ঢাকা ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
গুলিস্তানজুড়ে জনভোগান্তি চরমে

ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে চলছে নগর ভবন ‘ব্লকেড’

  • আপডেট সময় : ০৪:৫৩:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে ব্লকেড কর্মসূচি পালন -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন ‘ব্লকেড’ কর্মসূচিতে নেমেছেন তার সমর্থকরা। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে এই ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন তার সমর্থকরা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (১৯ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ অবরুদ্ধ কর্মসূচি শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়েছেন। সেখানে চলছে সংগীত পরিবেশন। নগর ভবন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো মাইকে চলছে স্লোগান; হচ্ছে ছোট-ছোট মিছিল।

‘এক দুই তিন চার, আসিফ মাহমুদ স্বৈরাচার’, ‘ইশরাক, হোসেন’, ‘শপথ চাই, পড়াতে হবে’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না, চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কুশপুতুলও দেখা যায়।

এদিন সকাল থেকেই নগর ভবন এলাকায় জড়ো হন ঢাকার বিভিন্ন এলাকার লোকজন। বেলা ১১টার কর্মসূচির আগে থেকেই নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। পরে বঙ্গমার্কেট এলাকা ব্লকেড করেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে গোলাপ শাহ মাজারের রাস্তাটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে নগর ভবনের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

নগর ভবনে ব্লকেড কর্মসূচির কারণে সংস্থাটির কার্যক্রমও কার্যত অচল হয়ে গেছে। নগর ভবনের প্রতিটি ফটকে তারা তালা দিয়েছেন। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেবাগ্রহীতাদের কেউ নগর ভবনে ঢুকতে পারছেন না। এছাড়া নগর ভবনে থাকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে সেবা নিতে গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন নাগরিকরা।

তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, আমাদের ভোটের রায় হাসিনা ছিনিয়ে নিয়েছিল, আদালতের রায়ে আমাদের ভোটের মর্যাদা ফিরে পেয়েছি। ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার রায় আদালত দিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনও গেজেট দিয়েছে। স্থানীয় সরকারের লোকজন তাকে দায়িত্ব বুঝে দিচ্ছে না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে।

ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে আসা যুবদল কর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইশরাক ভাই জনতার মেয়র। তাকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে হবে অবিলম্বে। অন্যথায় আমরা মাঠ ছাড়ব না। কোনো টালবাহানা বরদাশত করা হবে না।’

এই দাবিতে সোমবার পঞ্চম দিনের মতো নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ইশরাকের সমর্থকরা। এর আগে গত শনি এবং রোববার সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেন তারা।

ডিএসসিসির ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে নাগরিকদের জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে অঞ্চলে-১ এর (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট, শাহবাগ) আঞ্চলিক কার্যালয় নগর ভবনে অবস্থিত। সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টায় নগর ভবনের সামনে যান কলাবাগানের ডলফিন মোড়ের বাসিন্দা মকবুল হোসেন। নগর ভবনের প্রধান ফটোকে তালা থাকায় তিনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।

আলাপকালে মকবুল হোসেন বলেন, নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চলে এটা জানতাম না। ছেলের জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আন্দোলনের কারণে নগর ভবনেই ঢুকতে পারিনি। মেয়র হওয়ার আগে যে ব্যক্তি এমন জনভোগান্তি সৃষ্টি করে, তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না।

গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে লালবাগের কেল্লার মোড়ে শতাধিক লেগুনা যাত্রী পরিবহন করে। কিন্তু ব্লকেড কর্মসূচির কারণে লেগুনাগুলো ফুলবাড়িয়া থেকেই ফিরে যাচ্ছে। এ পথের যাত্রীদের গুলিস্তান থেকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

গুলিস্তান থেকে হেঁটে চাঁনখারপুল যাচ্ছিলেন কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ আন্দোলনের কারণে গুলিস্তানসহ আশপাশের সব সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। ইশরাকের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা দরকার।

টানা পঞ্চম দিনের এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সরকারের সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইশরাক হোসেনকে ঢাকার মানুষ মেয়র হিসেবে দেখতে চায়। কারণ ২০২০ সালে তাদের ভোটেই তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার স্থলে আরেকজনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এখন নির্বাচন কমিশন আগের ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের শপথ পড়াতে কালক্ষেপণ করছেন। ঢাকাবাসীর দাবি দ্রুত ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো হোক। অন্যথায় তাদের এই আন্দোলন লাগাতার চলবে। নাগরিক ভোগান্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মশিউর রহমান তা এড়িয়ে যান।

এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকার কথা বলেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। আর আদালতের সিদ্ধান্ত আসার আগে ইশরাকের সমর্থকদের ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছেন তার সমর্থকরা। সেদিন থেকেই ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল।

নিজেকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নিতে শনিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠিও দেন ইশরাক হোসেন। এরপর সন্ধ্যায় ডাকেন সংবাদ সম্মেলন। এক সাংবাদিক ইশরাকের কাছে জানতে চান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সঙ্গে তার কোনো বিরোধ আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধও নাই, ব্যক্তিগত সম্পর্কও নাই।’

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গুলিস্তানজুড়ে জনভোগান্তি চরমে

ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে চলছে নগর ভবন ‘ব্লকেড’

আপডেট সময় : ০৪:৫৩:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন ‘ব্লকেড’ কর্মসূচিতে নেমেছেন তার সমর্থকরা। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে এই ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছেন তার সমর্থকরা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (১৯ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ অবরুদ্ধ কর্মসূচি শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়েছেন। সেখানে চলছে সংগীত পরিবেশন। নগর ভবন থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো মাইকে চলছে স্লোগান; হচ্ছে ছোট-ছোট মিছিল।

‘এক দুই তিন চার, আসিফ মাহমুদ স্বৈরাচার’, ‘ইশরাক, হোসেন’, ‘শপথ চাই, পড়াতে হবে’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না, চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কুশপুতুলও দেখা যায়।

এদিন সকাল থেকেই নগর ভবন এলাকায় জড়ো হন ঢাকার বিভিন্ন এলাকার লোকজন। বেলা ১১টার কর্মসূচির আগে থেকেই নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। পরে বঙ্গমার্কেট এলাকা ব্লকেড করেন আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে গোলাপ শাহ মাজারের রাস্তাটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে নগর ভবনের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

নগর ভবনে ব্লকেড কর্মসূচির কারণে সংস্থাটির কার্যক্রমও কার্যত অচল হয়ে গেছে। নগর ভবনের প্রতিটি ফটকে তারা তালা দিয়েছেন। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেবাগ্রহীতাদের কেউ নগর ভবনে ঢুকতে পারছেন না। এছাড়া নগর ভবনে থাকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে সেবা নিতে গিয়ে ফিরে যাচ্ছেন নাগরিকরা।

তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, আমাদের ভোটের রায় হাসিনা ছিনিয়ে নিয়েছিল, আদালতের রায়ে আমাদের ভোটের মর্যাদা ফিরে পেয়েছি। ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণার রায় আদালত দিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনও গেজেট দিয়েছে। স্থানীয় সরকারের লোকজন তাকে দায়িত্ব বুঝে দিচ্ছে না। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে।

ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে আসা যুবদল কর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইশরাক ভাই জনতার মেয়র। তাকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়াতে হবে অবিলম্বে। অন্যথায় আমরা মাঠ ছাড়ব না। কোনো টালবাহানা বরদাশত করা হবে না।’

এই দাবিতে সোমবার পঞ্চম দিনের মতো নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ইশরাকের সমর্থকরা। এর আগে গত শনি এবং রোববার সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেন তারা।

ডিএসসিসির ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে নাগরিকদের জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে অঞ্চলে-১ এর (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট, শাহবাগ) আঞ্চলিক কার্যালয় নগর ভবনে অবস্থিত। সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টায় নগর ভবনের সামনে যান কলাবাগানের ডলফিন মোড়ের বাসিন্দা মকবুল হোসেন। নগর ভবনের প্রধান ফটোকে তালা থাকায় তিনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।

আলাপকালে মকবুল হোসেন বলেন, নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চলে এটা জানতাম না। ছেলের জন্মনিবন্ধন করাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আন্দোলনের কারণে নগর ভবনেই ঢুকতে পারিনি। মেয়র হওয়ার আগে যে ব্যক্তি এমন জনভোগান্তি সৃষ্টি করে, তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না।

গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে লালবাগের কেল্লার মোড়ে শতাধিক লেগুনা যাত্রী পরিবহন করে। কিন্তু ব্লকেড কর্মসূচির কারণে লেগুনাগুলো ফুলবাড়িয়া থেকেই ফিরে যাচ্ছে। এ পথের যাত্রীদের গুলিস্তান থেকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

গুলিস্তান থেকে হেঁটে চাঁনখারপুল যাচ্ছিলেন কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ আন্দোলনের কারণে গুলিস্তানসহ আশপাশের সব সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। ইশরাকের বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা দরকার।

টানা পঞ্চম দিনের এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সরকারের সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইশরাক হোসেনকে ঢাকার মানুষ মেয়র হিসেবে দেখতে চায়। কারণ ২০২০ সালে তাদের ভোটেই তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার স্থলে আরেকজনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এখন নির্বাচন কমিশন আগের ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের শপথ পড়াতে কালক্ষেপণ করছেন। ঢাকাবাসীর দাবি দ্রুত ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো হোক। অন্যথায় তাদের এই আন্দোলন লাগাতার চলবে। নাগরিক ভোগান্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মশিউর রহমান তা এড়িয়ে যান।

এদিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকার কথা বলেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। আর আদালতের সিদ্ধান্ত আসার আগে ইশরাকের সমর্থকদের ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছেন তার সমর্থকরা। সেদিন থেকেই ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল।

নিজেকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নিতে শনিবার স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠিও দেন ইশরাক হোসেন। এরপর সন্ধ্যায় ডাকেন সংবাদ সম্মেলন। এক সাংবাদিক ইশরাকের কাছে জানতে চান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সঙ্গে তার কোনো বিরোধ আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বা অন্য কোনো উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত বিরোধও নাই, ব্যক্তিগত সম্পর্কও নাই।’

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।