ডা: সেলিনা সুলতানা : ২ এপ্রিলকে ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস হিসেবে মনোনীত করে। জাতিসংঘ অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের জন্য মানবাধিকার, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও মৌলিক স্বাধীনতার পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রচারের জন্য কাজ করে আসছে, যাতে সমাজে তাদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। এর ফলে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়েছে। যার প্রধান কারণ অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের জীবনযাপন ও বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা বিশ্বব্যাপী আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
অটিজম সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়া হয় ২০০৭ সালের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে। আজ, ১৭ বছরেরও বেশি সময় পরে, বিশ্বব্যাপী আন্দোলন সচেতনতার বাইরেও সক্রিয়ভাবে গ্রহণযোগ্যতা, প্রশংসা ও অন্তর্ভুক্তির প্রচার প্রসারিত হয়েছে। অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিরা তাদের সম্প্রদায় ও বিশ্বে যে অবদান রাখেন তা স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
এ বছর ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করা হলো। এবারের ১৮ তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘স্নায়ু বৈচিত্র্যকে বরণ করি, টেকসই সমাজ গড়ি।’ স্নায়ু বৈচিত্র্য এবং বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টার মধ্যে যোগসূত্র তুলে ধরে, কীভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি ও কার্যক্রমগুলো বিশ্বব্যাপী অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে এবং ঝউএং অর্জনে অবদান রাখতে পারে তা প্রদর্শন করা হয়েছে।
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক ক্ষেত্রে অ্যাক্সেসযোগ্যতা, সমতা এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে নীতি গঠনে স্নায়ু বৈচিত্র্যের ভূমিকা অন্তর্ভুক্ত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবা, মানসম্পন্ন শিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে অ্যাক্সেসযোগ্যতা, বৈষম্য হ্রাস এবং অটিজম-বান্ধব শহর ও সম্প্রদায়ের নকশার উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৮ তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসটি জাতিসংঘের বৈশ্বিক যোগাযোগ বিভাগের সহায়তায় ইনস্টিটিউট অব নিউরো-ডাইভারসিটি (ওঙঘ) দ্বারা আয়োজিত হয়। যারা স্নায়ু বৈচিত্র্যদের ক্ষমতায়ন, সমান সুযোগের পক্ষে সমর্থন এবং গ্রহণযোগ্যতা এবং শিক্ষার প্রচারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংলাপ এবং সহযোগিতা জোরদার করার মাধ্যমে, বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস, ২০২৫ বাধা দূর করার, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা প্রচারের এবং সমাজে অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের অবদান এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য টেকসই প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরদার করেছে।
অটিজম মানসিক বিকাশ জনিত সমস্যা, এর কোনো চিকিৎসা নেই। তাই অটিস্টিক শিশু ও ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ, তাদের জন্য সঠিক থেরাপি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা অনেকাংশেই সম্ভব। আমাদের উচিত তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জোরদার সচেতনতা নিশ্চিত করা।
লেখক : কনসালটেন্ট: নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্ট, বেটার লাইফ হসপিটাল। প্রাক্তন অটিজম বিশেষজ্ঞ: ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল।