ঢাকা ০২:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

ভাসানচরকে সন্দ্বীপে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আইনি নোটিশ

  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা : মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ‘ভাসানচর’ দ্বীপকে সন্দ্বীপের অন্তর্ভুক্ত করার যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ‘নিরাপদ নোয়াখালী চাই’ সংগঠনের চেয়ারম্যান সাংবাদিক সাইফুর রহমান রাসেলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে বলা হয়, ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভাসানচর থানা গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে হাতিয়ার ৫ চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেগুলো হলো-ভাসানচর, শালিকচর, চর বাতায়ন, চর মোহনা, চর কাজলা এবং কেওডার চর।

কিন্তু সম্প্রতি একটি গ্রুপ ওই মৌজাটি (ভাসানচর) সন্দ্বীপে অন্তর্ভূক্ত করা চেষ্টা করছে। এটা বেআইনি এবং সরকারের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা। এটা অবিলম্বে থামাতে গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি আবেদন দেন মোহাম্মদ করিমুল হাই। পরবর্তী কার্যক্রম না থামালে নোটিশদাতা সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে (রিট) আবেদন করতে বাধ্য হবেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯৯০ সালের দিকে জেগে ওঠা এ দ্বীপের নাম ছিল জালিয়ারচর। ১৯৯৮ সাল থেকে সেখানে সরকারিভাবে বনায়নও শুরু হয়। হাতিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে জালিয়ারচরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। চরের অবস্থান হাতিয়ার মূল ভূখণ্ডের উত্তর-পূর্ব দিকে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সময় দ্বীপের নাম বদলে রাখা হয় ভাসানচর। এরপর কয়েক দশক দ্বীপের ভূমির পরিমাণ বাড়তে থাকে।

২০১৭ সালের দিকে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আলোচনার মধ্যেই সেটির নামকরণ হয় ভাসানচর। একই বছর জরিপের মাধ্যমে সেটিকে নোয়াখালীর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সেখানে ‘ভাসানচর থানা’ গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। সম্প্রতি সন্দ্বীপের বিভিন্ন স্তরের মানুষের দাবির মুখে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সীমানা জটিলতা নিরসনের লক্ষে একটি কমিটি গঠন করে। ‘চট্টগ্রাম-নোয়াখালী জেলার সীমানা জটিলতা নিরসন কমিটি’ নামের এ কমিটিতে সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার নির্বাহী কর্মকর্তার পাশাপাশি পেশাজীবীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কমিটির প্রথম সভা হয়েছিল। সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা ভাসানচরকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার অন্তর্গত দেখিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। এ অবস্থায় গত ৭ এপ্রিল এ নিয়ে নাগরিক কমিটির নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ ফেসবুকে ভাসানচরকে হাতিয়ার দাবি করে একটি পোস্ট দেন। এছাড়া ভাসানচরকে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে হাতিয়া দ্বীপ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করা হয়। একই দিন চট্টগ্রামেও হাতিয়াবাসীর পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভাসানচরকে সন্দ্বীপে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে আইনি নোটিশ

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

বিশেষ সংবাদদাতা : মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ‘ভাসানচর’ দ্বীপকে সন্দ্বীপের অন্তর্ভুক্ত করার যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ‘নিরাপদ নোয়াখালী চাই’ সংগঠনের চেয়ারম্যান সাংবাদিক সাইফুর রহমান রাসেলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে বলা হয়, ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভাসানচর থানা গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে হাতিয়ার ৫ চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেগুলো হলো-ভাসানচর, শালিকচর, চর বাতায়ন, চর মোহনা, চর কাজলা এবং কেওডার চর।

কিন্তু সম্প্রতি একটি গ্রুপ ওই মৌজাটি (ভাসানচর) সন্দ্বীপে অন্তর্ভূক্ত করা চেষ্টা করছে। এটা বেআইনি এবং সরকারের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা। এটা অবিলম্বে থামাতে গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি আবেদন দেন মোহাম্মদ করিমুল হাই। পরবর্তী কার্যক্রম না থামালে নোটিশদাতা সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে (রিট) আবেদন করতে বাধ্য হবেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯৯০ সালের দিকে জেগে ওঠা এ দ্বীপের নাম ছিল জালিয়ারচর। ১৯৯৮ সাল থেকে সেখানে সরকারিভাবে বনায়নও শুরু হয়। হাতিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে জালিয়ারচরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। চরের অবস্থান হাতিয়ার মূল ভূখণ্ডের উত্তর-পূর্ব দিকে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সময় দ্বীপের নাম বদলে রাখা হয় ভাসানচর। এরপর কয়েক দশক দ্বীপের ভূমির পরিমাণ বাড়তে থাকে।

২০১৭ সালের দিকে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের আলোচনার মধ্যেই সেটির নামকরণ হয় ভাসানচর। একই বছর জরিপের মাধ্যমে সেটিকে নোয়াখালীর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সেখানে ‘ভাসানচর থানা’ গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। সম্প্রতি সন্দ্বীপের বিভিন্ন স্তরের মানুষের দাবির মুখে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সীমানা জটিলতা নিরসনের লক্ষে একটি কমিটি গঠন করে। ‘চট্টগ্রাম-নোয়াখালী জেলার সীমানা জটিলতা নিরসন কমিটি’ নামের এ কমিটিতে সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার নির্বাহী কর্মকর্তার পাশাপাশি পেশাজীবীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গত ৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কমিটির প্রথম সভা হয়েছিল। সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা ভাসানচরকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার অন্তর্গত দেখিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। এ অবস্থায় গত ৭ এপ্রিল এ নিয়ে নাগরিক কমিটির নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ ফেসবুকে ভাসানচরকে হাতিয়ার দাবি করে একটি পোস্ট দেন। এছাড়া ভাসানচরকে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে হাতিয়া দ্বীপ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করা হয়। একই দিন চট্টগ্রামেও হাতিয়াবাসীর পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়।