ঢাকা ০৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

১২৯ বছর বয়সে মারা গেছেন বিশ্বের প্রবীণতম চিকিৎসক

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী চিকিৎসক শিবানন্দ গোস্বামী। গত শনিবার (৩ মে) রাত সাড়ে নটায় উত্তরপ্রদেশের কাশিধামে ১২৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

পদ্মশ্রী খেতাবপ্রাপ্ত ভারতীয় এই নাগরিকের আদিবাস বাংলাদেশে। ১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার হরিতলা গ্রামে শ্রীনাথ গোস্বামী এবং ভগবতী দেবীর ঘরে জন্ম নেন শিবানন্দ।

চরম দারিদ্র্যের কারণে চার বছর বয়সে পরিবারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপের বিখ্যাত সন্ন্যাসী স্বামী ওমকারনন্দের কাছে দিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় শিবানন্দকে। দুই বছর পর বাড়ি এসে দেখেন, খাবার না পেয়ে তার কয়েকছরের বড় বোন মারা গেছেন। এর ৭ দিন বাদে তার মা-বাবা একই দিনে মারা যান। সে সময় শিবানন্দের বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর।

পিতামাতার শ্রাদ্ধ শেষ করে ১৯০১ সালে নবদ্বীপে চলে যান তিনি। সেখানে ফের পড়াশোনা শুরু করেন । পরবর্তীতে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯২৫ সালে তিনি ব্রিটেন যান। সেখান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

গুরু ওমকারনন্দের কাছ থেকে যোগশিক্ষা লাভ করেছেন শিবানন্দ। সেখানকার দুর্গাকু-েই স্বামী শিবানন্দের আশ্রম রয়েছে। গত ১০০ বছর ধরে প্রয়াগরাজ, নাসিক, উজ্জয়ন এবং হরিদ্বারে কুম্ভমেলায় অংশ নিয়েছেন নিয়মিত।

যোগব্যায়ামের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য স্বামী শিবানন্দ ২০২২ সালের মার্চ মাসে ভারত সরকার কর্তৃক দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া, শিবানন্দের ঝুলিতে আছে যোগরতœ পুরস্কার, বসুন্ধরা রতœ পুরস্কার ইত্যাদি।

ভারতের বারানসিতে বাস করতেন চিরকুমার স্বামী শিবানন্দ। মানব সেবাই ছিল তার ব্রত। ভক্তদের দেয়া টাকা পয়সা উনি গ্রহণ করতেন না। জীবিত অবস্থায় তিনি ছিলেন নীরোগ। এই বয়সেও চশমা ছাড়াই পড়তে পারতেন।

স্বাস্থ্যের প্রতি ছিলেন খুবই যতœশীল ছিলেন শিবানন্দ । নিয়মিত যোগব্যায়াম চর্চা করতেন। ছিলেন স্বল্পাহারী, পরিহার করতে তৈলাক্ত খাবার। অনেক সময় দুধ এবং ফলও এড়িয়ে চলতেন।

২০১৯ সালে প্রথম হবিগঞ্জে এসেছিলেন তিনি। ২০২৪ সালে আবার আসেন বাহুবলের হরিতলা গ্রামে। বারানসিতে (কাশি) ভক্তের উপহার দেওয়া ফ্ল্যাট উনি ছেড়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পুণ্যার্থীদের জন্য। সেখানে বিনামূল্যে এক মাস থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছিলেন তিনি।

বিদেশি শিষ্য ও ভক্তদের আমন্ত্রণে তিনি যুক্তরাজ্য, গ্রিস, ফ্রান্স, স্পেন, অস্ট্রিয়া, ইতালি, হাঙ্গেরি, রাশিয়া, পোল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, বুলগেরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র অর্ধশতাধিক দেশ সফর করেছিলেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

১২৯ বছর বয়সে মারা গেছেন বিশ্বের প্রবীণতম চিকিৎসক

আপডেট সময় : ০৬:৫৩:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী চিকিৎসক শিবানন্দ গোস্বামী। গত শনিবার (৩ মে) রাত সাড়ে নটায় উত্তরপ্রদেশের কাশিধামে ১২৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

পদ্মশ্রী খেতাবপ্রাপ্ত ভারতীয় এই নাগরিকের আদিবাস বাংলাদেশে। ১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার হরিতলা গ্রামে শ্রীনাথ গোস্বামী এবং ভগবতী দেবীর ঘরে জন্ম নেন শিবানন্দ।

চরম দারিদ্র্যের কারণে চার বছর বয়সে পরিবারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপের বিখ্যাত সন্ন্যাসী স্বামী ওমকারনন্দের কাছে দিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় শিবানন্দকে। দুই বছর পর বাড়ি এসে দেখেন, খাবার না পেয়ে তার কয়েকছরের বড় বোন মারা গেছেন। এর ৭ দিন বাদে তার মা-বাবা একই দিনে মারা যান। সে সময় শিবানন্দের বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর।

পিতামাতার শ্রাদ্ধ শেষ করে ১৯০১ সালে নবদ্বীপে চলে যান তিনি। সেখানে ফের পড়াশোনা শুরু করেন । পরবর্তীতে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯২৫ সালে তিনি ব্রিটেন যান। সেখান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

গুরু ওমকারনন্দের কাছ থেকে যোগশিক্ষা লাভ করেছেন শিবানন্দ। সেখানকার দুর্গাকু-েই স্বামী শিবানন্দের আশ্রম রয়েছে। গত ১০০ বছর ধরে প্রয়াগরাজ, নাসিক, উজ্জয়ন এবং হরিদ্বারে কুম্ভমেলায় অংশ নিয়েছেন নিয়মিত।

যোগব্যায়ামের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য স্বামী শিবানন্দ ২০২২ সালের মার্চ মাসে ভারত সরকার কর্তৃক দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া, শিবানন্দের ঝুলিতে আছে যোগরতœ পুরস্কার, বসুন্ধরা রতœ পুরস্কার ইত্যাদি।

ভারতের বারানসিতে বাস করতেন চিরকুমার স্বামী শিবানন্দ। মানব সেবাই ছিল তার ব্রত। ভক্তদের দেয়া টাকা পয়সা উনি গ্রহণ করতেন না। জীবিত অবস্থায় তিনি ছিলেন নীরোগ। এই বয়সেও চশমা ছাড়াই পড়তে পারতেন।

স্বাস্থ্যের প্রতি ছিলেন খুবই যতœশীল ছিলেন শিবানন্দ । নিয়মিত যোগব্যায়াম চর্চা করতেন। ছিলেন স্বল্পাহারী, পরিহার করতে তৈলাক্ত খাবার। অনেক সময় দুধ এবং ফলও এড়িয়ে চলতেন।

২০১৯ সালে প্রথম হবিগঞ্জে এসেছিলেন তিনি। ২০২৪ সালে আবার আসেন বাহুবলের হরিতলা গ্রামে। বারানসিতে (কাশি) ভক্তের উপহার দেওয়া ফ্ল্যাট উনি ছেড়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পুণ্যার্থীদের জন্য। সেখানে বিনামূল্যে এক মাস থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছিলেন তিনি।

বিদেশি শিষ্য ও ভক্তদের আমন্ত্রণে তিনি যুক্তরাজ্য, গ্রিস, ফ্রান্স, স্পেন, অস্ট্রিয়া, ইতালি, হাঙ্গেরি, রাশিয়া, পোল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, বুলগেরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র অর্ধশতাধিক দেশ সফর করেছিলেন।