ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

আর্সেনালকে আবারো হারিয়ে ফাইনালে পিএসজি

  • আপডেট সময় : ০৭:১২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: গোলের ক্ষুধায় দাপুটে শুরু করল আর্সেনাল। দারুণ কয়েকটি সুযোগও পেল তারা; কিন্তু পারল না কাজে লাগাতে। এরপরই পাল্টা আঘাত হানল পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ল আরো। সুযোগ হারানোর মিছিলে শেষ দিকে একটি গোল ফিরিয়ে দিতে পারলেও, লড়াইয়ে ফিরতে পারল না মিকেল আর্তেতার দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম শিরোপার স্বপ্নে ফাইনালে উঠল প্যারিসের দলটি।

ঘরের মাঠে বুধবার সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতে, দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের অগ্রগামিতায় শিরোপার মঞ্চে জায়গা করে নিল লুইস এনরিকের দল। গত সপ্তাহে তারা আর্সেনালের মাঠে জিতেছিল ১-০ গোলে। প্রথম লেগের মতো এদিনও পিএসজি গোল পেয়ে যায় প্রথমার্ধে, ফাবিয়ান রুইসের নৈপুণ্যে। পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আশরাফ হাকিমি। অনেক সুযোগ নষ্টের আগে-পরে আর্সেনালের একমাত্র গোলটি করেন বুকায়ো সাকা। পুরো ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকা আর্সেনাল গোলের জন্য মোট শট নেয় ১৯টি, যার মধ্যে চারটি ছিল লক্ষ্যে। আর পিএসজি ১১টি শটের ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।

শিরোপা লড়াইয়ে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই আক্রমণ শাণায় আর্সেনাল। প্রথম চার মিনিটে পরিষ্কার দুটি সুযোগও পেয়ে যায় তারা। তৃতীয় মিনিটে ডেকলান রাইসের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পরের মিনিটে ডি-বক্সে জটলার মধ্যে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট হাঁটু দিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। চার মিনিট পর আবার আর্সেনালের আক্রমণ এবং দোন্নারুম্মার আরেকটি দুর্দান্ত সেভ। মার্টিন ওদেগোরের নিচু শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে আটকান ইতালিয়ান গোলরক্ষক। চাপের মুখে সপ্তদশ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল পিএসজি; কিন্তু ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি।

দিজিরে দুয়ের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল কোনাকুনি শট নেন জর্জিয়ার ফরোয়ার্ড খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া, গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও বল দূরের পোস্টে বাধা পায়। ২৩তম মিনিটে আরেকটি পাল্টা আক্রমণে দারুণ সুযোগ পেয়ে যান দুয়ে। কিন্তু সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়েও দুর্বল শটে হতাশ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। চার মিনিট পরই তারা দুর্দান্ত এক গোলে সফরকারীদের স্তব্ধ করে দেয়। বাঁ দিক থেকে ফ্রি কিকে উড়ে আসা বল বক্সে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি আর্সেনালের টমাস পার্টি। বুক দিয়ে বল নামিয়ে ডি-বক্সের মুখ থেকে বুলেট গতির শট নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রুইস, ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি দাভিদ রায়া। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন হয় ২-০, গ্যালারিতে স্বাগতিক সমর্থকদের গর্জন বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পিএসজিও হয়ে ওঠে আরো আত্মবিশ্বাসী। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা প্রতিপক্ষকে আরো কোণঠাসা করে ফেলতে পারত। তবে ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি বার্কোলা।

বিরতির পর চলা আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ৬৩তম মিনিটে আরো একবার দোন্নারুম্মার প্রাচীরে আটকে যায় আর্সেনালের প্রচেষ্টা। সাকার দূরের পোস্টে নেওয়া জোরাল শট অসাধারণ নৈপুণ্যে এক হাত দিয়ে আটকে দেন গোলরক্ষক। কিছুক্ষণের মধ্যে ফাইনালের টিকেট একরকম নিশ্চিত করার সুযোগ পেয়ে যায় পিএসজি। আর্সেনালের ডি-বক্সে তাদের তরুণ মিডফিল্ডার লুইস-স্কেলির হাতে বল লাগায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু ভিতিনিয়া দুর্বল শটে হতাশ করেন, ঝাঁপিয়ে আটকে দেন রায়া।

তিন মিনিট পরই অবশ্য অসাধারণ এক গোলে সব অনিশ্চয়তার প্রায় ইতি টেনে দেন হাকিমি। দুই মিনিট আগে বদলি নামা উসমান দেম্বেলের পাস ধরে, শরীরটাকে ঘুরিয়ে জোরাল শটে ঠিকানা খুঁজে নেন মরক্কোর ডিফেন্ডার। পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়ার পরই অল্প সময়ের জন্য হলেও লড়াইয়ে প্রাণ ফেরান সাকা। ৭৬তম মিনিটে ছয় গজ বক্সে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ সামলে, গোলরক্ষকের বাধা এড়িয়ে একটি গোল শোধ করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। চার মিনিট পর খেলার মোড়ও হয়তো ঘুরিয়ে দিতে পারতেন সাকা। রিকার্দোর ক্রস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে যান তিনি, দোন্নারুম্মা ছিলেন অন্যদিকে ঝুঁকে; ফাঁকা পোস্ট পেয়েও অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন সাকা! তাতে দলটির ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ সম্ভাবনাও যেন শেষ হয়ে যায়। বাকি সময়েও আর কিছু করতে পারেনি তারা। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠল পিএসজি। প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিল ২০২০ সালে, সেবার বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের। অধরা সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ মে মিউনিখে মাঠে নামবে পিএসজি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আর্সেনালকে আবারো হারিয়ে ফাইনালে পিএসজি

আপডেট সময় : ০৭:১২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: গোলের ক্ষুধায় দাপুটে শুরু করল আর্সেনাল। দারুণ কয়েকটি সুযোগও পেল তারা; কিন্তু পারল না কাজে লাগাতে। এরপরই পাল্টা আঘাত হানল পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ল আরো। সুযোগ হারানোর মিছিলে শেষ দিকে একটি গোল ফিরিয়ে দিতে পারলেও, লড়াইয়ে ফিরতে পারল না মিকেল আর্তেতার দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম শিরোপার স্বপ্নে ফাইনালে উঠল প্যারিসের দলটি।

ঘরের মাঠে বুধবার সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতে, দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের অগ্রগামিতায় শিরোপার মঞ্চে জায়গা করে নিল লুইস এনরিকের দল। গত সপ্তাহে তারা আর্সেনালের মাঠে জিতেছিল ১-০ গোলে। প্রথম লেগের মতো এদিনও পিএসজি গোল পেয়ে যায় প্রথমার্ধে, ফাবিয়ান রুইসের নৈপুণ্যে। পরে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আশরাফ হাকিমি। অনেক সুযোগ নষ্টের আগে-পরে আর্সেনালের একমাত্র গোলটি করেন বুকায়ো সাকা। পুরো ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকা আর্সেনাল গোলের জন্য মোট শট নেয় ১৯টি, যার মধ্যে চারটি ছিল লক্ষ্যে। আর পিএসজি ১১টি শটের ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।

শিরোপা লড়াইয়ে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই আক্রমণ শাণায় আর্সেনাল। প্রথম চার মিনিটে পরিষ্কার দুটি সুযোগও পেয়ে যায় তারা। তৃতীয় মিনিটে ডেকলান রাইসের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পরের মিনিটে ডি-বক্সে জটলার মধ্যে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট হাঁটু দিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। চার মিনিট পর আবার আর্সেনালের আক্রমণ এবং দোন্নারুম্মার আরেকটি দুর্দান্ত সেভ। মার্টিন ওদেগোরের নিচু শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে আটকান ইতালিয়ান গোলরক্ষক। চাপের মুখে সপ্তদশ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল পিএসজি; কিন্তু ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি।

দিজিরে দুয়ের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল কোনাকুনি শট নেন জর্জিয়ার ফরোয়ার্ড খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া, গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও বল দূরের পোস্টে বাধা পায়। ২৩তম মিনিটে আরেকটি পাল্টা আক্রমণে দারুণ সুযোগ পেয়ে যান দুয়ে। কিন্তু সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়েও দুর্বল শটে হতাশ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। চার মিনিট পরই তারা দুর্দান্ত এক গোলে সফরকারীদের স্তব্ধ করে দেয়। বাঁ দিক থেকে ফ্রি কিকে উড়ে আসা বল বক্সে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি আর্সেনালের টমাস পার্টি। বুক দিয়ে বল নামিয়ে ডি-বক্সের মুখ থেকে বুলেট গতির শট নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রুইস, ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি দাভিদ রায়া। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন হয় ২-০, গ্যালারিতে স্বাগতিক সমর্থকদের গর্জন বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পিএসজিও হয়ে ওঠে আরো আত্মবিশ্বাসী। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা প্রতিপক্ষকে আরো কোণঠাসা করে ফেলতে পারত। তবে ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে বল পেয়েও প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি বার্কোলা।

বিরতির পর চলা আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ৬৩তম মিনিটে আরো একবার দোন্নারুম্মার প্রাচীরে আটকে যায় আর্সেনালের প্রচেষ্টা। সাকার দূরের পোস্টে নেওয়া জোরাল শট অসাধারণ নৈপুণ্যে এক হাত দিয়ে আটকে দেন গোলরক্ষক। কিছুক্ষণের মধ্যে ফাইনালের টিকেট একরকম নিশ্চিত করার সুযোগ পেয়ে যায় পিএসজি। আর্সেনালের ডি-বক্সে তাদের তরুণ মিডফিল্ডার লুইস-স্কেলির হাতে বল লাগায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু ভিতিনিয়া দুর্বল শটে হতাশ করেন, ঝাঁপিয়ে আটকে দেন রায়া।

তিন মিনিট পরই অবশ্য অসাধারণ এক গোলে সব অনিশ্চয়তার প্রায় ইতি টেনে দেন হাকিমি। দুই মিনিট আগে বদলি নামা উসমান দেম্বেলের পাস ধরে, শরীরটাকে ঘুরিয়ে জোরাল শটে ঠিকানা খুঁজে নেন মরক্কোর ডিফেন্ডার। পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়ার পরই অল্প সময়ের জন্য হলেও লড়াইয়ে প্রাণ ফেরান সাকা। ৭৬তম মিনিটে ছয় গজ বক্সে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ সামলে, গোলরক্ষকের বাধা এড়িয়ে একটি গোল শোধ করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড। চার মিনিট পর খেলার মোড়ও হয়তো ঘুরিয়ে দিতে পারতেন সাকা। রিকার্দোর ক্রস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে যান তিনি, দোন্নারুম্মা ছিলেন অন্যদিকে ঝুঁকে; ফাঁকা পোস্ট পেয়েও অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন সাকা! তাতে দলটির ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ সম্ভাবনাও যেন শেষ হয়ে যায়। বাকি সময়েও আর কিছু করতে পারেনি তারা। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠল পিএসজি। প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিল ২০২০ সালে, সেবার বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের। অধরা সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ মে মিউনিখে মাঠে নামবে পিএসজি।