বিনোদন ডেস্ক: সবারই মুখে মুখোশ! একটু পর মঞ্চে ডাক, মুখোশ খোলেন তারা। অচিরেই সংবাদ সম্মেলন হয়ে উঠল তারকাদের মিলনমেলা। একসঙ্গে এত তারকা! তরুণ নির্মাতা তানিম নূর ঘোষণা করলেন তার সিনেমার নাম ‘উৎসব’।
একসঙ্গে হাজির দেশের প্রথম সারির অভিনয়শিল্পীরা- জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, আজাদ আবুল কালাম, অপি করিম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সাদিয়া আয়মান। আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন না। তবে নির্মাতা নিশ্চিত করেছেন, সিনেমায় আছেন জয়া আহসান, তারিক আনাম খান, সৌম্য জ্যোতি। গল্প লিখেছেন তানিম নূর, আয়মান আসিব স্বাধীন, সুস্ময় সরকার ও সামিউল ভূঁইয়া। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন রাশেদ জামান।
শুরুতেই মঞ্চে আসেন সিনেমার পরিচালক ও দুই প্রযোজক। নির্মাতা জানান, এই সতর্কবার্তা নিছক চমক নয়; বরং সিনেমার মূল বার্তা। ‘উৎসব’ যেন এক আধুনিক চিঠি, পাঠানো হয়েছে নব্বইয়ের দশকের সোনালি সময় থেকে; যেখানে পরিবারের সবাই মিলে বসে নাটক বা সিনেমা দেখার রেওয়াজ ছিল। ওই চিত্রই আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। ঈদের ছুটিতে পরিবারকে নিয়ে হলে গিয়ে সিনেমা দেখার ওই অভ্যাসকে স্মরণ করাতেই এ উদ্যোগ।
স্মৃতির রঙে আঁকা গল্প, সঙ্গে ভূত: পরিচালক তানিম নূর জানান, তার বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় পরিবারকেন্দ্রিক নাটক-সিনেমার অভিজ্ঞতা আজও জীবন্ত। তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় পরিবারের সবাই মিলে যে নাটক বা সিনেমা দেখতাম, সেটি এখন আর হয় না। এখনকার প্রজন্ম সেটি দেখেই না। তাই ভাবলাম, এমন একটা সিনেমা বানাই- যেটা দেখে তারা বুঝতে পারে, সেই সময়টা কেমন ছিল।’
সিনেমার নাম কেন ‘উৎসব’? এবার ‘কাইজার’ নির্মাতা তানিম বলেন- ‘ঈদের মূল সুর। যেমন- আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ আর উৎসব- এ তিন ভাবনা থেকেই সিনেমার নাম রাখা হয়েছে উৎসব। এখন ঈদ ঘিরে পরিবার নিয়ে দেখার মতো গল্প খুব একটা তৈরি হয় না। ওই শূন্যতা থেকেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।’
আয়োজনে চরিত্রদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় জানানো হয়, সিনেমায় নাকি তিনজন ‘ভূত’ রয়েছে। ওই ভূতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান ও অপি করিম। সেখানে চঞ্চল সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনা ভূত, রুপালি পর্দায় নিয়ে যাওয়া ভূতের চরিত্রে জয়া আহসান এবং জীবনযুদ্ধের ভূত হিসেবে আছেন অপি করিম।
শিল্পীদের অভিজ্ঞতা: জাহিদ হাসান জানান, টানা রাত জেগে শুটিং করেছেন। চরিত্রের নাম ‘জাহাঙ্গীর’। তার কথায়- ‘এ ধরনের গল্প এখন খুব কম হয়। আমি নিজেও কাজ করে খুব তৃপ্ত। দর্শক সিনেমাটি উপভোগ করবেন।’ অপি করিমের মতে, ‘এই প্রজন্ম তো আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে দেখেইনি। যখন প্রস্তাব পেলাম, মনে হলো সুযোগটা মিস করা উচিত হবে না।’ আফসানা মিমি জানালেন, গল্পটা তাকে খুব টেনেছে। সবচেয়ে মুগ্ধ করেছে পোস্টারে লেখা কথাটি- পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ। এখন সত্যি এমন সিনেমা খুব দরকার। চঞ্চল চৌধুরীর মতে, ‘এ সিনেমার প্রতিটি চরিত্রই আলাদা করে বলার মতো। প্রতিটি চরিত্রই যেন একেকটি গল্প। উৎসব আমাদের সংস্কৃতির গল্প, মানুষের গল্প।’ আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘তানিমের মধ্যে যে আগ্রহ আর একাগ্রতা দেখেছি, এতেই বোঝা গেছে- এই সিনেমা শেষ না করে সে ছাড়বে না। সেই আত্মবিশ্বাস আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে।’ ইন্তেখাব দিনার জানান, তিনি ছিলেন শেষ মুহূর্তে কাস্ট হওয়া শিল্পীদের একজন। গল্পটা পড়ে নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। মনে হলো, এটা তো আমাদেরই গল্প।
‘উৎসব’ প্রযোজনা করেছে ডোপ প্রোডাকশনস, সহপ্রযোজক হিসেবে আছে চরকি। ডোপ প্রোডাকশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এটাই আমাদের প্রথম সিনেমা। ঈদ কেন্দ্র করে এমন একটি সিনেমা বানানো আমাদের স্বপ্ন ছিল। সবার সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।’ চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘এই সময়ের দর্শকের জন্য পরিবার নিয়ে দেখার মতো সিনেমা খুব দরকার ছিল। উৎসব সেই জায়গা থেকেই খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ।’
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ