ঢাকা ০১:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৪ মে ২০২৫

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহ্য করা যাবে না কিছু আচরণ

  • আপডেট সময় : ১২:২২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: দিনা (ছদ্মনাম) বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রেমে পড়েছিলেন এক সহপাঠীর। শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো, দিনরাত গল্প, চা-পর্ব, সন্ধ্যাবেলার হাঁটাহাঁটি। কিন্তু কয়েক মাস না যেতেই বদলে গেল সেই গল্প। একটু দেরিতে ফোন ধরলে রাগ, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করলেই সন্দেহ, মাঝে মধ্যে রেগে গিয়ে চেঁচামেচি- এসবই যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠল। ‘ভালোবাসে বলেই তো এমন করে’- এই বিশ্বাসে দিনা বারবার নিজেকে বোঝাতেন। এক সময় বুঝতে পারলেন, এই সম্পর্ক তাকে শুধু কষ্টই দিচ্ছে, তাই আর না। দিনার মতো অভিজ্ঞতা অনেকেরই হতে পারে। তাই সম্পর্কের শুরুতেই কিছু বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। তা হলো-

অপমানজনক ও কটু ভাষার ব্যবহার: কাউকে অপমান করা অথবা কটু কথা বলা একধরনের মানসিক নির্যাতন। সঙ্গী প্রায়ই আপনাকে অপমান করলে কিংবা রেগে গিয়ে গালাগাল করলে সহ্য করা উচিত নয়।
শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন: শারীরিক অথবা মানসিক নির্যাতন দুটিই অপরাধ। শারীরিক আঘাত যেমন একধরনের সহিংসতা, ঠিক তেমনি মানসিক চাপে ফেলে রাখা বা সব সময় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করাও সহিংসতা। গায়ে হাত তোলা কিংবা কিছু নিয়ে ভয় দেখানো সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তোলে।
অতিরিক্ত সন্দেহ ও ঈর্ষা: আপনি কখন কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে যাচ্ছেন, এমনকি কার সঙ্গে কী কথা বলছেন, সব আপনার সঙ্গীর জানার প্রয়োজন নেই। যখন আপনার সঙ্গী নিয়মিত আপনার ফোন চেক করেন বা সব সময় জানতে চান, আপনি কোথায়, কার সঙ্গে—তখন তিনি আপনার ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন। অতিরিক্ত ঈর্ষা একটি সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
প্রকাশ্যে অপমান: এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা অন্যকে অপমান করে একধরনের আনন্দ পান। অনেকে অনায়াসেই বন্ধুদের সামনে সঙ্গীকে ঠাট্টার ছলে অপমান করে, শরীর ও চেহারা নিয়ে মন্তব্য করে বসে। এমন আচরণ সঙ্গীর আত্মবিশ্বাস নষ্ট করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্ককে দুর্বল করে তোলে।
ধারাবাহিকভাবে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ: যদি একজন সঙ্গী বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন, যেমন কোনো কারণ ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিত না হওয়া কিংবা কথা দিয়ে কথা না রাখা, তাহলে তা সম্পর্কের প্রতি তার শ্রদ্ধার অভাব প্রকাশ করে।
পরিবার বা বন্ধুদের প্রতি অসম্মান: অনেক সময় প্রেমিক বা প্রেমিকা তার সঙ্গীর কোনো বন্ধুকে তার পছন্দ নয় বলে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে বলে। আবার অনেকে সঙ্গীর পরিবার ও বন্ধুদের অসম্মান করে। মনে রাখবেন, আপনার প্রিয়জনদের ছোট করার অধিকার কাউকেই দেওয়া উচিত নয়।
বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা: বিশ্বাসই সম্পর্কের ভিত। একটি সম্পর্কে যদি কেউ প্রতারণা করে ও বারবার মিথ্যা বলে, তবে সেই সম্পর্কের ভিত আলগা হতে থাকে।
অতিরিক্ত সমালোচনা: গঠনমূলক সমালোচনা যেমন আমাদের নিজেদের ভুল শোধরাতে সাহায্য করে, তেমনি অহেতুক সমালোচনা আমাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে। প্রতিটি মানুষের চিন্তাভাবনা ও জীবনযাত্রা আলাদা। তাই আপনি পৃথিবীকে যেভাবে দেখেন, আপনার সঙ্গীও যে সেভাবেই দেখবেন, এমন ভাবা অনুচিত। প্রতিটি ছোটখাটো বিষয়ে ভুল ধরলে আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয় এবং মনে ক্ষোভ তৈরি হয়।
পেশাগত জীবনকে তুচ্ছ করা: কেউ যদি আপনাকে বলে, ‘তোমার চাকরির কী দাম আছে?’ তাহলে কেমন লাগবে, ভাবুন তো! সঙ্গীর এমন ব্যবহার কখনোই মেনে নেওয়া উচিত নয়। পেশাগত জীবন সম্পর্কে সঙ্গীর সিদ্ধান্তকে সব সময় সম্মান করা জরুরি। সঙ্গীর পেশাকে তুচ্ছ করা মানে তার আত্মসম্মানে আঘাত করা।
গ্যাসলাইটিং বা মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি: গ্যাসলাইটিং হলো এমন এক মানসিক কৌশল, যেখানে একজন সঙ্গী ইচ্ছাকৃতভাবে আপনাকে নিজের অনুভূতি বা স্মৃতি নিয়ে সন্দেহে ফেলে দেয়। যেমন একটি ঘটনা হয়তো আপনার মনে আছে; কিন্তু আপনার সঙ্গী বলছে, ‘এসব কিছুই তো হয়নি।’

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহ্য করা যাবে না কিছু আচরণ

আপডেট সময় : ১২:২২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: দিনা (ছদ্মনাম) বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রেমে পড়েছিলেন এক সহপাঠীর। শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো, দিনরাত গল্প, চা-পর্ব, সন্ধ্যাবেলার হাঁটাহাঁটি। কিন্তু কয়েক মাস না যেতেই বদলে গেল সেই গল্প। একটু দেরিতে ফোন ধরলে রাগ, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করলেই সন্দেহ, মাঝে মধ্যে রেগে গিয়ে চেঁচামেচি- এসবই যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠল। ‘ভালোবাসে বলেই তো এমন করে’- এই বিশ্বাসে দিনা বারবার নিজেকে বোঝাতেন। এক সময় বুঝতে পারলেন, এই সম্পর্ক তাকে শুধু কষ্টই দিচ্ছে, তাই আর না। দিনার মতো অভিজ্ঞতা অনেকেরই হতে পারে। তাই সম্পর্কের শুরুতেই কিছু বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। তা হলো-

অপমানজনক ও কটু ভাষার ব্যবহার: কাউকে অপমান করা অথবা কটু কথা বলা একধরনের মানসিক নির্যাতন। সঙ্গী প্রায়ই আপনাকে অপমান করলে কিংবা রেগে গিয়ে গালাগাল করলে সহ্য করা উচিত নয়।
শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন: শারীরিক অথবা মানসিক নির্যাতন দুটিই অপরাধ। শারীরিক আঘাত যেমন একধরনের সহিংসতা, ঠিক তেমনি মানসিক চাপে ফেলে রাখা বা সব সময় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করাও সহিংসতা। গায়ে হাত তোলা কিংবা কিছু নিয়ে ভয় দেখানো সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তোলে।
অতিরিক্ত সন্দেহ ও ঈর্ষা: আপনি কখন কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে যাচ্ছেন, এমনকি কার সঙ্গে কী কথা বলছেন, সব আপনার সঙ্গীর জানার প্রয়োজন নেই। যখন আপনার সঙ্গী নিয়মিত আপনার ফোন চেক করেন বা সব সময় জানতে চান, আপনি কোথায়, কার সঙ্গে—তখন তিনি আপনার ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন। অতিরিক্ত ঈর্ষা একটি সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
প্রকাশ্যে অপমান: এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা অন্যকে অপমান করে একধরনের আনন্দ পান। অনেকে অনায়াসেই বন্ধুদের সামনে সঙ্গীকে ঠাট্টার ছলে অপমান করে, শরীর ও চেহারা নিয়ে মন্তব্য করে বসে। এমন আচরণ সঙ্গীর আত্মবিশ্বাস নষ্ট করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্ককে দুর্বল করে তোলে।
ধারাবাহিকভাবে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ: যদি একজন সঙ্গী বারবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন, যেমন কোনো কারণ ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিত না হওয়া কিংবা কথা দিয়ে কথা না রাখা, তাহলে তা সম্পর্কের প্রতি তার শ্রদ্ধার অভাব প্রকাশ করে।
পরিবার বা বন্ধুদের প্রতি অসম্মান: অনেক সময় প্রেমিক বা প্রেমিকা তার সঙ্গীর কোনো বন্ধুকে তার পছন্দ নয় বলে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে বলে। আবার অনেকে সঙ্গীর পরিবার ও বন্ধুদের অসম্মান করে। মনে রাখবেন, আপনার প্রিয়জনদের ছোট করার অধিকার কাউকেই দেওয়া উচিত নয়।
বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা: বিশ্বাসই সম্পর্কের ভিত। একটি সম্পর্কে যদি কেউ প্রতারণা করে ও বারবার মিথ্যা বলে, তবে সেই সম্পর্কের ভিত আলগা হতে থাকে।
অতিরিক্ত সমালোচনা: গঠনমূলক সমালোচনা যেমন আমাদের নিজেদের ভুল শোধরাতে সাহায্য করে, তেমনি অহেতুক সমালোচনা আমাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে। প্রতিটি মানুষের চিন্তাভাবনা ও জীবনযাত্রা আলাদা। তাই আপনি পৃথিবীকে যেভাবে দেখেন, আপনার সঙ্গীও যে সেভাবেই দেখবেন, এমন ভাবা অনুচিত। প্রতিটি ছোটখাটো বিষয়ে ভুল ধরলে আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয় এবং মনে ক্ষোভ তৈরি হয়।
পেশাগত জীবনকে তুচ্ছ করা: কেউ যদি আপনাকে বলে, ‘তোমার চাকরির কী দাম আছে?’ তাহলে কেমন লাগবে, ভাবুন তো! সঙ্গীর এমন ব্যবহার কখনোই মেনে নেওয়া উচিত নয়। পেশাগত জীবন সম্পর্কে সঙ্গীর সিদ্ধান্তকে সব সময় সম্মান করা জরুরি। সঙ্গীর পেশাকে তুচ্ছ করা মানে তার আত্মসম্মানে আঘাত করা।
গ্যাসলাইটিং বা মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি: গ্যাসলাইটিং হলো এমন এক মানসিক কৌশল, যেখানে একজন সঙ্গী ইচ্ছাকৃতভাবে আপনাকে নিজের অনুভূতি বা স্মৃতি নিয়ে সন্দেহে ফেলে দেয়। যেমন একটি ঘটনা হয়তো আপনার মনে আছে; কিন্তু আপনার সঙ্গী বলছে, ‘এসব কিছুই তো হয়নি।’