ঢাকা ০১:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
‘সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান চীনের

পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত!

  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উত্তেজনা নিরসনসহ সংকট সমাধানের আহ্বান জানালেও ভারত পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। রবিবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মিরে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পাশাপাশি দিল্লিতে অবস্থিত শতাধিক কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়মিত আলোচনা চালাচ্ছে। ভারতের সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে এই আলোচনা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চারজন কূটনৈতিক কর্মকর্তা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মোদি সরাসরি পাকিস্তানের নাম না নিলেও “সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস করার” এবং “কঠোর শাস্তি” দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় টানা কয়েক রাত ধরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গোলাগুলি হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কেউ বলেছেন, গত তিন রাত ধরেই গোলাগুলি হয়েছে, আবার কেউ বলেছেন— গত তিন রাতের মধ্যে দু’রাতে গোলাগুলি হয়েছে। অন্যদিকে কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে এবং সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতদের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। সেখানে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ভারত।

সেই সঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের কিছু কর্মী ও ভারতে সফররত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো, বিশেষ করে কাশ্মির সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতে মুসলিমবিরোধী মনোভাবও বাড়ছে। কাশ্মিরের বাইরে অন্য শহরগুলোতে পড়াশোনা করা কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হয়রানির মুখে পড়ছেন এবং অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
‘সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান চীনের
এদিকে ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে টানা চতুর্থ রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলির পর উভয় দেশকে ‘সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে চীন। গতকাল সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র গুওজিয়াকুন বলেন, ‘চীন আশা করে, উভয় পক্ষ সংযম প্রদর্শন করবে, একে অপরের সঙ্গে সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক সমস্যাগুলো সঠিকভাবে সমাধান করবে এবং যৌথভাবে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত করতে সাহায্য করবে এমন সকল পদক্ষেপকে চীন স্বাগত জানায়।’ গত ২২ এপ্রিলের ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন এবং ২০০০ সালের পর থেকে এটি বিতর্কিত হিমালয় অঞ্চলে সবচেয়ে মারাত্মক সশস্ত্র হামলাগুলোর মধ্যে একটি। এই হামলায় ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। যদিও এই দাবি ইসলামাবাদ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে টানা চতুর্থ রাতের মতো গুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘২৭-২৮ এপ্রিল রাতে… পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পোস্টগুলো নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে বিনা উস্কানিতে ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ শুরু করে’। এতে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং ইসলামাবাদ তাৎক্ষণিকভাবে গুলিবর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। সূত্র: ডন

 

 

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান চীনের

পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত!

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উত্তেজনা নিরসনসহ সংকট সমাধানের আহ্বান জানালেও ভারত পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। রবিবার নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মিরে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পাশাপাশি দিল্লিতে অবস্থিত শতাধিক কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়মিত আলোচনা চালাচ্ছে। ভারতের সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে এই আলোচনা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চারজন কূটনৈতিক কর্মকর্তা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মোদি সরাসরি পাকিস্তানের নাম না নিলেও “সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস করার” এবং “কঠোর শাস্তি” দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় টানা কয়েক রাত ধরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গোলাগুলি হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কেউ বলেছেন, গত তিন রাত ধরেই গোলাগুলি হয়েছে, আবার কেউ বলেছেন— গত তিন রাতের মধ্যে দু’রাতে গোলাগুলি হয়েছে। অন্যদিকে কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে এবং সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতদের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। সেখানে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ভারত।

সেই সঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের কিছু কর্মী ও ভারতে সফররত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো, বিশেষ করে কাশ্মির সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতে মুসলিমবিরোধী মনোভাবও বাড়ছে। কাশ্মিরের বাইরে অন্য শহরগুলোতে পড়াশোনা করা কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হয়রানির মুখে পড়ছেন এবং অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
‘সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান চীনের
এদিকে ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে টানা চতুর্থ রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলির পর উভয় দেশকে ‘সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে চীন। গতকাল সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র গুওজিয়াকুন বলেন, ‘চীন আশা করে, উভয় পক্ষ সংযম প্রদর্শন করবে, একে অপরের সঙ্গে সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক সমস্যাগুলো সঠিকভাবে সমাধান করবে এবং যৌথভাবে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত করতে সাহায্য করবে এমন সকল পদক্ষেপকে চীন স্বাগত জানায়।’ গত ২২ এপ্রিলের ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন এবং ২০০০ সালের পর থেকে এটি বিতর্কিত হিমালয় অঞ্চলে সবচেয়ে মারাত্মক সশস্ত্র হামলাগুলোর মধ্যে একটি। এই হামলায় ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। যদিও এই দাবি ইসলামাবাদ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে টানা চতুর্থ রাতের মতো গুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘২৭-২৮ এপ্রিল রাতে… পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পোস্টগুলো নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে বিনা উস্কানিতে ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ শুরু করে’। এতে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং ইসলামাবাদ তাৎক্ষণিকভাবে গুলিবর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। সূত্র: ডন