সাতক্ষীরা সংবাদদাতা :আবহাওয়া ও মাটির বিশেষ গুণাগুণের কারণে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় আগেভাগেই পরিপক্ব হয় সাতক্ষীরার আম। এর মধ্যে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালি আম দেশ-বিদেশে বেশ কদর অর্জন করেছে। ফলে বাজারে আগে ওঠায় তুলনামূলক ভালো দাম পান এখানকার চাষিরা। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ হাজার আমবাগান রয়েছে। চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৫০০ মেট্রিক টন আমের গুণগত মান রক্ষায় নির্ধারণ করা হয়েছে বাজারজাতের সময়সূচি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ ৫ মে, হিমসাগর ২০ মে, ল্যাংড়া ২৭ মে এবং আম্রপালি ৫ জুন থেকে বাজারজাত করা যাবে।
ইতোমধ্যে গোবিন্দভোগ আম পাকতে শুরু করেছে এবং আগেভাগেই বাজারে উঠেছে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে চরম ক্ষোভ জানিয়েছেন আমচাষিরা। তাদের অভিযোগ, সাতক্ষীরায় একটি মাত্র বড় বাজার থাকায় সবাইকে সেখানেই আম বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজার ও সংলগ্ন রাস্তায় পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বিক্রির সময় চাষিদের পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে। এতে করে ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। চাষিদের দাবি, জেলায় আরও কয়েকটি বাজার চালু করা এবং খোলা মাঠে ভ্রাম্যমাণ পাইকারি বাজার বসানোর ব্যবস্থা করা হলে তারা ভালো দাম পেতেন। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকার উদ্যোগ নিলে সাতক্ষীরার আমচাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবে। এতে চাষি বাড়বে এবং বেকারদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
এক ট্রাক অপরিপক্ব আম ধ্বংস
এদিকে সাতক্ষীরায় অপরিপক্ব আম বাজারজাতের চেষ্টার সময় এক ট্রাক আম জব্দ করে ধ্বংস করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে এই অভিযান চালানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে বিষয়টি শনাক্ত করেন। পরে তারা আমবাহী একটি ট্রাক আটক করে জেলা প্রশাসনকে খবর দেন। ট্রাকটিতে মোট ৪০০ ক্যারেট গোবিন্দভোগ জাতের অপরিপক্ব আম ছিল। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ বলেন, ‘সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ আম বাজারজাতের জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু তার আগেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আম বাজারজাতের চেষ্টা করছিলেন। ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সহায়তায় ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং আমগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।’ অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও সাতক্ষীরা বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা।