বিদেশের খবর ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প এই চাপকে সুযোগে রূপ দিচ্ছে। বিশেষ করে চিপ তৈরির যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে দেশটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, স্মার্টফোন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও গাড়ির জন্য চিপ তৈরিতে চীন ভালো অগ্রগতি করেছে। এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক চীনা কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি গবেষণা ও উদ্ভাবনে উৎসাহ দিচ্ছে, যাতে তারা আমেরিকান প্রযুক্তির ওপর নির্ভর না করে নিজস্ব পথ গড়ে তুলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জে গোল্ড অ্যাসোসিয়েটস-এর বিশ্লেষক জ্যাক গোল্ড বলেন, ‘মার্কিন সরকার নিজেরাই চীনের চিপ খাতকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে।’ সম্প্রতি মার্কিন চিপ কোম্পানি এনভিডিয়া ও এএমডি জানিয়েছে, তারা চীনে রফতানির জন্য নতুন মার্কিন লাইসেন্স নিয়ম মানতে বাধ্য।
এনভিডিয়া মনে করছে এতে তাদের ৫৫০ কোটি ডলারের ক্ষতি হতে পারে, আর এএমডির ক্ষতি হতে পারে ৮০ কোটি ডলার। এদিকে চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কিন কোম্পানির বিকল্প খুঁজছে। তারা এখন হুয়াওয়ের তৈরি এআই চিপ ব্যবহার করে বড় ভাষা মডেল প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। চীনা প্রতিষ্ঠান আইফ্লাইটেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি এআই মডেল স্পার্ক এক্স ১ সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। তারা হুয়াওয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে আরও শক্তিশালী দেশীয় কম্পিউটার প্রযুক্তি গড়ে তুলতে। চিপ গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিওয়াইজ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক চীনের মার্কিন-নির্ভরতা কমিয়ে দিচ্ছে এবং স্বল্পমূল্যের চিপ পণ্যে চীন এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে।
তারা আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের চিপ রফতানি খুবই কম, তাই এই খাতে তাৎক্ষণিক ঝাঁকুনি লাগবে না। বরং এই অবস্থা চীনের জন্য নতুন প্রযুক্তি তৈরি ও নিজস্ব বাজার তৈরি করার সুযোগ তৈরি করেছে। চীনা টেলিকম খাতের নেতা শিয়াং লিকাং বলেন, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চীনের চিপ খাতকে আরও সংগঠিত ও উন্নত করে তুলেছে। নতুন শুল্কও সেই অগ্রগতিকে আরও গতি দেবে।’ চীন সেমিকন্ডাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ওয়েই শাওচুন বলেন, ‘যত বেশি চীনকে আটকে রাখার চেষ্টা হবে, তত বেশি চীন স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করবে। তবে স্বনির্ভরতা মানে একা থাকা নয় সহযোগিতার পথও খোলা রাখতে হবে।’
সূত্র: সিএমজি