প্রত্যাশা ডেস্ক: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বজ্রপাতে তিন স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে উপজেলার চরটেকী এলাকায় এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঝিনাইদহে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
পাকুন্দিয়ায় নিহতরা হলেন, উপজেলার চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ইরিনা (১৫), একই গ্রামের বাদল মিয়ার মেয়ে প্রিয়া (১৫) ও একই গ্রামের বোরহান উদ্দিনের মেয়ে বর্ষা (১৫)। তারা সবাই চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঝড়সহ বৃষ্টি শুরু হয়। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চরটেকী নামাপাড়ায় ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে তিন স্কুল শিক্ষার্থী। এসময় ঝড়ের সঙ্গে বজ্রপাত হলে গুরুতর আহত হন ওই তিনজন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে দ্রুত পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বর্ষারও মৃত্যু হয়।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বজ্রপাতে তিন স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, হাসপাতালে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হয় এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাফন-কাফনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।
ঝিনাইদহে দুই কৃষকের মৃত্যু: ঝিনাইদহে বজ্রপাতে মিরাজুল ইসলাম (২৫) ও অলিয়ার রহমান (৫০) নামে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মাঠে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন তারা।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ১১টার দিকে সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের পশ্চিম বিষয়খালী ও মহারাজপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। একইদিনে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত মিরাজুল ইসলাম গান্না ইউনিয়নের পশ্চিম বিষয়খালী গ্রামের শাহাজ্জেল হোসেনের ছেলে। অপর নিহত অলিয়ার রহমান মহারাজপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য সহকারী জাহাঙ্গীর আলম ও নিহতের স্বজনরা জানান, সকালে মাঠে ধান বাঁধতে যান মিরাজুল। সকাল সাড়ে ১০টার পরে আকষ্মিক বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় অন্যরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেও বজ্রপাতের কবলে পড়েন মিরাজুল। পরে আহতাবস্থায় তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে অপর নিহত অলিয়ার রহমানের স্বজনরা জানান, সকালে মাঠে ধান গোছানোর কাজে বাড়ি থেকে বের হন অলিয়ার। বেলা ১১টার দিকে তুমুল বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় মাঠে থাকাবস্থায় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। এসময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত খালিদ হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বজ্রপাতে আহত দুই কৃষক হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বজ্রপাতের শিকার হয়ে দুই কৃষক নিহত হয়েছেন। মরদেহ দুটি সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। পুলিশ এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বজ্রপাতে দুই কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।