ঢাকা ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

এবারের ইউপি নির্বাচনে ভোটের টার্নআউট ভালো : মাহবুব তালুকদার

  • আপডেট সময় : ০১:৩৫:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটের টার্নআউট মোটামুটি ভালো। কিন্তু বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ইউনিয়ন পরিষদে ৪৩ জন প্রার্থী নির্বাচন না করেই চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হওয়া এই নির্বাচনকে স্নান করে দিয়েছে।’
গতকাল বুধবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে ‘সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে আমার কথা’ শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
৯টি পৌরসভায় তিন জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন হচ্ছে অনেকের মধ্যে বাছাই। সেহেতু বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচিত হওয়া বলা যায় কি? বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনে বহুদলের অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ দিনের জন্য আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করি। কয়েকজন সাংবাদিক এ সময়ে অনুষ্ঠিত ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও ৯টি পৌরসভা নির্বাচনে আমার সাফল্য ও ব্যর্থতা জানতে চান। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে আকস্মিকভাবে নির্বাচনি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তারপরও কিছুকথা থেকে যায়। উল্লিখিত নির্বাচনে তিন জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি সর্বদা বলে এসেছি, জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয়। তবু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ে সহিংসতা রোধ করা গেলো না। নির্বাচনে ঘটনা বা দুর্ঘটনা যা-ই হোক না কেন, নির্বাচন কমিশনের ওপরই দায় এসে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সকল দুর্ঘটনা, অর্থাৎ বিশৃঙ্খলা, অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারা, প্রতিপক্ষকে হুমকি প্রদান ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমার দায়িত্বপালনকালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনানুগভাবে দায়িত্বপালনের জন্য বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। যেসব স্থানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, এর জন্য যারা দায়ী, প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের আটক করা হয়েছে। যারা অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদেরও আটক করা হয়েছে। অধিকতর তদন্ত করে আরও অনেককে আইনের আওতায় আনা হবে। সহিংসতা রোধে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি এবং হবে না।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘‘নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে একজন সংসদ সদস্যকে সতর্কবার্তা পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কারণ বিশ্লেষণ করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য। ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতাও আমার কাছে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত মনে হয়। এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা জড়িত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। ১৫ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে’ মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নীরবতা আমাকে হতাশ করেছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শামিল হতে অনীহা প্রকাশ করছি?’’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এবারের ইউপি নির্বাচনে ভোটের টার্নআউট ভালো : মাহবুব তালুকদার

আপডেট সময় : ০১:৩৫:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটের টার্নআউট মোটামুটি ভালো। কিন্তু বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ইউনিয়ন পরিষদে ৪৩ জন প্রার্থী নির্বাচন না করেই চেয়ারম্যান পদে অভিষিক্ত হওয়া এই নির্বাচনকে স্নান করে দিয়েছে।’
গতকাল বুধবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে ‘সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে আমার কথা’ শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
৯টি পৌরসভায় তিন জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন হচ্ছে অনেকের মধ্যে বাছাই। সেহেতু বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়াকে নির্বাচিত হওয়া বলা যায় কি? বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনে বহুদলের অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ দিনের জন্য আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করি। কয়েকজন সাংবাদিক এ সময়ে অনুষ্ঠিত ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও ৯টি পৌরসভা নির্বাচনে আমার সাফল্য ও ব্যর্থতা জানতে চান। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে আকস্মিকভাবে নির্বাচনি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তারপরও কিছুকথা থেকে যায়। উল্লিখিত নির্বাচনে তিন জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমি সর্বদা বলে এসেছি, জীবনের চেয়ে নির্বাচন বড় নয়। তবু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ে সহিংসতা রোধ করা গেলো না। নির্বাচনে ঘটনা বা দুর্ঘটনা যা-ই হোক না কেন, নির্বাচন কমিশনের ওপরই দায় এসে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সকল দুর্ঘটনা, অর্থাৎ বিশৃঙ্খলা, অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারা, প্রতিপক্ষকে হুমকি প্রদান ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমার দায়িত্বপালনকালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনানুগভাবে দায়িত্বপালনের জন্য বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। যেসব স্থানে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, এর জন্য যারা দায়ী, প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের আটক করা হয়েছে। যারা অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদেরও আটক করা হয়েছে। অধিকতর তদন্ত করে আরও অনেককে আইনের আওতায় আনা হবে। সহিংসতা রোধে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি এবং হবে না।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘‘নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে একজন সংসদ সদস্যকে সতর্কবার্তা পর্যন্ত পাঠানো হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের কারণ বিশ্লেষণ করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য। ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতাও আমার কাছে গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত মনে হয়। এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা জড়িত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। ১৫ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে’ মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নীরবতা আমাকে হতাশ করেছে। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমরা কি গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় শামিল হতে অনীহা প্রকাশ করছি?’’