নিজস্ব প্রতিবেদক: সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে শহর পর্যায়ে খাদ্য কেনায় খরচ কিছুটা বাড়লেও গ্রামে কমেছে। তবে শহর ও গ্রাম দুই জায়গাতেই খাদ্য বহির্ভূত খাতে খরচ কমার তথ্য দিয়েছে সরকার; যার প্রভাব পড়েছে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতিতেও।
গতকাল সোমবার (২ জুন) প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গেল মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ, যা ২৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। মূল্যস্ফীতির হার এর চেয়ে কম ছিল সবশেষ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এরপর থেকেই চড়তে থাকে মূল্যস্ফীতির হার, যা আর ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। এর আগে গতবছরের মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সে বছর আন্দোলনের মাস জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে পৌঁছায়।
চলতি বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার এক অঙ্কের ঘরে নেমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়; ফেব্রুয়ারিতে এসে তা আরো কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে। মার্চে তা আবার সামান্য বাড়ার পর এপ্রিলে আরো কিছুটা কমে, সেই ধারা অব্যাহত থাকল মে মাসেও।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে দেখা যায়, গত এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশে ছিল, মে মাসে সেটি আরো কমে ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্য বহির্ভূত খাতে মে মাসে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, মে মাসে শহরের খাদ্য কেনায় খরচ এপ্রিলের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এই খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ; যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে। মে মাসে হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত খাতে গ্রাম এবং শহর দু জায়গাতেই কমেছে। গ্রামে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি এপ্রিলের ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ থেকে কমে মে মাসে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হয়েছে। শহরে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি এপ্রিলের ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ থেকে কমে মে মাসে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর দেশের হাল ধরে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মুহাম্মদ ইউনূস মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। মুদ্রা সরবরাহে লাগাম দিতে বারবার সুদের হার বাড়ানো হয়। এতে অর্থের চাহিদা কমায় সরকারের পরিসংখ্যানেও মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখিতার তথ্য মিলছে, তবে নিত্যপণ্যের বাজারে সে অর্থে সুফল দেখা যাচ্ছে না। সবশেষ সোমবার ঘোষিত বাজেটে আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।