ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫
বিশ্লেষণ

আরো সংঘাতের ঝুঁকিতে পাক-ভারত উত্তেজনা

  • আপডেট সময় : ০৯:১২:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক: পাকিস্তানে ভারতের বিমান হামলার পর দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে যুদ্ধাবস্থার ঝুঁকি বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা। মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মির অঞ্চলে ছয়টি স্থানে ভারতীয় বিমান হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই বিশ্লেষকরা এবং সাংবাদিকরা পরিস্থিতি নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন, যেগুলো থেকে ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও প্রস্তুতির চিত্র ফুটে উঠছে।

ভারতের পদক্ষেপের সমালোচনা করে পাকিস্তানি টেলিভিশন জিও টিভির সিনিয়র বিশ্লেষক মজহার আব্বাস বলেন, পহেলগাঁও হামলার ব্যাপারে ভারত এখনো পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ দেয়নি। বরং না প্রমাণ দিয়েই আবার নতুন অভিযান চালিয়েছে। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বলেন, ওরা সিনেমা বানিয়েছে, আমরা শুধু ট্রেলার দেখিয়েছি। ওরা যদি যুদ্ধ চায়, আমরা প্রস্তুত। ৭ মে পাকিস্তানের জন্য গর্বের দিন। ভারতকে আমরা শুধু যুদ্ধের ময়দানে নয়, কূটনৈতিক ও মিডিয়া যুদ্ধেও পরাজিত করেছি।

পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার, সামাজির যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া একাধিক পোস্টে হিনা খার লিখেছেন, ভারতের একাধিক হামলা প্রমাণ করে, দেশটি আন্তর্জাতিক আইনকে তোয়াক্কা করছে না। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের শুধু প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকারই নয়, তার সক্ষমতাও রয়েছে। আর এখন আমরা সেটাই করছি। পাকিস্তানি সিনিয়র সাংবাদিক হামিদ মীর মন্তব্য করেন, মোদি সরকারের কৌশল ব্যুমেরাং হয়েছে।

ভারত দাবি করেছে তারা সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করেছে, কিন্তু ভিডিও প্রমাণ বলছে, সাধারণ নাগরিকরাই নিহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব বুঝে গেছে পাকিস্তান এই সংঘাত শুরু করেনি। ভারত সাধারণ মানুষকে টার্গেট করেছে, আর পাকিস্তান জবাবে ভারতীয় সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। নৈতিক অবস্থানে পাকিস্তান এগিয়ে আছে। হামিদ মীর আরও বলেন, ভারতের ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিতের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিলের কথা ভাবা উচিত। দক্ষিণ এশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে মার্কিন বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন ভারতের এবারের হামলা ২০১৯ সালের চেয়েও বড় পরিসরে হয়েছে।

পাকিস্তানের জবাব ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা সেটিও ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি বিস্তৃত। তিনি সতর্ক করে বলেন, উত্তেজনা এখন এমন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে যা ২০১৯ সালের সংকটকেও ছাড়িয়ে গেছে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুই দেশেরই শক্তিশালী সেনাবাহিনী আছে, যারা পরমাণু অস্ত্র ছাড়াও সাধারণ সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে পিছপা নয়। তাই উত্তেজনা আরও বাড়ার ঝুঁকি বাস্তব এবং তা দ্রুত আরও বাড়তে পারে। সার্বিক বিশ্লেষণ দেখা যাচ্ছে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি কূটনৈতিক ও মিডিয়া লড়াইতেও দুই পক্ষ সক্রিয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি দ্রুত আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ না আসে, তাহলে এই সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্লেষণ

আরো সংঘাতের ঝুঁকিতে পাক-ভারত উত্তেজনা

আপডেট সময় : ০৯:১২:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: পাকিস্তানে ভারতের বিমান হামলার পর দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে যুদ্ধাবস্থার ঝুঁকি বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা। মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মির অঞ্চলে ছয়টি স্থানে ভারতীয় বিমান হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই বিশ্লেষকরা এবং সাংবাদিকরা পরিস্থিতি নিয়ে মত প্রকাশ করেছেন, যেগুলো থেকে ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও প্রস্তুতির চিত্র ফুটে উঠছে।

ভারতের পদক্ষেপের সমালোচনা করে পাকিস্তানি টেলিভিশন জিও টিভির সিনিয়র বিশ্লেষক মজহার আব্বাস বলেন, পহেলগাঁও হামলার ব্যাপারে ভারত এখনো পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ দেয়নি। বরং না প্রমাণ দিয়েই আবার নতুন অভিযান চালিয়েছে। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বলেন, ওরা সিনেমা বানিয়েছে, আমরা শুধু ট্রেলার দেখিয়েছি। ওরা যদি যুদ্ধ চায়, আমরা প্রস্তুত। ৭ মে পাকিস্তানের জন্য গর্বের দিন। ভারতকে আমরা শুধু যুদ্ধের ময়দানে নয়, কূটনৈতিক ও মিডিয়া যুদ্ধেও পরাজিত করেছি।

পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার, সামাজির যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া একাধিক পোস্টে হিনা খার লিখেছেন, ভারতের একাধিক হামলা প্রমাণ করে, দেশটি আন্তর্জাতিক আইনকে তোয়াক্কা করছে না। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের শুধু প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকারই নয়, তার সক্ষমতাও রয়েছে। আর এখন আমরা সেটাই করছি। পাকিস্তানি সিনিয়র সাংবাদিক হামিদ মীর মন্তব্য করেন, মোদি সরকারের কৌশল ব্যুমেরাং হয়েছে।

ভারত দাবি করেছে তারা সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করেছে, কিন্তু ভিডিও প্রমাণ বলছে, সাধারণ নাগরিকরাই নিহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব বুঝে গেছে পাকিস্তান এই সংঘাত শুরু করেনি। ভারত সাধারণ মানুষকে টার্গেট করেছে, আর পাকিস্তান জবাবে ভারতীয় সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। নৈতিক অবস্থানে পাকিস্তান এগিয়ে আছে। হামিদ মীর আরও বলেন, ভারতের ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিতের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিলের কথা ভাবা উচিত। দক্ষিণ এশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ে মার্কিন বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন ভারতের এবারের হামলা ২০১৯ সালের চেয়েও বড় পরিসরে হয়েছে।

পাকিস্তানের জবাব ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা সেটিও ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি বিস্তৃত। তিনি সতর্ক করে বলেন, উত্তেজনা এখন এমন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে যা ২০১৯ সালের সংকটকেও ছাড়িয়ে গেছে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুই দেশেরই শক্তিশালী সেনাবাহিনী আছে, যারা পরমাণু অস্ত্র ছাড়াও সাধারণ সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে পিছপা নয়। তাই উত্তেজনা আরও বাড়ার ঝুঁকি বাস্তব এবং তা দ্রুত আরও বাড়তে পারে। সার্বিক বিশ্লেষণ দেখা যাচ্ছে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি কূটনৈতিক ও মিডিয়া লড়াইতেও দুই পক্ষ সক্রিয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি দ্রুত আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ না আসে, তাহলে এই সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।