ঢাকা ১০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশে জনতার ঢল

  • আপডেট সময় : ০৫:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার যমুনার সামনে এনসিপিসহ সমমনা দলগুলোর সমাবেশ- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার ও দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (৯ মে) জুমার নামাজের পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট-বড় মিছিল এসে যুক্ত হচ্ছে সমাবেশে। এছাড়া অর্ধশতাধিক প্রতিবাদকারী এখনো প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) থেকে রাজধানী ঢাকার রাজপথ উত্তাল হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে। রাত পেরিয়ে শুক্রবার সকালেও চলে বিক্ষোভ। এখন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশের মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দুপুরের পর বিক্ষোভ সমাবেশস্থলে একে একে আসতে থাকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের বড় বড় মিছিল। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সময় বাড়ার সাথে সাথে মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ছে।

সমাবেশে আসা বিক্ষোভকারীরা বলেন, আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল। তারা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাদের দুঃশাসনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। তাই আমরা তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী অন্যান্য সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান বজায় রাখতে দেখা গেছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। সেখান থেকেই শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশের মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েতের ডাক দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এতে দল মত নির্বিশেষে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শিবিরের একাত্মতা, যোগ দিলেন শীর্ষ নেতারা: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং গণহত্যার দায়ে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে বিচারের দাবিতে যমুনার সামনে চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির। শুধু নৈতিক সমর্থন নয়, সরাসরি উপস্থিত হয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন সংগঠনের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) মধ্যরাতে শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আন্দোলনকারীদের পাশে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

ছবি সংগৃহীত

দলীয় অবস্থান প্রসঙ্গে সিবগাতুল্লাহ বলেন, এই আন্দোলনের সঙ্গে আমরা নৈতিকভাবে সম্পূর্ণ একমত। গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ছাত্রসমাজের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন জরুরি। তাই আমরা আমাদের নেতাকর্মী এবং দেশের সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

এর আগে সিবগাতুল্লাহ সিগবা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যমুনায় আসতেছি। দেশের মানুষের জন্য আমরা আছি, ইনশাল্লাহ।’

এমনকি আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছে, শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। তিনি বলেন, “আওয়ামী দোসর আমলাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা উপদেষ্টারাও বিচারের আওতায় আসবে। এখন সময়, পুরো ব্যবস্থাকে দায়ী করে তার সংস্কার নিশ্চিত করার।

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে গণঅধিকার পরিষদের মিছিল: গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ। মিছিলটি রাজধানীর পুরানা পল্টন থেকে বের হলে প্রথমে বাধা দেয় পুলিশ। সেই বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে সামনে এগিয়ে যান দলটির নেতাকর্মীরা।

ছবি সংগৃহীত

শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর পুরানো পল্টনের বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, জুমার নামাজ শেষে গণপরিষদ অধিকারের নেতারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পুরানা পল্টন থেকে গুলিস্তানের দিকে যাওয়ার সময় তারা পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীরা পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে যান। পুলিশ কেন বাধা দিল, সেই কারণে অনেক নেতাকর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে অনেক কিছু বলতে শোনা যায়। মারমুখী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরে দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ সরে গেলে বিক্ষোভ মিছিলটি গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট হয়ে পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে  সিটি করপোরেশনের পানি স্প্রে : পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির সমাবেশ শুরু হয়। শুক্রবার (৯ মে) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের সমাবেশ শুরু হয়েছে। সমাবেশের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেছেন এনসিপি নেতা আশরাফ মাহাদী।

সমাবেশ শুরু হওয়ার পর দেখা যায়, প্রচণ্ড রোদের কারণে সমাবেশস্থল গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন আন্দোলনকারীরা। পরে সমাবেশস্থলের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সিটি করপোরেশনের স্প্রে কেনন দিয়ে পানি ছিটানো হয়। এদিন বিকেলে ৩টা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্প্রে কেনন পানি ছিটানো শুরু করে।

ছবি সংগৃহীত

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশস্থলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুইটি স্প্রে কেননের গাড়ি উপস্থিত হয়। এর মধ্যে একটি গাড়ি বিকেল ৩টা থেকে পানি ছিটানো শুরু করে, যা এই প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে। স্প্রে কেনন দিয়ে পানি ছিটানোর পর সমাবেশস্থলে উপস্থিত থাকা আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা যায়।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পানি ছিটিয়ে স্বস্তি দেওয়ায় আন্দোলনকারীরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এমন উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানায়। অনেক আন্দোলনকারী দাবি করেন তাদের এই আন্দোলন প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করছে।

এদিকে সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ ছাত্র-জনতাকে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামি বিভিন্ন দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসছেন। সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শুক্রবার বাদ জুমা মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারার সামনে একটি বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যমুনার পাশে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে উক্ত জমায়েতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশে জনতার ঢল

আপডেট সময় : ০৫:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার ও দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (৯ মে) জুমার নামাজের পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট-বড় মিছিল এসে যুক্ত হচ্ছে সমাবেশে। এছাড়া অর্ধশতাধিক প্রতিবাদকারী এখনো প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) থেকে রাজধানী ঢাকার রাজপথ উত্তাল হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে। রাত পেরিয়ে শুক্রবার সকালেও চলে বিক্ষোভ। এখন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশের মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দুপুরের পর বিক্ষোভ সমাবেশস্থলে একে একে আসতে থাকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের বড় বড় মিছিল। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সময় বাড়ার সাথে সাথে মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ছে।

সমাবেশে আসা বিক্ষোভকারীরা বলেন, আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল। তারা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাদের দুঃশাসনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। তাই আমরা তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী অন্যান্য সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান বজায় রাখতে দেখা গেছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। সেখান থেকেই শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশের মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারার সামনে বড় জমায়েতের ডাক দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এতে দল মত নির্বিশেষে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শিবিরের একাত্মতা, যোগ দিলেন শীর্ষ নেতারা: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং গণহত্যার দায়ে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে বিচারের দাবিতে যমুনার সামনে চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির। শুধু নৈতিক সমর্থন নয়, সরাসরি উপস্থিত হয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন সংগঠনের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) মধ্যরাতে শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আন্দোলনকারীদের পাশে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

ছবি সংগৃহীত

দলীয় অবস্থান প্রসঙ্গে সিবগাতুল্লাহ বলেন, এই আন্দোলনের সঙ্গে আমরা নৈতিকভাবে সম্পূর্ণ একমত। গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ছাত্রসমাজের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন জরুরি। তাই আমরা আমাদের নেতাকর্মী এবং দেশের সচেতন সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

এর আগে সিবগাতুল্লাহ সিগবা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যমুনায় আসতেছি। দেশের মানুষের জন্য আমরা আছি, ইনশাল্লাহ।’

এমনকি আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছে, শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। তিনি বলেন, “আওয়ামী দোসর আমলাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা উপদেষ্টারাও বিচারের আওতায় আসবে। এখন সময়, পুরো ব্যবস্থাকে দায়ী করে তার সংস্কার নিশ্চিত করার।

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে গণঅধিকার পরিষদের মিছিল: গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ। মিছিলটি রাজধানীর পুরানা পল্টন থেকে বের হলে প্রথমে বাধা দেয় পুলিশ। সেই বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে সামনে এগিয়ে যান দলটির নেতাকর্মীরা।

ছবি সংগৃহীত

শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর পুরানো পল্টনের বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, জুমার নামাজ শেষে গণপরিষদ অধিকারের নেতারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পুরানা পল্টন থেকে গুলিস্তানের দিকে যাওয়ার সময় তারা পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীরা পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে যান। পুলিশ কেন বাধা দিল, সেই কারণে অনেক নেতাকর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে অনেক কিছু বলতে শোনা যায়। মারমুখী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরে দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ সরে গেলে বিক্ষোভ মিছিলটি গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট হয়ে পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে  সিটি করপোরেশনের পানি স্প্রে : পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির সমাবেশ শুরু হয়। শুক্রবার (৯ মে) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের সমাবেশ শুরু হয়েছে। সমাবেশের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেছেন এনসিপি নেতা আশরাফ মাহাদী।

সমাবেশ শুরু হওয়ার পর দেখা যায়, প্রচণ্ড রোদের কারণে সমাবেশস্থল গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন আন্দোলনকারীরা। পরে সমাবেশস্থলের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সিটি করপোরেশনের স্প্রে কেনন দিয়ে পানি ছিটানো হয়। এদিন বিকেলে ৩টা থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্প্রে কেনন পানি ছিটানো শুরু করে।

ছবি সংগৃহীত

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশস্থলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুইটি স্প্রে কেননের গাড়ি উপস্থিত হয়। এর মধ্যে একটি গাড়ি বিকেল ৩টা থেকে পানি ছিটানো শুরু করে, যা এই প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে। স্প্রে কেনন দিয়ে পানি ছিটানোর পর সমাবেশস্থলে উপস্থিত থাকা আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি লক্ষ্য করা যায়।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পানি ছিটিয়ে স্বস্তি দেওয়ায় আন্দোলনকারীরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এমন উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানায়। অনেক আন্দোলনকারী দাবি করেন তাদের এই আন্দোলন প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করছে।

এদিকে সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ ছাত্র-জনতাকে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামি বিভিন্ন দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসছেন। সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শুক্রবার বাদ জুমা মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারার সামনে একটি বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যমুনার পাশে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে উক্ত জমায়েতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।