখ টাকা আয়ে কর দিতে হবে ১০ শতাংশ হারে। আগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ৫ শতাংশ এবং তার পরের চার লাখ টাকার ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দেওয়া লাগত।
আগে সাড়ে আট লাখ টাকার ওপরে পরবর্তী ৫ লাখ টাকা আয়ের জন্য ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হত। এখন ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে পরবর্তী চার লাখ টাকা আয়ের জন্য একই হারে কর দিতে হবে। আগে সাড়ে ১৩ লাখ টাকার ওপরে পরবর্তী ৫ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হত। এখন ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে পরবর্তী পাঁচ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
এখন ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আগে এই হারে কর দিতে হত সাড়ে ১৮ লাখ টাকার ওপরে পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য। আগে সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার ওপরের পরবর্তী সকল আয়ের জন্য ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হত। এখন ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে সকল আয়ের জন্য ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
মোট আয় করমুক্ত আয়সীমা অতিক্রম করলে ন্যূনতম করের পরিমাণ হবে এলাকা নির্বিশেষে ৫ হাজার টাকা। তবে নতুন করদাতাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আগে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকায় ৩ হাজার টাকা ন্যূনতম কর দিতে হত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ল, সঙ্গে করদাতার ওপর করের চাপ

আপডেট সময় : ০৯:৩৪:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: মূল্যস্ফীতির চাপ আর অর্থনীতির বাস্তবতায় নতুন বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবিতে সায় দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে কর বাবদে আয় বাড়াতে কর ধাপ সাতটি থেকে কমিয়ে ছয়টি করার প্রস্তাব করেছেন তিনি।তাতে করযোগ্য হলেই আগের চেয়ে বেশি হারে কর দিতে হবে। সার্বিকভাবে অধিকাংশ করদাতার ওপর করের চাপ বাড়বে।
গতকাল সোমবার (২ জুন) উত্থাপিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে স্বাভাবিক ব্যক্তি এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবার শ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা গতবারের সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের জন্য ব্যক্তিকে কোনো কর দিতে হবে না। নারী, প্রবীণ নাগরিক, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য এবং গেজেটেড যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রেও করমুক্ত আয়ের সীমার গত বছরের চেয়ে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ‘জুলাই যোদ্ধা’রাও, তাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়সীমা হবে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সমান।
এ ছাড়া, কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের ক্ষেত্রে প্রত্যেক সন্তান পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয় সীমা আরো ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে। বাবা ও মা দুজনই করদাতা হলে যে কোনো একজন এই সুবিধা ভোগ করবেন। করহারের ধাপে কিছুটা পরিবর্তন এনে সাতটির জায়গায় ছয়টি ধাপে করহার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। সর্বোচ্চ করহার আগের মত ৩০ শতাংশ রাখা হলেও আগের ধাপগুলোর সীমা কমিয়ে আনায় গতবারের সমান আয় করেও গতবারের চেয়ে বেশি হারে কর দিতে হবে অনেক করদাতাকে। বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, বার্ষিক ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হবে না। পরবর্তী ৩ লাখ টাকা আয়ে কর দিতে হবে ১০ শতাংশ হারে। আগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর ৫ শতাংশ এবং তার পরের চার লাখ টাকার ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দেওয়া লাগত।
আগে সাড়ে আট লাখ টাকার ওপরে পরবর্তী ৫ লাখ টাকা আয়ের জন্য ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হত। এখন ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে পরবর্তী চার লাখ টাকা আয়ের জন্য একই হারে কর দিতে হবে। আগে সাড়ে ১৩ লাখ টাকার ওপরে পরবর্তী ৫ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হত। এখন ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে পরবর্তী পাঁচ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
এখন ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আগে এই হারে কর দিতে হত সাড়ে ১৮ লাখ টাকার ওপরে পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য। আগে সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার ওপরের পরবর্তী সকল আয়ের জন্য ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হত। এখন ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ওপরে সকল আয়ের জন্য ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
মোট আয় করমুক্ত আয়সীমা অতিক্রম করলে ন্যূনতম করের পরিমাণ হবে এলাকা নির্বিশেষে ৫ হাজার টাকা। তবে নতুন করদাতাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আগে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকায় ৩ হাজার টাকা ন্যূনতম কর দিতে হত।