ক্রীড়া ডেস্ক: বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে হতাশাজনক হার যেন বার্সেলোনাকে নতুন করে জাগিয়ে তুলল। লা লিগায় সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে হোঁচট খেতে খেতে একসময় ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল হান্সি ফ্লিকের দল। কিন্তু সেখান থেকে যেভাবে তারা ঘুরে দাঁড়াল, তা যেন ক্লাসিক কামব্যাকেরই নতুন সংজ্ঞা। শনিবার, ক্যাম্প ন্যুতে নয়, তবে বার্সার ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়া এই লা লিগার ম্যাচটি হয়ে উঠেছিল সাত গোলের এক উত্তাল নাটক। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সময় স্কোরবোর্ডে দেখা গেল—বার্সেলোনা ৪, সেল্তা ভিগো ৩। এই জয়ে ৩২ ম্যাচ শেষে ২৩ জয় ও ৪ ড্রয়ে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ।
বার্সেলোনার এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন রাফিনিয়া। করলেন জোড়া গোল, যার মধ্যে ছিল ইনজুরি টাইমের অষ্টম মিনিটে চাপে ঠাণ্ডা মাথায় নেওয়া জয়সূচক পেনাল্টি। এছাড়া গোল করেন ফেররান তরেস এবং চোট কাটিয়ে ফেরা দানি ওলমো। সেল্তার হয়ে একাই হ্যাটট্রিক করেন বোর্হা ইগলেসিয়াস। বার্সার বিপক্ষে এমন কীর্তি করেও শেষ পর্যন্ত ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। ১২ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে বার্সাকে এগিয়ে দেন ফেররান তরেস। ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তার শটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু ১৫ মিনিটেই সেল্তা সমতা ফেরায় ইগলেসিয়াসের গোলে। এরপর ৫২ ও ৬২ মিনিটে আরও দুইবার জাল কাঁপিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। বার্সেলোনা তখন ৩-১ গোলে পিছিয়ে।
মাঠে নেমেই খেলায় নতুন প্রাণ ফেরান ওলমো ও লামিনে ইয়ামাল। ৬৪ মিনিটে ওলমো গোল করে ব্যবধান কমান। ৬৮ মিনিটে লামিনের দুর্দান্ত ক্রস থেকে হেডে গোল করেন রাফিনিয়া — সমতা ফিরে পায় বার্সা। এরপর ৯০+৮ মিনিটে রেফারির মনিটর রিভিউয়ের পর বার্সা পায় পেনাল্টি। সেটি থেকে গোল করে রাফিনিয়া দলকে এনে দেন রোমাঞ্চকর জয়।
বার্সা ম্যাচে ৭২% বল দখলে রেখে ১৮টি শট নেয়, যার ৬টি ছিল লক্ষ্যে। সেল্তা মাত্র ১১টি শট নিয়েই ৮টি লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয়। গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যান্সনি বার্সেলোনার হয়ে বেশ কিছু দারুণ সেভ করে দলের পতন ঠেকান। ম্যাচের শেষদিকে লেভানদোভস্কির ইনজুরি নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ দেখা যায়, তবে তা গুরুতর কিনা তা এখনো জানা যায়নি। শেষ মুহূর্তে পাওয়া এই জয় শুধু ৩ পয়েন্ট নয়, বার্সেলোনাকে দিল আত্মবিশ্বাস এবং শিরোপা লড়াইয়ে নতুন উদ্যম। আর রাফিনিয়া প্রমাণ করলেন, মেসি না থাকলেও ক্যাম্প ন্যুতে রোমাঞ্চের অভাব নেই।