ঢাকা ১০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

কুয়েটে সংঘর্ষ: ৩৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে

  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়ছে। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তবে কোন কোন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানানো হয়নি। জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া ‘দুঃখজনক’ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা বসে।

ওই সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সোমবার সভায় উপস্থাপন করা হয়, যা সিন্ডিকেট গ্রহণ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। তার আগে ২ মে খুলে দেওয়া হবে আবাসিক হল। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এখনই খুলে দেওয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে সিন্ডিকেটের সভা চলছিল, তখন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। সেদিন দুপুরের পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাত ৮টার মধ্যে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে নিজেদের আবেদন তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। তাতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম জরুরি সভায় আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে খুলনা মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসিন্দা হোচেন আলী।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কুয়েটে সংঘর্ষ: ৩৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে

আপডেট সময় : ০৪:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়ছে। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তবে কোন কোন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা জানানো হয়নি। জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া ‘দুঃখজনক’ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা বসে।

ওই সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় সোমবার সভায় উপস্থাপন করা হয়, যা সিন্ডিকেট গ্রহণ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। তার আগে ২ মে খুলে দেওয়া হবে আবাসিক হল। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এখনই খুলে দেওয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে সিন্ডিকেটের সভা চলছিল, তখন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। সেদিন দুপুরের পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাত ৮টার মধ্যে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে নিজেদের আবেদন তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। তাতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম জরুরি সভায় আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে খুলনা মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসিন্দা হোচেন আলী।